Logo

শিক্ষা

গোপালগঞ্জে অকেজো সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বায়োমেট্রিক যন্ত্র

Icon

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২১

গোপালগঞ্জে অকেজো সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বায়োমেট্রিক যন্ত্র

প্রাথমিক শিক্ষায় স্বচ্ছতা ও শিক্ষকদের সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ২০২০ সালে গোপালগঞ্জ জেলার সবকয়টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয়েছিল বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন। কিন্তু নিম্নমানের যন্ত্রাংশ, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং সমন্বয়হীনতার কারণে মাত্র এই মহৎ উদ্দেশ্য মুখ থুবড়ে পড়েছে।

বর্তমানে জেলার ৮৬২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যন্ত্রগুলো অকেজো হয়ে পড়ায় তা কাজ করছে না। পিইডিপি-৪ (প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি) প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষকদের সময়ানুবর্তিতা নিশ্চিত করে পাঠদান প্রক্রিয়াকে গতিশীল করার উদ্দেশ্যে এই যন্ত্রগুলো বসানো হয়েছিল। বায়োমেট্রিক স্থাপনে প্রতিটি স্কুল থেকে নেওয়া হয়েছিল ২২ হাজার টাকা।

কিন্তু স্থাপনের পর থেকেই যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিতে শুরু করে। সার্ভার সমস্যা, ফিঙ্গার প্রিন্ট না নেওয়াসহ নানান ত্রুটিতে এক বছরের মধ্যেই বেশিরভাগ মেশিন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০২৩ সালের মধ্যে জেলার সবকয়টি যন্ত্রই সম্পূর্ণরূপে অকেজো হয়ে যায়।

শিক্ষকদের সময়ানুবর্তিতা নিশ্চিত করার উদ্যোগটি এখন উল্টো তাদের জন্য বিড়ম্বনার কারণ। অকেজো যন্ত্রগুলো নিয়ে দৈনিক হাজিরা নিশ্চিত করতে পারছেন না তারা।

পশ্চিম গোপালগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ঝর্ণা বালা বলেন, ‘মেশিনগুলো শুরু থেকেই ভালোভাবে কাজ করত না। এখন পুরোপুরি বন্ধ। টাকা খরচ করেও কোনো সুবিধা পেলাম না।’

শহীদ মাহবুব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ আরিফ, বলেন, ‘সময়মতো উপস্থিতি নিশ্চিত করতে মেশিনগুলো খুব দরকার ছিল। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ ও মান খারাপ হওয়ায় এখন এটি একটি অকেজো যন্ত্রে পরিণত হয়েছে।’

সোনাকুড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রতিটি স্কুল থেকে ২২ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছিল। সামান্য ত্রুটিতেই মেশিন বন্ধ হয়ে গেছে, আর কেউ মেরামতের উদ্যোগ নেয়নি। আমরা এখন ম্যানুয়াল হাজিরায় ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছি।’

শহীদ মাহবুব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোকেয়া জেসমিন বলেন, ‘শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়মিত হাজিরা কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করা যেত, যদি এই ব্যবস্থা সফল হতো। কিন্তু প্রকল্পটি ভেস্তে গেল।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, মোসা. জ্যোৎস্না খাতুন বলেন, ‘শিক্ষকদের সময়মতো উপস্থিতি নিশ্চিত করে শিক্ষার মান বাড়াতে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন স্থাপন ছিল  সময়োপযোগী উদ্যোগ। প্রকল্পটি যে মুখ থুবড়ে পড়েছে তা আমাদের নজরে এসেছে। অকেজো মেশিনগুলো দ্রুত সচল করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে  দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এনএ

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

প্রাথমিক শিক্ষা

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর