
জাতি হিসেবে বাঙালি অত্যন্ত বেহায়া ও নির্লজ্জ বলে মন্তব্য করেছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। বুধবার দিবাগত রাতে (১৮ জুন) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাসে এ মন্তব্য করেন তিনি।
স্ট্যাটাসে শবনম লিখেছেন, ‘একটা গল্প আছে না, শীতের সকালে একজন ইমাম আর একজন চোরের? ইমাম ভাবে, কী ভালো একটা মানুষ এই ঠান্ডায় ফজরের নামাজ পড়তে এসেছে! চোর ভাবে, কী ভদ্রলোক দেখতে, দাড়ি-দুড়ি রেখে আবার চুরি করে! এই গল্প থেকে আমরা কী শিখেছিলাম? শিখেছিলাম যে যেমন, যার চিন্তাধারা যেমন, অন্যদেরও তাদের সেইম মনে হয়! কিন্তু বিশ্বাস করেন, পৃথিবীর সব মানুষ টাকার কাছে তাদের এথিক্স বিক্রি করে না। দুনিয়ার সব মানুষের কাছে টাকাই সব না।’
ফারিয়া জানান, জুন মাসে আন্দোলনের সময় যখন ইন্টারনেট বন্ধ ছিল, তখন তাকে কিছু সেলিব্রিটিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি ভিডিও বার্তা দিতে বলা হয়েছিল—যেখানে মেট্রোরেল ও বিটিভিতে আগুন দেওয়ার প্রতিবাদ করতে বলা হয়। তিনি জানান, প্রথমে তিনি সময় চান, পরে সাহস সঞ্চয় করে না বলেন। অভিনেতা সিয়াম আহমেদও সেই সময় ‘না’ বলেছিলেন বলেও জানান তিনি।
ফারিয়া লেখেন, ‘‘এইসব কথা অযথা বলে বেড়ানোর কোনো ইচ্ছা আমার ছিল না ! সেসময় এইটাই করার কথা। না বলেছি বলে আমি বিশেষ কোনো ক্রেডিট নিতে চাইনি। যেহেতু আমি ব্যাক্তিগতভাবে রাজনীতির সাথে জড়িত না, অদূর ভবিষ্যতেও কোনো ইচ্ছা কিংবা পরিকল্পনা নেই— তাও যখন দেখি কেউ লেখে ‘এরা তো ডলার খাইছে’ মার্কা কল্পনিক গল্প, তখন হাসা ছাড়া কিছু করার থাকে না।’’
অভিনেত্রী বলেন, ‘ভাই আমি এমন অনেক মানুষকে চিনি যারা মন থেকে আওয়ামী লীগ ভালোবাসে; কিন্তু জুলাইতে লাল ডিপি (প্রতিবাদ) দিয়েছিল! হয়তো জুলাইকে আমাদের সাধারণ মানুষের কাছে যেভাবে সে সময় পোট্রে করা হইছে এখন বিষয়টা তেমন নাই, কিন্তু সেসময় আপনি যদি মানুষ হয়ে থাকেন, অমানুষ না হোন; তাহলে আপনি কোনো মানুষকে হত্যা করার প্রতিবাদ না করে থাকতে পারতেন না— আপনার রাজনৈতিক পরিচয় কিংবা মতাদর্শ যাই হোক !’
নিজের হতাশা প্রকাশ করে ফারিয়া সবশেষে লিখেছেন, ‘এই স্ট্যাটাসের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের পলিটিক্স নিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়া বন্ধ করলাম! কারণ ফাইনালি আমি বুঝে গেছি, জাতি হিসেবে আমরা অত্যন্ত বেহায়া এবং নির্লজ্জ। আমরা কখনো ভালো হব না। যত আন্দোলন হোক, সরকার পরিবর্তন হোক, যতই শান্তিতে নোবেল পাওয়া মানুষ আসুক, আমাদের কেউ দুর্নীতি এবং চুরি করা থেকে আটকাতে পারবে না ! শিশু-কিশোর,বৃদ্ধ—যেই ক্ষমতা পাবে সে-ই তার অসৎ ব্যবহার করবে। আমি আর আমার নিজ দেশের কাছে কোনো এক্সপেকটেশন রাখি না !’
‘পরিশেষে বলতে চাই, সত্যি সত্যি ডলার পেলে আসলে ভালোই লাগতো ! শ্রীলঙ্কা যাওয়ার আগে ২৫৩০০ টাকা দিয়ে ২০০ ডলার পাসপোর্টে এন্ডোরর্স করতে খুবই কষ্ট হইছে।’
- এটিআর