‘এভাবে একটা সিস্টেম হইতে পারে না’
ডাবিং করেও পাননি পারিশ্রমিক, দোয়েলের ক্ষোভ

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৫, ২০:২০

গত ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাওয়া শাকিব খান অভিনীত আলোচিত চলচ্চিত্র ‘বরবাদ’ ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। নির্মাতা মেহেদী হাসান হৃদয়ের বিরুদ্ধে অভিনেত্রী দিলরুবা দোয়েল অভিযোগ তুলেছেন, ডাবিংয়ের কাজ শেষ করেও তিনি কোনো পারিশ্রমিক পাননি।
‘বরবাদ’ সিনেমায় অভিনয় না করলেও ইধিকা পালের কিছু অংশের ডাবিং করেছেন দোয়েল। এই ডাবিংয়ের পারিশ্রমিক দেননি পরিচালক, এমনটা গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন অভিনেত্রী নিজেই।
বাংলাদেশের খবরকে দোয়েল বলেন, ‘আমাকে হৃদয় ভাই তার সহকারীকে দিয়ে ফোন করিয়ে বলেছিলেন ইমার্জেন্সি ইধিকা পালের চরিত্রের ডাবিংটা একটু করে দিতে হবে। না হলে তারা নাকি সেন্সর করাতে পারছিলেন না। আমি বলছিলাম স্পট পেমেন্ট করতে। এরপর আমি ডাবিং করলেও পয়সা পাইনি। ডাবিং করার পর আমি কয়েকবার ফোন করেছি পরিচালককে, তিনি আমার ফোন ধরেননি। পরবর্তীতে বিষয়টি গণমাধ্যমে এলে তাদের নজরে পড়েছে। ইতোমধ্যেই তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন।’
শুধু টাকা নয়, নির্মাতার টিমের সদস্যদের ব্যবহার নিয়েও অভিযোগ করেছেন দোয়েল। তার ভাষায়, ‘সহকারীদের ব্যবহার দেখে মনে হয়েছে তারা যেন কোনো আন্তর্জাতিক প্রজেক্ট থেকে এসেছে। ফোন করে রাত ১২টায় কাজ চাইবে, অথচ পারিশ্রমিক নিয়ে একবিন্দু আগ্রহ নেই। শিল্পীদের যদি এমনই উপেক্ষা করা হয়, তাহলে আমাদের এই ইন্ডাস্ট্রিতে সম্মান কোথায়?’
দিলরুবা দোয়েল বলেন, ‘আমি কিন্তু কোনোভাবেই এই সিনেমার ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করি নাই। আমি শুধু বলেছি, এত বড় একটা ছবি যখন হয়, তখন প্রযোজনা সংস্থালোকে আরও দায়িত্বশীল এবং সংবেদনশীল হতে হবে শিল্পীদের সঙ্গে। আজকে আমি দিলরুবা হোসেন দোয়েল, সেলেব্রেটি না হলেও আমি একজন পরিচিত মুখ; আমি যদি ডাবিং করে আসার পরে পয়সাটা না পাই, তাহলে এরকম আরও অনেক মানুষ আছে, যারা পয়সা পাবে না। আমার পয়েন্ট এটা ছিল। আমি কিন্তু কোনোভাবে অভিযোগ করিনি বা এটা নিয়ে আমি কোনো নিউজ করাই নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরবর্তীতে আমার কথা হয়েছে হৃদয় ভাইয়ের সাথে। ঢাকার বাইরে আছেন এখন। ফিরে এসে আমার সাথে বসবেন। সে কনফারেন্স করে আমাকে প্রডিউসারের সাথেও কথা বলিয়ে দিয়েছেন। তারা এই বিষয়টা সম্পর্কে কিছু জানেই না। তো তারা এখন জানার চেষ্টা করছে কে এই কাজটা করল। বিষয়টা যেন পরবর্তীতে এরকম না হয়। তারা আমাকে বলেছে, পরে এসে তারা আমার সাথে বসবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি অভিযোগ করি নাই, শুধু সিস্টেমটা নিয়ে কথা বলছি। এইভাবে একটা সিস্টেম হইতে পারে না। এরকম করে চলতে পারে না। এত বড় বড় ছবি হবে, ডাবিং করবে, লোকে অভিনয় করবে, কিন্তু টাকা পাবে না। শুধু আমি নই- এসব নিয়ে সবসময়েই কারো না কারো অভিযোগ রয়েই যায়।’
এদিকে অভিনেত্রীর এই অভিযোগ প্রসঙ্গে নির্মাতা মেহেদী হাসান হৃদয় দাবি করেছেন, বিষয়টি তিনি প্রথমবার শুনছেন। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘সিনেমার ফিন্যান্সিয়াল বিষয়গুলো ডিরেক্টর হ্যান্ডেল করে না, এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার দেখে। আমি জানতাম না এই শিল্পীর পেমেন্ট আটকে আছে।’
শিল্পী ও পরিচালকের এই মতবিরোধের ঘটনায় একদিকে যেমন সিনেমার ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে, অন্যদিকে আবার উঠে আসছে পুরনো সেই প্রশ্ন, বাংলাদেশি সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে কি এখনো শিল্পীদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে?
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। কেউ বলছেন—এটি একজন শিল্পীর প্রতি চরম অবমাননা, আবার কেউ বলছেন— টিমওয়ার্কে আরও পেশাদারিত্ব থাকা জরুরি।