Logo

বিনোদন

একান্ত সাক্ষাৎকারে মামনুন ইমন

‘আমাদের রাজনৈতিক ভাগ্যটাই খারাপ’

Icon

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৫, ২২:০৬

‘আমাদের রাজনৈতিক ভাগ্যটাই খারাপ’

জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেতা ইমন এখন ব্যস্ত রয়েছেন বিজ্ঞাপনের কাজ নিয়ে। পাশাপাশি একটি প্রসাধনী প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবেও কাজ করছেন। সাম্প্রতিক কাজ ও নানা বিষয়ে বাংলাদেশের খবরের সঙ্গে কথা হলো তার। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সুদীপ্ত সাইদ খান।

কেমন আছেন? সাম্প্রতিক ব্যস্ততা কি নিয়ে?

এই মুহূর্তের ব্যস্ততা বলতে- কয়েকদিন আগে একটা বিজ্ঞাপনের কাজ করলাম। মজার ব্যাপার হচ্ছে, শিহাব শাহীন ভাইয়ের সাথে প্রথমবারের মতো এই বিজ্ঞাপনের কাজ করলাম। আবার যে প্রতিষ্ঠানের কাজ করেছি, সেটাও একটা নতুন প্রতিষ্ঠান। 

কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

শিহাব ভাইয়ের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা অনেক ভালো। তার সঙ্গে কাজের ইচ্ছা আমার বহুদিনের। আগে অনেকেই সাক্ষাৎকার নিতে এলে আমার কাছে জানতে চাইতো যে, আপনি কার সঙ্গে কাজ করতে চান? আমি বলতাম যে  রায়হান রাফির সঙ্গে কাজ করতে চাই, শিহাব শাহীনের সঙ্গে কাজ করতে চাই। বলেছি আমার পছন্দের তালিকায় শিহাব ভাই অন্যরকম একজন ডিরেক্টর। তো ওনার সাথেও কাজ হয়ে গেল। এতো তাড়াতাড়ি কাজ হয়ে যাবে তা বুঝিনি। আশা করি, সামনে আরও কাজ হবে। 

প্রসাধনী প্রতিষ্ঠান ‘রিমার্ক হারল্যান’ এর অন্যতম ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করছেন। হারল্যানের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

রিমার্ক হারল্যানের সঙ্গে দেড় বছর ধরে কাজ করছি। এটা অনেক ভালো লাগছে।

অভিনেতা হয়ে করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছেন। অভিনয় ও করপোরেট জব দুটোই ভিন্ন ঘরানার কাজ। এই দুটোকে কিভাবে সামলান?

আসলে একটা জিনিস কি আপনি যদি সময়টাকে সুন্দরভাবে বন্টন করতে পারেন তাহলে সবকিছুই সম্ভব। আগে দেখা যেত যে, আমি শুটিংয়ের বাইরে আড্ডা মেরে কাটাতাম । এখন দেখা যাচ্ছে এই সময়টা ব্যস্ত আছি। আর রিমার্ক হারল্যানের সঙ্গে আমার যে টাইপের কাজ  হয়- সেগুলো অনেকটা  আমার অঙ্গনের সঙ্গে সামঞ্জস্য আছে। ওদের অনেক আউটলেট ওপেনিং করি বা অন্যান্য যে কাজগুলো আছে সেগুলো খুব এনজয়ও করি। এ ছাড়া আমার শুটিংয়ের পারপাসে অংশগ্রহণ করতে পারি। আমি তাদের প্রচার প্রচারণাগুলোতে অংশ নিতে পারি। ফলে ওইটাও আমার জন্য একটা ইন্টারেস্টিং পার্ট বলে মনে হয়। আর আমি যেহতু ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করি। ফলে আমি সময়টাকে বন্টন করার চেষ্টা করলাম। এভাবে যখন কাজ করলাম, তখন দেখলাম যে আমার টাইমটা খুব ভালো কাটছে। এটাই বলব আর কি।

রিমার্ক হালল্যানের সঙ্গে শাকিব খানও আছেন সিইও হিসেবে। তার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

সত্যি কথা বলতে কি শাকিব ভাই অনেক আন্তরিক একজন মানুষ। এছাড়া তিনি আমাদের বাংলাদেশের একজন  মেগাস্টার। ওনার সঙ্গে আমার সম্পর্ক আগে থেকেই ছিল। রিমার্ক হারল্যানের মাধ্যমে এই রিলেশনশিপটা আরও মজবুত  হয়েছে। প্রত্যেকটা মুহূর্তে ভাইয়ার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখারও আছে। জানার আছে।  এই সময়টাতে আমি ওনার কাছ থেকে অনেক কিছু জেনেছি, শিখেছি। এখানের প্রচার-প্রচারণা বিষয়ক শেয়ারিং তো আছেই। সঙ্গে আমাদের শুটিং রিলেটেড অনেক আলাপও হয়েছে। ফলে দুর্দান্ত একটা সময় আমি ওনার সঙ্গে কাটাতে পারছি। 

রিমার্ক হারল্যান নিয়ে আপনাদের পরিকল্পনা জানতে চাই- 

রিমার্ক হারল্যান নিয়ে আমি অনেক স্বপ্ন দেখি। আমাদের চেয়ারম্যান মানুষের কল্যাণে অথেনটিক কসমেটিক পৌঁছে দিতে চায়। ভেজাল পন্য মেখে মানুষ যে প্রতারিত হচ্ছে, অনেকের ত্বকে ক্যানসার হচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধে রিমার্ক হারল্যানের চেয়ারম্যান দারুণ একটা উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মানুষের কাছে ভেজাল মুক্ত পন্য পৌঁছে দিচ্ছেন। মানুষকে স্কিন ডিজিজের হাত থেকে রক্ষা করতে তাদের অথেনটিক পন্য পৌঁছে দেওয়ার যে উদ্যোগ এটা আমার কাছে মনে হয় রিমার্ক হারল্যানই প্রথম শুরু করেছে। এগুলো নিয়ে আরও বড়ো পরকল্পনা রয়েছে।

নাটক-সিনেমার অবস্থা এখন ভালো নয়, সিনেমার পর এবার নাটকের ইন্ডাস্ট্রিও ম্লান হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই বেকার হয়ে পড়ছেন। এ বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন জানতে চাই-

দেশের যে পরিস্থিতি চলছে- মানে আমি  বলতে চাই, আপস এন্ড ডাউন নিয়েই বাংলাদেশ ছিল , সবসময়ই খারাপ সময় ছিল, আবার ভালো সময়ও আসছে। ভালো সময় থেকে অবার সময় খারাপ হয়ে গেছে। আমরা এখন যে খারাপ সময় পার করছি, আপনি দেখবেন যে এই সময়টাও একসময় ঘুরে দাঁড়াবে। এরমধ্যেই কিন্তু ভালো ভালো সিনেমা আসছে, বড়ো বড়ো সিনেমার ঘোষণা হচ্ছে। বেশকিছূ সিনেমা ভালো ব্যবসাও করছে। কিছু সিনেমা ব্লক বাস্টারও হচ্ছে। আমরা এখন স্বপ্ন দেখছি। বড় সিনেমা বানাবো। আমরা কিন্তু আগে এমন স্বপ্ন দেখতে পারতাম না। দেখেন, এই কঠিন সময়েও কিন্তু বড় সিনেমা হচ্ছে এবং ব্যবসা  সফল হচ্ছে। তো সময় খারাপ হলেও এখনো অনেক কিছু হচ্ছে, আমরা আশাহত না। 

এখন অনেক কম কাজ হচ্ছে এটা ঠিক,  অনেকেরই পরিবার আছে, সংসার আছে। অনেকেই হিমশিম খাচ্ছেন-  এটাও ঠিক। তবে আমি আশাবাদী আবারও একটা ভালো সময় আসবে। আমি সবসময় পজেটিভ থিংক করি তো, তাই পজেটিভ কথায় বললাম। কারণ আমরা তো ইন্ডাস্ট্রির টাকার উপরই নির্ভর করি। ভালো কোনো কাজ এলে- সিনেমা নাটক বা বিজ্ঞাপন পেলে সেই টাকা দিয়েই কিন্তু আমাদের সংসার চলে। আমাদের কষ্ট করে আয় করতে হয়। সেখানে যদি কাজ কমে যায় তাহলে সবারই তো সমস্যা। এই খারাপ সময়টা যেন খুব দ্রুত কেটে যায়। 

এই মন্দা পরিস্থিতির জন্য বাংলাদেশের বর্তমার রাজনৈতিক পরিস্থিতিকেও কি দায়ী করবেন আপনি ?

সেই ১৯৫২ সাল থেকেই তো বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এমন। ধরেন, ৫২ র ভাষা অন্দোলন থেকে শুরু করে ৭১, ৯০, ২৪- রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশিরভাগ সময়েই ঘোলাটে ছিল। বাংলাদেশটাই আসলে এমন। আমার দাদা-নানাদের আমল থেকে এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক স্থিতিশিলতা খুব একটা ছিল না। আসলে আমাদের রাজনৈতিক ভাগ্যটাই খারাপ। এগুলো আমাদের মেনে নিতেই হবে। এগুলো মেনে নিয়েই আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

ফলে রাজনীতির উপর বেশি দোষ দিতে চাই না। আমি যেহেতু এই অঙ্গনের মানুষ। আমি আসলে রাজনীতিটা বুঝি না, তবে রাজনীতিবিদদের সম্মান করি। আমি শিখেছি অভিনয়, অভিনয় নিয়েই আগাইতে চাই। তো এই আপস এন্ড ডাউনকে মেনে নিয়েই কাজ করতে চাই। এইটা মেনেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

বিনোদন চলচ্চিত্র নাটক

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর