Logo

বিনোদন

জন্ম নিয়েছিলেন রাজপ্রাসাদে, রাজত্ব করেছেন বাংলা চলচ্চিত্রে

Icon

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৫, ২০:০৫

জন্ম নিয়েছিলেন রাজপ্রাসাদে, রাজত্ব করেছেন বাংলা চলচ্চিত্রে

১৯৪১ সালের ১৪ আগস্ট। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখন চলছে, গোটা বিশ্বই অস্থির। সেই সময়ে আসামের গৌরীপুর রাজপ্রাসাদের অন্তঃপুরে জন্ম নিলেন এক শিশু, যিনি একদিন হয়ে উঠবেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র— তিনি সি.বি.জামান। তাঁর পিতা ইমদাদুর রহমান চৌধুরী ছিলেন গৌরীপুরের পোস্ট মাস্টার,নিজের স্ত্রী শরীফা খাতুন চৌধুরীর সঙ্গে তখন ছিলেন মহারাজা প্রভাত কুমার বড়ুয়ার আতিথ্যে। প্রাসাদের ইতিহাস আর রাজকীয় পরিবেশে জন্ম নেওয়া এই শিশুটি ভবিষ্যতে দেশের চলচ্চিত্রে যে এত বড় অবদান রাখবেন,তা তখন কেউ জানতো না।

শৈশব পেরিয়ে ধীরে ধীরে তিনি জড়িয়ে পড়লেন চলচ্চিত্রে। ১৯৬২ সালে জহির রায়হানের ‘সোনার কাজল’ ছবিতে সহকারী হিসেবে কাজ শুরু, পরে লাহোর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সহকারী পরিচালক। ১৯৭২ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত সময়টা ছিল তাঁর সোনালি অধ্যায়। এই সময়ে তিনি নির্মাণ করেছেন ‘ঝড়ের পাখি’, ‘উজান ভাটি’, ‘পুরস্কার’, ‘শুভরাত্রি’, ‘লালগোলাপ’সহ অনেক কালজয়ী ছবি। এর মধ্যে ‘পুরস্কার’ একসাথে ৫টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছিল এবং বিদেশেও প্রশংসা কুড়িয়েছিল। এমনকি  জাপানের বিখ্যাত ‘এনএইচকে টিভি’এর কপিরাইট কিনে নিয়ে নিজেদের দেশে প্রদর্শন করেছিল।


তিনি শুধু নিজের জন্য কাজ করেননি,অনেক নতুন শিল্পী,পরিচালক, টেকনিশিয়ানকে পথ দেখিয়েছেন। অনেকের হাতে প্রথমবার ক্যামেরা তুলে দিয়েছেন,অনেকের অভিনয়ের প্রথম সুযোগ তৈরি করেছেন। তাঁর হাত ধরে শুরু করা অনেকেই পরবর্তীতে দেশের টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে সাফল্যের মুখ দেখেছেন।

সবচেয়ে বড় কথা,তিনি ছিলেন অজাতশত্রু মানুষ— যাঁর শত্রু নেই,সবার প্রিয়। সহজ-সরল জীবন যাপন করলেও বন্ধুত্ব আর সহমর্মিতায় ভরা ছিলেন। খান আতাউর রহমানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল গভীর,এক সাথে তৈরি করেছেন অনেক স্মরণীয় ছবি।

আজ তাঁর জন্মদিন,কিন্তু তিনি আমাদের মাঝে নেই। ২০২৪ সালের ২০ ডিসেম্বর তিনি চলে গেছেন চিরবিদায় নিয়ে। আর মাত্র দু’দিন আগে, ২০২৫ সালের ১২ আগস্ট, তাঁর ছোটভাই ফখরুজ্জামান চৌধুরীও চলে গেলেন। একই পরিবারের দুই স্তম্ভ, দুই ইতিহাস— হারিয়ে গেল খুব অল্প ব্যবধানে।

তবু মৃত্যু এমন মানুষকে পুরোপুরি নিয়ে যেতে পারে না। তিনি আছেন তাঁর কাজের মধ্যে,তাঁর স্পর্শ পাওয়া মানুষদের জীবনে,আর পরিবারের ভালোবাসায়।


এদিকে তাঁর সন্তান সি.এফ.জামানের সৃজনশীল পরিচালনায় তাঁকে নিয়ে নির্মিত হতে যাচ্ছে একটি পূর্ণাঙ্গ ডকুমেন্টারি।

আজ আমরা শুধু শোক করছিনা— আমরা উদযাপন করছি তাঁর জীবনকে, তাঁর সৃষ্টিকে, আর তাঁকে ঘিরে থাকা সেই অসংখ্য স্মৃতিকে।

শুভ জন্মদিন,সি.বি.জামান। আপনি আছেন, থাকবেন— আমাদের হৃদয়ের আলোয়। 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

বিনোদন চলচ্চিত্র

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর