৪০ জন নিহতের ঘটনায় মামলা, থালাপতি বিজয় কি গ্রেপ্তার হবে?
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:২৩
তামিল সুপারস্টার ও সদ্যপ্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল তামিলাগা ভেট্ট্রি কাজাগম (টিভিকে)-এর প্রতিষ্ঠাতা থালাপতি বিজয়ের কারুর সমাবেশে পদদলিত হয়ে অন্তত ৪০ জনের মৃত্যু ঘটেছে। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় ভারতজুড়ে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, দায়েরকৃত মামলায় কি থালাপতি বিজয় কি গ্রেপ্তার হবেন?
এই প্রশ্নের জবাবে থালাপতি বিজয়ের ভক্তদের জন্য সুখবরই জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম- জানা যায়, ঘটনার পর দায়ের করা মামলার এফআইআরে বিজয়ের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বরং অভিযুক্ত করা হয়েছে টিভিকে-র কয়েকজন মধ্যম সারির নেতাকে।
শনিবার রাতেই কারুর টাউন থানায় মামলা হয় পশ্চিম জেলা সম্পাদক ভি পি মথিয়াঝাগনের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে অবহেলায় প্রাণহানি, জননিরাপত্তা বিপন্ন করা এবং সরকারি নির্দেশ অমান্যের অভিযোগ। পরদিন মামলায় যুক্ত করা হয় রাজ্য সাধারণ সম্পাদক এন আনন্দ ও যুগ্ম সম্পাদক সিটিআর নির্মলকুমারের নাম। তবে বিজয় ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী আদাভ অর্জুনার নাম বাদ রাখা হয়েছে। পুলিশের দাবি, তদন্তে প্রমাণ মিললে অন্যদের নামও যুক্ত হতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিজয়কে সরাসরি অভিযুক্ত বা গ্রেপ্তার করলে তা সাধারণ মানুষের মধ্যে সহানুভূতি তৈরি করবে। এতে উল্টো টিভিকে রাজনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে। তাই শাসকদল ডিএমকে আপাতত সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।
সরকার ইতোমধ্যেই অবসরপ্রাপ্ত হাইকোর্ট বিচারপতি অরুণা জগদেসানকে প্রধান করে একক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। পাশাপাশি সোমবার থেকে মাদ্রাজ হাইকোর্টে স্বপ্রণোদিত শুনানি শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘটনার পর বিজয় দ্রুত কারুর ত্যাগ করেন। রোববার এক বিবৃতিতে তিনি নিহত পরিবারগুলোর প্রতি গভীর শোক জানান। প্রতিটি পরিবারকে ২০ লাখ রুপি এবং আহতদের জন্য ২ লাখ রুপি আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দেন। তার ভাষায়, ‘এই ক্ষতি কোনো অর্থে পূরণীয় নয়। তবে পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে পাশে দাঁড়ানো আমার দায়িত্ব।’
তবে ঘটনাস্থলে ফিরে না যাওয়া এবং ভুক্তভোগীদের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে দেখা না করায় তিনি সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
বিদুতলাই চিরুথাইগাল কাচ্চির নেতা থোল থিরুমাভালাভান মন্তব্য করেছেন, ‘মানুষ রাজনীতিককে নয়, চলচ্চিত্র তারকাকে দেখতে ভিড় করেছিল। সিনেমার প্রতি এই অন্ধ মোহ এখন বেদনাদায়ক।’
অভিনেতা-রাজনীতিক কমল হাসান ঘটনাটিকে বলেছেন ‘হৃদয়বিদারক’। বিজেপি রাজ্য সভাপতি নাইনার নাগেন্দ্রন নিহত পরিবারকে সাহায্যের নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় নেতাদের, পাশাপাশি দায় চাপিয়েছেন সরকারের ওপর।
এদিকে রোববার সন্ধ্যায় বিচারপতি জগদেসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৮১ জন, যাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সব মিলিয়ে, কারুরের মর্মান্তিক এই পদদলিত ঘটনা শুধু প্রাণহানি নয়, বরং রাজনৈতিক দায়-দায়িত্ব ও কৌশল ঘিরে নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছে। তবে ডিএমকে সরকার আপাতত বিজয়কে সরাসরি আঘাত না করে আদালত ও তদন্ত কমিশনের ওপর নির্ভর করছে।
ডিআর/এসএসকে

