পূজায় তারকা
মূর্তি ভাঙার ঘটনায় নিজেদের ভাবমূর্তিই ক্ষুণ্ণ হয় : মৌটুসী বিশ্বাস
প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:৫১
শারদীয় দুর্গা পূজা উদযাপন নিয়ে বাংলাদেশের খবরের সঙ্গে কথা বললেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মৌটুসী বিশ্বাস। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সুদীপ্ত সাইদ খান।
বাংলাদেশের খবর : কেমন আছেন? দিনকাল কেমন কাটছে আপনার?
মৌটুসী বিশ্বাস : চলছে। দিনকাল পার হয়ে যাচ্ছে আর কি।
বাংলাদেশের খবর : পূজার দিনগুলো কেমন কাটছে, কিভাবে কাটাচ্ছেন?
মৌটুসী বিশ্বাস : পুজোর সময় তো খুলনায় গ্রামের বাড়িতে কাটাতাম বেশিরভাগ সময়। তো এবার আমার ঢাকায় থাকতে হলো। আমার শ্বশুরবাড়ির দিকে একটা প্রোগ্রাম আছে।
বাংলাদেশের খবর : পূজায় কি কি কিনলেন? গিফট কি পাইলেন? কাকে কাকে গিফট দিলেন?
মৌটুসী বিশ্বাস : বাবার চলে যাওয়ার পরে আসলে গিফট কি পেলাম বা কি গিফট কি দিলাম- এসব আর খেয়াল করা হয় না। আগে বাবা টাকা পাঠিয়ে দিতেন, তারপর শাশুড়ি দিতেন। প্রচুর সারপ্রাইজড হতাম। তো যা হয় আর কি- সব সময় আমার পরিচিতরা বা কাছের মানুষরাই গিফট দেয়। তো এইবার আমার শাশুড়ির শরীর খুব খারাপ ছিল। সব কিছু মিলে আমরা বেশ একটু বিধ্বস্ত অবস্থায় আছি আরকি। ফলে এবার কাকে কী দিচ্ছে সেটা খেয়াল করা আসলে সম্ভব হয়ে উঠেনি। কারণ পরিবারে যখন বয়স্ক মানুষদের শরীরটা খারাপ থাকে- তখন আসলে কি কেনা হলো নিজের জন্য, কে কি দিলো, সেগুলো খেয়াল করা হয় না।
তবে আমার মেয়ের জন্য আগেই শপিং করা ছিল। সে সেগুলোই পড়েছে। আমিও নতুন কিছু গিফট পেয়েছি, আমার খুব কাছের কলিগ যাদের সাথে অনেক বছরের সম্পর্ক তাদের কাছ থেকে- মানে তারা সারপ্রাইজ গিফট পাঠিয়েছে। আমিও কিছু কিছু উপহার পৌঁছে দিয়েছি কারো কারো কাছে। তো এই আর কি। যাই হোক, আসলে এবারের পূজা স্পেশাল না আমার জন্য।
বাংলাদেশের খবর : বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এবার যে পূজা হচ্ছে- এই পূজা কি আপনারা ঠিকঠাক মতো পালন করতে পারছেন, না কোন সমস্যা মনে হচ্ছে?
মৌটুসী বিশ্বাস : শুরুর দিকে যখন মূর্তি ভাঙার খবর পাচ্ছিলাম, তখন মনে হচ্ছিল একটু বেশি হচ্ছে আরকি। তারপরে দেখলাম যে না বিষয়টা কন্ট্রোলে নিয়ে আসছে। আবার অনেক মানুষ যারা পুজা পালন করছে মানে প্যান্ডেল করে- তারাও অনেক সচেতন হয়েছে। তারপরে মূর্তি ভাঙার বিষয়টা প্রশাসনের উপর অবশ্যই এটা একটা চাপ- সিকিউরিটি যাদের হাতে আছে তাদের জন্য তো বটেই। কারণ যাই হোক না কেন দেশের এই ঘটনাগুলোর খবরটা কিন্তু সারা বিশ্বে পৌঁছে যায়। খবর পৌঁছাতে তো খুব বেশি দেরি হয় না। এতে ভাবমূর্তির একটা ব্যাপার থাকে। তো মূর্তি ভাঙার ঘটনায় নিজেদের ভাবমূর্তিই ক্ষুণ্ণ হয়। পরে দেখলাম যে, বিষয়টা সামাল দেওয়া হয়েছে। ভালোভাবেই সামাল দেওয়া হয়েছে। তার মানে ধারণা করা যাচ্ছে যে- সব ঠিকঠাকই আছে।
বাংলাদেশের খবর : আজকের দশমীর দিনে...
মৌটুসী বিশ্বাস : দশমীর দিনটা ঢাকাতেই আছি। যখন বাবা ছিল তখন দশমীর দিন বাবার সঙ্গেই কাটাতাম। অনেক রকম রিচুয়াল থাকে- ওটা কয়েক বছর বেশ মজা করেই পালন করেছি। খুলনায় আমাদের বাড়ির এতো কাছে মন্দির যে, যেতে আসতে সময় লাগতো না। ফলে পূজা ভালোভাবেই উদযাপন করতে পারতাম।
বাংলাদেশের খবর : বাবাকে ছাড়া পূজা ?
মৌটুসী বিশ্বাস : বাবাকে ছাড়া এটা আমার দ্বিতীয়বার পূজা। বাবাকে ছাড়া পূজা পূজার সমস্যা হচ্ছে যে আমি এবার গ্রামে যাইনি। আগে যেমন আনন্দ উৎসব হতো আমি এখনও ওটার মধ্যে ঢুকতে পারিনি। সত্যি কথা।
বাংলাদেশের খবর : পূজার তাৎপর্য নিয়ে আপনার মন্তব্য জানতে চাই...
মৌটুসী বিশ্বাস : পূজার দীর্ঘ একটা ইতিহাস আছে। দূর্গাপূজায় যখন কেউ প্রার্থনা করেন, দেখবেন যে ওই সময়টা নিজেকে সমর্পণ করে দেওয়া হয়। নিজের একদম যা কিছু কষ্ট, ব্যথা সব প্রকাশ করা হয়- কারণ ঈশ্বর এমন যে তার কাছ থেকে আসলে লুকানোর কিছু নেই। আমরা যারা পার্থনা করি তারা জানে যে, তখন আসলে ঈশ্বরের সাথে মানুষের যোগাযোগটাই এমনভাবে স্থাপন হয় যে, তখন নিজের মধ্যে নিজের বলে আসলে কিছু থাকে না। সব উজাড় করে দিয়ে আমরা প্রার্থনা করি। আর আমরা তো সকলের জন্যই চাই, পৃথিবীর জন্য চাই, দেশের জন্য চাই, পরিবারের জন্য চাই, মানে যে যার যা যা লাগবে তাই চাই- তো ওই সমর্পণটা খুব জরুরি। কালকে ওটা একটু ফিল করছিলাম যে, এই সমর্পনটা তো বলে দিতে হয় না। এটা আপনা আপনি হয়।
ডিআর/এসএসকে/এইচআর/এএইচকে



