Logo

বিনোদন

ইয়াশ রোহানকে ধর্মীয় কটাক্ষ, প্রতিবাদ জানালেন তারকারা

Icon

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:৫৯

ইয়াশ রোহানকে ধর্মীয় কটাক্ষ, প্রতিবাদ জানালেন তারকারা
গত ২ অক্টোবর দেবী প্রতিমার সামনে দাঁড়িয়ে তোলা ছবি প্রকাশ করে ইয়াশ বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন ফেসবুকে। ছবিটি মুহূর্তেই ভাইরাল হলেও, নেটিজেনদের একাংশ সেখানে অভিনেতার ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং কটাক্ষপূর্ণ মন্তব্য করেন। মন্তব্যের বেশিরভাগই ছিল নেতিবাচক। অনেকেই লিখেছেন, এতদিন ভেবেছিলেন ইয়াশ রোহান মুসলিম, তাই তার নাটক দেখতেন। কেউ কেউ সরাসরি ঘোষণা করেছেন, আর কখনো তার নাটক দেখবেন না। 

ইয়াশ হিন্দু ধর্মের অনুসারী হওয়ায় তাকে ঘিরে এমন সমালোচনার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন তার ভক্তরা। এই ধরনের তির্যক মন্তব্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিনোদন অঙ্গনের তারকারাও। তারা ইয়াশ রোহানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন এবং নেতিবাচক মন্তব্যকারীদের মানসিকতার সমালোচনা করেছেন।


জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী তার পোস্টে বলেন, ‘কারও পোস্টে বাজে মন্তব্য করা, স্ল্যাং ব্যবহার করা, অথবা ভুয়া প্রোফাইল দিয়ে কথা বলা আপনাকে সাহসী করে তোলে না। বরং এটা আপনার নীচ মানসিকতাকে প্রকাশ করে এবং আপনি আসলে কেমন মানুষ সেটাই দেখায়। এত ঘৃণা আর অপরাধবোধ নিয়ে কীভাবে রাতে ঘুমাতে যান?’


আরশ খান লিখেছেন, ‘ইয়াশ রোহান বাংলাদেশের অন্যতম অভিনেতাদের একজন। যার অভিনয়, ব্যক্তিত্ব উভয়ই আমার প্রিয়। অভিনেতা ইয়াশকে তার ধর্ম বা সে কোন অঞ্চলের মানুষ তা রিপ্রেজেন্ট করে না বরং নিজের শৈল্পিক গুণাবলী দিয়ে সে এদেশের মানুষকে, বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করেন। ধর্ম যার যার দেশ সবার।’


নির্মাতা মোস্তফা কামাল রাজ লিখেছেন, ‘আমরা জাতি হিসেবে ধীরে ধীরে তেতো হয়ে যাচ্ছি। ফেসবুকের কমেন্ট সেকশনে সুযোগ পেলেই একে অপরকে হেয় করার প্রতিযোগিতা দেখা যায়। মাঝে মাঝে মনে হয়, যারা এসব বাজে কমেন্ট করে, তাদের বোধহয় মা-বোন বলে কেউ নেই।’

চয়নিকা চৌধুরী লিখেছেন, ‘ভাবছি যারা এমন মানসিকতায় লেখেন, ভাবেন, তারা কি শান্তিতে ঘুমাতে পারেন? মনে হয় না। কারণ, ইয়াশ রোহান প্রথমত একজন  মানুষ। আর যোগ্য হয়েই আজ তার জায়গা তিনি করে নিয়েছেন। দারুণ তার রোমান্টিক কাজগুলো। স্পেশালি তটিনির সাথের কিছু কাজ। শুভ বিঁজয়া ইয়াশ রোহান। এত্ত ভালোবাসি তোমাকে। পাশাপাশি মনে হলো, যারা এমন ভাবেন, লেখেন, তাদের আসলে আর কোন কাজ নেই। মানুষকে ছোট করা, কটাক্ষ করা, নেগেটিভ ভাবাই তাদের কাজ। আর ব্যাক্তিগতভাবে যদি বলি আমার কাছে এগুলো একদম স্পর্শ করে না। কারণ, কাজ কথা বলে। সময় কথা বলে। আর পারিবারিক শিক্ষা একটা ফ্যাক্টর।’

নাট্য নির্মাতা ইমরাউল রাফাত লিখেছেন, ‘একটা ছবির নিচে সাম্প্রদায়িক মন্তব্য দেখে মন খারাপ হয়। ধর্ম কখনোই কাউকে বিভক্ত করার শিক্ষা দেয় না— বরং প্রতিটি ধর্মই শেখায় মানবতা, ভালোবাসা আর সহমর্মিতা। আমি বিশ্বাস করি, মানুষের সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো সে ‘মানুষ’। পূজা, ঈদ, বড়দিন কিংবা বুদ্ধ পূর্ণিমা— এসব উৎসবের সৌন্দর্য তখনই পূর্ণ হয়, যখন আমরা একে অপরের আনন্দে শরিক হই, ভ্রাতৃত্বে হাত বাড়াই। কেউ যদি সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করতে চায়, সেটা তার সংকীর্ণতা। আমরা চাই— ভালোবাসা, সহমর্মিতা আর অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ। ব্যক্তি ইয়াশ রোহান- ছবিতে বিরুপ মন্তব্য করা সংকীর্ণ মানসিকতার মানুষদের থেকে অনেক উপরে। ওদেরকে বিবেকের স্লোগান দিয়ে কোন লাভ নেই, তাদের বিবেক Permenantly Block করা। তারপরেও বলতে হয়, মানুষের পাশে থাকুন, মানুষের উৎসবে মানুষের আনন্দ ভাগ করে নিন।’

ইয়াশ রোহানের পাশে দাঁড়িয়েছেন আরও অনেক তারকা- ভার্চুয়ালি প্রতিবাদ জানিয়েছেন অভিনেতা নাসির উদ্দীন খান, রাশেদ মামুন অপু, সোহেল মণ্ডল, নির্মাতা শিহাব শাহীন, মিশুক মনি, মাসরিকুল ইসলাম, হাসান রেজাউল, অভিনেত্রী তাসনুভা তিশাসহ আরও অনেকে।

ডিআর/এসএসকে

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

বিনোদন নাটক

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর