বাংলা চলচ্চিত্রের আলোচিত ও জনপ্রিয় নায়িকা পরীমণি সবসময়ই আলোচনায় থাকেন। কখনো সিনেমার চরিত্রে, কখনো ব্যক্তিজীবনের খোলামেলা মন্তব্যে। সম্প্রতি মাছরাঙা টিভির ‘আরআরকে পডকাস্ট’-এ উপস্থাপক রুম্মান রশিদ খানের সঙ্গে আলাপে তিনি নিজের জীবন, সংগ্রাম, অর্থনীতি ও বাস্তবতা নিয়ে অকপটে কথা বলেছেন।
সেখানে উপস্থাপক জানতে চান— ‘অনেকেই জানতে চায়, তুমি আসলে কত টাকার মালিক?”
জবাবে পরীমণি হাসতে হাসতে বলেন, ‘অনেকেই ভাবে আমার প্রচুর টাকা আছে, কিন্তু কোনও টাকাই আসলে আমার না! আমি যা কিছু আয় করি, সবকিছুই কোথাও না কোথাও ইনভেস্ট করে ফেলি। যদি চাইতাম সম্পত্তি গড়ে তুলতে, তাহলে অনেক আগেই পারতাম। কিন্তু আমি টাকাকে জমিয়ে রাখার মানুষ না — আমি কাজের মানুষ।’
তিনি জানান, জীবনের বিভিন্ন সময়ে যাদের সাহায্য করেছেন, তার জন্যই অনেক সময় আর্থিক সংকটে পড়তে হয়েছে। পরীমণির ভাষায়, ‘একটা সময় আমার এক বন্ধুর বোনের বিয়ে ছিল। ওর খুব দরকার ছিল টাকার। তখন আমি নিজে নানা উপায়ে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ টাকা জোগাড় করে তাকে দিয়েছিলাম। আমি এমন অনেক সময় করেছি — কারণ আমি মানুষকে সাহায্য করতে ভালোবাসি।’
অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘অনেকে ভাবে, আমি অনেক সম্পত্তির মালিক, বড় গাড়ি, দামী ফ্ল্যাট— আসলে কিছুই না। আমার গাড়িটাও লোনে কেনা। আমি এখনও ভাড়া বাসায় থাকি। আদালতে আমার গাড়ির কাগজপত্র দেখেই আমাকে ছেড়েছিল, না হলে সেটাও হয়তো চলে যেত।’
‘বডি’ নামের নিজের ফ্যাশন ব্র্যান্ড নিয়েও কথা বলেন পরীমণি। তিনি বলেন, ‘আমি এখন ‘বডি’ নামের এক পোশাক ব্র্যান্ডে মন দিয়েছি। অনেক কষ্ট করে নিজের ডিজাইন অনুযায়ী প্রোডাক্ট বানাই। প্রথম ব্যাচেই দেড় হাজার পিস বিক্রি হয়ে গিয়েছিল তিন দিনের মধ্যে! আমি সত্যিই অবাক হয়েছিলাম। এখন সবকিছু পরিকল্পনা করে এগোচ্ছি।’
নিজের জীবন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে পরীমণি বলেন, ‘আমি এখন নিজের শরীর, নিজের কাজ, আর আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়েই ভাবি। আমি বিলাসবহুল জীবনের পেছনে ছুটি না। আমার কাছে শান্তি মানে হচ্ছে কাজ করা আর আমার বাচ্চার সঙ্গে সময় কাটানো।’
সবশেষে পরীমণি বলেন, ‘আমার জীবনে কোনো কিছুই ভুল না— সবই অভিজ্ঞতা। তাই আমি এখন যা করি, মন থেকে করি। আমার জীবন, আমার সিদ্ধান্ত— আমি সেটাই উপভোগ করি।’
‘আরআরকে পডকাস্ট’-এর এই পর্বটি প্রচারের পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে পরীমণির এই বক্তব্য। ভক্তরা বলছেন, ‘এটাই আসল পরীমণি, যিনি নিজের মতো করে বাঁচেন, নিজের মতো করে লড়েন।’
ডিআর/এসএসকে

