টানা তিন দিন ধরে অনলাইন দুনিয়ায় আলোচনায় রয়েছেন জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর রিপন মিয়া। এক বেসরকারি টেলিভিশনের প্রচারিত প্রতিবেদনে তাকে নিয়ে একাধিক অভিযোগ তোলার পর থেকেই শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কের ঝড়। প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়, রিপন নাকি বাবা–মায়ের খোঁজ রাখেন না, এমনকি স্ত্রী ও সন্তানদের সম্পর্কেও নাকি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এই অভিযোগেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে নেটিজেনরা।
এরপর বুধবার ঢাকায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এক গণমাধ্যমের সামনে আসেন রিপন মিয়া। মা, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে পাশে নিয়ে তিনি জানান, পুরো ঘটনাই এক ধরনের ভুল বোঝাবুঝি। কখনো হেসে, কখনো কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন।
‘ঘুম থেকে উঠেই দেখি কয়েকজন সাংবাদিক ক্যামেরা নিয়ে হাজির। তারা নানা প্রশ্ন করতে থাকে— আমি মজা করে একটা কথা বলেছিলাম, ওরা সেটাই কেটে নিয়ে এমনভাবে দেখিয়েছে যেন আমি পরিবার অস্বীকার করছি। আসলে ব্যাপারটা এমন না, পুরো ভিডিও দিলে সবাই বুঝতে পারত,’ বলেন রিপন।
স্ত্রী–সন্তানকে অস্বীকার করার অভিযোগ নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘দেড় বছর আগেই আমি বিয়ে করেছি— সে সময়ই ভিডিওতে বলেছিলাম। কিন্তু বারবার একই প্রশ্ন শুনে আমি রাগে মজা করে বলি, ‘বিয়ে করিনি।’ কে জানত, এটা এত বড় ঝামেলা করবে!”
বাবা–মায়ের খোঁজ না রাখার অভিযোগ প্রসঙ্গে রিপনের বক্তব্য, ‘আমি নিজের হাতে ওনাদের জন্য আধাপাকা ঘর বানাচ্ছি। আলাদা রুম করছি— একটায় আমি, আরেকটায় আব্বু–আম্মু থাকবেন। কোন মাসে টাকা দিই নাই, এইটা জিজ্ঞেস করলে ভালো হইত।’
রিপনের মা ফাতেমা বেগমও বলেন, ভুল বোঝাবুঝির পেছনে কিছু প্রতিবেশীর উসকানি ছিল, ‘অনেকে কয়, ও নাকি লাখ লাখ টাকা কামায়, আমাদের কিছু দেয় না। সাংবাদিকরা আইছিল, আমি ভাবছিলাম সাহায্য করবে। উল্টা কথা কইছে। এখন বুঝি, আমরা ভুল করেছি।’
রিপন জানান, ভিডিও বানানো তার পেশা নয়, ভালোবাসা থেকে করা একটি শখ, ‘আমি পেশায় কাঠমিস্ত্রি। ভিডিও বানানো আমার পছন্দের কাজ, জীবিকার একমাত্র উৎস না। চাইলে কাল থেকেই বন্ধ করতে পারি।’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুরে প্রচারিত প্রতিবেদনে রিপনের মায়ের বক্তব্যের কিছু অংশ দেখানো হয়, যেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা গরিব, তাই হয়তো ও এখন পরিচয় দিতে চায় না।’ এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
রিপন মিয়ার অনুরোধ, ‘আমার ভুল বোঝাবুঝিটা সবাই যেন বোঝে। আমি আমার পরিবারকে কখনো লুকাইনি, বরং ওরাই আমার শক্তি।’
ডিআর/এসএসকে

