বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় মূকাভিনয় প্রদর্শনীর যাত্রা শুরু চট্টগ্রাম থেকে
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:৩৩
মুখে কোনো কথা না বলেও মনের গভীর অনুভূতি, সমাজের গল্প কিংবা মানব জীবনের প্রতিবিম্ব ফুটিয়ে তোলার এক অনন্য শিল্পরূপ হলো মূকাভিনয়। এই নীরব অথচ শক্তিশালী শিল্পধারাকে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হলো বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় মূকাভিনয়ের শিল্পযাত্রা।
এই আয়োজনের মূল উদ্যোক্তা প্যান্টোমাইম মুভমেন্ট ও দ্য মামার্স। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি গ্যালারি হলে অনুষ্ঠিত হয় এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, যা দুই পর্বে সাজানো হয়।

প্রথম পর্বে ছিল প্যান্টোমাইম মুভমেন্টের তিন দিনব্যাপী মূকাভিনয় কর্মশালার সনদপত্র বিতরণ ও আলোচনা সভা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নাট্যজন শিশির দত্ত। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের হাতে অতিথিবৃন্দ সনদপত্র তুলে দেন। আলোচনা অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন প্যান্টোমাইম মুভমেন্টের সভাপতি সোলেমান মেহেদী।
দ্বিতীয় পর্বে ছিল মূকাভিনয় প্রদর্শনী— ‘নৈঃশব্দ্যের গল্প’ ও ‘নৈঃশব্দ্যের গর্জন’। যৌথভাবে এই দুটি প্রযোজনা পরিবেশন করে প্যান্টোমাইম মুভমেন্ট ও দ্য মামার্স।

‘নৈঃশব্দ্যের গল্প’-এ উপস্থাপিত হয় কর্মশালাভিত্তিক প্রযোজনা— রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বীর পুরুষ’ ও কাজী নজরুল ইসলামের ‘লিচু চোর’ কবিতার অবলম্বনে নির্মিত মূকাভিনয়। প্রযোজনার নির্মাণে ছিলেন জয়নুল জয়। অন্যান্য প্রযোজনা ‘ওয়ান ওয়ে’, ‘শৃঙ্গার’, ‘বাস স্টপ’ ও ‘হুজুগে’ রচনা করেছেন জয়নুল জয়, রিজোয়ান রাজন ও মেহেদী। নির্দেশনায় ছিলেন সোলেমান মেহেদী।
অভিনয়ে ছিলেন শান্তনু দাশ, জয়নুল জয়, বাবলু দাশ, ঔশী, হারুন উর রশিদ, সেলিম ভূঁইয়া, সাদেক, তাহসিন, খাইরুল, জামিল, আহনাফ, সরোয়ার, ফয়সাল ও ওয়াহিদ। আবহ সঙ্গীতে ছিলেন জয়নুল জয়।
দ্য মামার্সের ‘নৈঃশব্দ্যের গর্জন’ প্রযোজনায় ছিল ‘ক্রিকেট’। রচনা, নির্দেশনা ও অভিনয়ে ছিলেন শহিদুল মুরাদ। আবহ সঙ্গীত করেছেন জয়নুল জয়।
স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে মূকাভিনয় চর্চার ধারাবাহিকতাকে নতুন প্রজন্মের সামনে উপস্থাপনের এক সৃজনশীল প্রচেষ্টা ছিল এই অনুষ্ঠান।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মূকাভিনয় শিল্পী ও সংগঠক, দ্য মামার্সের দলপ্রধান শহিদুল মুরাদ। সার্বিক সহযোগিতায় ছিল বাংলাদেশ মূকাভিনয় ফেডারেশান এবং মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল ‘বাংলাদেশের খবর’। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্যান্টোমাইম মুভমেন্টের সাধারণ সম্পাদক শান্তনু দাশ।

মূকাভিনয় শিল্পচর্চাকে সারাদেশে প্রসারিত করার লক্ষ্যে এ ৬৪ জেলা জুড়ে প্রদর্শনী চলমান থাকবে। আয়োজকদের প্রত্যাশা, যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা পেলে এই নীরব শিল্পধারা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
ডিআর/এইচআর

