বাংলা চলচ্চিত্রের চিরসবুজ নায়ক সালমান শাহ– এর অপমৃত্যু মামলা আবারও আলোচনার কেন্দ্রে। প্রায় তিন দশক পর আদালতের নির্দেশে এটি হত্যা মামলা হিসেবে পুনঃতদন্তে যাওয়ার পর নতুন করে উন্মোচিত হচ্ছে একের পর এক তথ্য, পুরোনো ঘটনার জটিল সম্পর্ক, আর পুনরায় আলোচনায় আসছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
এই মামলার ৪ নম্বর আসামি খল অভিনেতা আশরাফুল হক ডন, আর মামলার প্রধান আসামি নায়কের সাবেক স্ত্রী সামিরা হক। অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, লতিফা হক লুসি, ডেভিড, জাভেদ, ফারুক, মেফিয়ার বিউটি সেন্টারের রুবি, আবদুস সাত্তার, সাজু ও রেজভী আহমেদ ফরহাদ।
প্রায় পাঁচ বছর আগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তাদের তদন্ত শেষে জানায়, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছিলেন, তাকে হত্যা করা হয়নি। সেই প্রতিবেদনের পরই ডন বলেছিলেন— ‘আল্লাহ যা করেন, ভালোর জন্যই করেন। অবশেষে কলিজার বন্ধুকে হত্যার মিথ্যা অভিযোগ থেকে মুক্ত হলাম।’
তবে মামলা নতুন করে হত্যা হিসেবে গ্রহণ করার পর আবারও আলোচনায় এসেছে ডনের নাম। সেই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে তার পুরনো সাক্ষাৎকার, যা তিনি চার বছর আগে অভিনেতা ও উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয়–এর অনুষ্ঠানে দিয়েছিলেন— ‘সেন্স অব হিউমার’ শো–তে।
সাক্ষাৎকারে জয় সরাসরি প্রশ্ন করেছিলেন, ‘সালমান ভাইয়ের মৃত্যুর পেছনে কারণ কে হতে পারে? তার মা, না তার স্ত্রী?’
প্রথমে বিষয়টি ‘পারিবারিক ব্যাপার’ বলে এড়িয়ে যান ডন। তবে পরে তিনি বলেন, ‘সালমান শাহ মানসিকভাবে ভীষণ অস্থির ছিলেন। আমি তাকে শেষ ছয়-সাত মাসে একটাও দিন শান্তভাবে বসে থাকতে দেখিনি। ওর মধ্যে চাপা যন্ত্রণা ছিল।’
যখন উপস্থাপক জিজ্ঞেস করেন, ‘তাহলে সামিরার কোনো দোষ ছিল না?’— তখন ডন স্পষ্ট জবাব দেন, ‘আমি তো দেখতেছি না কোনো দোষ। সালমান আর সামিরার প্রেম আমি নিজের চোখে দেখেছি। এমন প্রেম আমি জীবনে দেখিনি।’
ডনের ওই বক্তব্য আবারও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কারণ, সালমান শাহর পরিবারের দাবি শুরু থেকেই একই— এটি আত্মহত্যা নয়, পরিকল্পিত হত্যা।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটনে নিজ বাসায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় সালমান শাহকে। তার মৃত্যু নিয়ে তখন থেকেই তৈরি হয় তীব্র রহস্য। ২০ অক্টোবর আদালতের নির্দেশে মামলাটি এখন হত্যা মামলা হিসেবে পুনঃতদন্তে যাচ্ছে, ফলে নতুন করে তোলপাড় শুরু হয়েছে দেশজুড়ে।
ডিআর/এসএসকে

