জুলাই আহতদের পাশে দাঁড়াতে কনসার্টে জেমস, আসবেন আতিফ আসলাম
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২১:৩৯
গেল বছরের ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে চব্বিশের জুলাই আন্দোলনে শহীদদের পরিবার ও আহতদের পাশে দাঁড়াতে ‘ইকোস অব রেভ্যুলেশন’ নামে একটি চ্যারিটি কনসার্ট আয়োজন করেছিল ‘স্পিরিটস অব জুলাই’ নামের সংগঠন। বছর ঘুরে আবারও নতুন কনসার্টের আয়োজন করছে এক ঝাঁক তরুণের এই সংগঠন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ‘স্পিরিটস অব জুলাই’ থেকে জানানো হয়েছে,বিশ্বখ্যাত সংগীতজ্ঞ রাহাত ফাতেহ আলী খান ও দেশীয় বিভিন্ন জনপ্রিয় শিল্পীদের নিয়ে গেল বছর ‘ইকোস অব রেভ্যুলেশন’ নামে সফল কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়। যে চ্যারিটি কনসার্ট থেকে আয়কৃত সম্পূর্ণ অর্থই (১ কোটি ৬৫ লাখ ১১ হাজার ৪৮৫ টাকা) ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন (জেএসএসএফ)’-এ প্রদান করা হয়েছিল।
‘ইকোস অব রেভ্যুলেশন ২.০’ শিরোনামে আবারও একটি চ্যারিটি কনসার্টের আয়োজন করতে যাচ্ছেন জানিয়ে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, এ বছরও জুলাই শহীদ, আহত ও তাদের পরিবারকে স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনসহ জুলাইয়ের চেতনাকে আরও উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে আমরা ‘ইকোস অব রেভ্যুলেশন ২.০’ নামে আরেকটি চ্যারিটি কনসার্ট আয়োজন করার উদ্যোগ নিয়েছি। যেটি থেকে আয়কৃত সম্পূর্ণ অর্থ এবারও ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এ প্রদান করা হবে। যে অর্থ সংস্থাটির চলমান শহীদ ও আহত এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের স্থায়ী পুনর্বাসন কর্মসূচিতে ব্যবহার করা হবে।
এ বিষয়ে গত ২ নভেম্বর জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এ কনসার্টে থাকছেন জেমস, সঙ্গে এবার পাকিস্তানের জনপ্রিয় শিল্পী আতিফ আসলামকে অনুষ্ঠিতব্য চ্যারিটি কনসার্টে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,“ইতোমধ্যে আমরা আতিফ আসলাম পক্ষের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ চলমান রয়েছে। তাছাড়াও, ভেন্যু নির্ধারণসহ সুশৃঙ্খলভাবে অনুষ্ঠানটি আয়োজনের লক্ষ্যে সব কাজের অগ্রগতির লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ও কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। অতি শিগগির আমরা আমাদের অনুষ্ঠানের ভেন্যু নির্ধারণ করে চ্যারিটি কনসার্টটির তারিখ ঘোষণা করবো।”
এসময় কনসার্টের সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে সংগঠনটি জানায়,আমরা আপাতত আগামী ১২ থেকে ২০ ডিসেম্বর তারিখের মধ্যে এ অনুষ্ঠানটি আয়োজনের কথা চিন্তা করছি, তবে পরিবেশ-পরিস্থিতি সাপেক্ষে সার্বিক বিষয়ে আমাদের চূড়ান্ত সব সিদ্ধান্তই সংবাদ সম্মেলন করে অথবা সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।
আসন্ন এই কনসার্টে বিদেশি অতিথিসহ দেশীয় বিভিন্ন সংগীত ব্যান্ডকে তাদের গান পরিবেশনের জন্য আমরা আমন্ত্রণ জানানোর কথাও জানানো হয়। এক্ষেত্রে দেশীয় ঐতিহ্যধারণকারী লোকসংগীত ও জনপ্রিয় কাওয়ালি সংগীত প্রাধান্য পাবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে। সংগীত ছাড়াও এতে জুলাই বিপ্লব-সংক্রান্ত আলোকচিত্রী, গ্রাফিতি ও মঞ্চনাটক প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন ইভেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
দেশে জুলাইয়ের আবহ ফেরাতেই মূলত এবারের কনসার্ট আয়োজনের উদ্যোগ বলে জানান আয়োজকরা। এ বিষয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,“আমরা লক্ষ্য করছি, বিপ্লব পরবর্তী সময়ে অনেকেই জুলাইয়ের চেতনা, আকাঙ্ক্ষা ও বিশ্বাসকে মনেপ্রাণে ধারণের বিপরীতে ব্যক্তিস্বার্থের কারণে জুলাইকে ম্লান করে দেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন। তাছাড়াও, বর্তমানে গণ-অভ্যুত্থানে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করা সৈনিকদের মাঝেও একধরণের অমিল ও অনৈক্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই সুযোগে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস না করা দেশদ্রোহী এবং ফ্যাসিবাদী শক্তির পরাজিত প্রেতাত্মারা জুলাই বিপ্লবকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। পাশাপাশি, জুলাইকে নিয়ে উপহাস করারও সাহস দেখাচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিদেশি শক্তিও এসব ষড়যন্ত্রের অংশীদার হচ্ছে। এই কঠিন সময়ে আমরা (স্পিরিটস অব জুলাই) চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে সহস্রাধিক তাজা প্রাণ ও ত্রিশ হাজারের মতো গাজী ভাই-বোনের আত্মত্যাগকে এত সহজেই বৃথা যেতে দিতে পারি না। সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে জুলাই যোদ্ধাদের পুনর্বাসনের পাশাপাশি দল-মত-ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি নির্বিশেষে জুলাইকে ধারণকারী বড় একটা অংশকে একত্র করে কিছু সময়ের জন্য হলেও আমরা দেশে জুলাইয়ের আবহ ফেরাতে চাই। সেই লক্ষ্যেই আমাদের এ আয়োজন। ”

