Logo

প্রবাস

ট্রাম্পের পদক্ষেপে পেনসিলভানিয়ার সম্মতি

Icon

নিউইয়র্ক প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ১২:৪০

ট্রাম্পের পদক্ষেপে পেনসিলভানিয়ার সম্মতি

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন বিচারক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের "অ্যালিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট" প্রয়োগের চেষ্টা প্রত্যাখ্যান করলেও, সাম্প্রতিক এক রায়ে এক বিচারক ভেনেজুয়েলার "ত্রেন দে আরাগুয়া" গোষ্ঠীর সদস্যদের দেশ থেকে বহিষ্কারে ট্রাম্পের পদক্ষেপ অনুমোদন করেছেন-যদিও তিনি বলেছেন, এ আইনের আওতায় সরকারকে আরও পরিষ্কারভাবে পূর্বে নোটিশ দিতে হবে।

পশ্চিম পেনসিলভানিয়ার ফেডারেল জেলা আদালতের বিচারক স্টেফানি হেইনস, যিনি ট্রাম্পের মনোনীত, মঙ্গলবার (১৩ মে) এক আদেশে বলেন—ট্রাম্পের ঘোষণায় "ত্রেন দে আরাগুয়া" গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ডকে “লুন্ঠনমূলক আগ্রাসন” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই গোষ্ঠীকে "বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন" হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তিনি ট্রাম্পের সেই বক্তব্যকে গুরুত্ব দেন যে, ত্রেন দে আরাগুয়া গোষ্ঠী ভেনেজুয়েলা সরকারের নির্দেশনায় কাজ করছে।

১৭৯৮ সালের এই আইন সাধারণত কেবলমাত্র ঘোষিত যুদ্ধাবস্থায়ই প্রয়োগ করা হয়। আইনের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি তখনই প্রযোজ্য যখন "যুক্তরাষ্ট্র এবং কোনো বিদেশি রাষ্ট্র বা সরকার যুদ্ধ অবস্থায় থাকে, বা কোনো বিদেশি রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে আগ্রাসন বা লুন্ঠনমূলক আক্রমণ চালায় বা এর হুমকি দেয়।"

যদিও যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে কোনো যুদ্ধে নেই, অন্য কিছু বিচারক—যাদের মধ্যে টেক্সাসের একজন ট্রাম্প-নিযুক্ত বিচারকও রয়েছেন-এই আইনের প্রয়োগ সংক্রান্ত ট্রাম্পের দাবি খারিজ করে দিয়েছেন। সম্প্রতি অবহৃত একটি সরকারি স্মারকলিপিতেও ট্রাম্পের দাবির বিরোধিতা করে বলা হয়েছে যে, ভেনেজুয়েলা সরকার টিডিএ গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে এমন কোনো প্রমাণ নেই।

এই মাসের শুরুতে, টেক্সাসের বিচারক ফার্নান্দো রদ্রিগেজ জুনিয়র ট্রাম্পের এই আইনের প্রয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করেন। তিনি লিখেন, "আগ্রাসন" বা "লুন্ঠনমূলক আক্রমণ" শব্দ দুটি এমন একটি সংগঠিত, সশস্ত্র বাহিনীকে বোঝায় যারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে নির্দিষ্ট কোনো ভৌগোলিক এলাকায় জানমালের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। ট্রাম্প ত্রেন দে আরাগুয়া-এর যেসব কার্যক্রম বর্ণনা করেছেন, সেগুলো এই আইনের শর্ত পূরণ করে না বলে রদ্রিগেজ মত দেন।

এই সব রায়ের কোনোটিই সরকারকে প্রচলিত অভিবাসন আইন অনুযায়ী ব্যক্তিদের বহিষ্কার করতে বাধা দিচ্ছে না, যা যুদ্ধাবস্থার বাইরেও নিয়মিত ব্যবহৃত হয়।

তবে বিচারক হেইনস স্পষ্ট করে বলেছেন, "অ্যালিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট"-এর আওতায় কাউকে বহিষ্কার করতে চাইলে সরকারকে অবশ্যই ২১ দিন আগে পূর্ব নোটিশ দিতে হবে এবং সেই ব্যক্তিকে নিজের বক্তব্য পেশ করার সুযোগ দিতে হবে। নোটিশ ইংরেজি ও স্প্যানিশ ভাষায় দিতে হবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী দোভাষীর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

হেইনসের এই রায় শুধু তার নিজ জেলা, পেনসিলভানিয়ার জন্য প্রযোজ্য। একইভাবে, টেক্সাস, নিউইয়র্ক ও কলোরাডো জেলার আদালতের বিরোধী রায়গুলোও কেবল তাদের নিজ নিজ জেলার জন্যই কার্যকর।

যদিও সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যে এ আইনের প্রাথমিক কিছু বিষয় নিয়ে শুনানি করেছে, ট্রাম্পের এই আইনের ব্যবহার বৈধ কি না—সে বিষয়ে এখনো জাতীয় মানদণ্ড নির্ধারিত হয়নি। হেইনসের রায় আপিলযোগ্য এবং শেষ পর্যন্ত হয়ত ব্যতিক্রম হিসেবেই থেকে যাবে, তবে এই ভিন্নমতের রায়গুলো দেখাচ্ছে যে, বিষয়টি নিয়ে বিচারকরা ভিন্ন সিদ্ধান্তে পৌঁছাচ্ছেন-যা সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলছে।

কৌশলী ইমা/এমআই

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর