Logo

প্রবাস

ঘুষের দায়ে দণ্ডিত সাবেক শেরিফকে ক্ষমা করলেন ট্রাম্প

Icon

নিউইয়র্ক প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫, ২০:৪৪

ঘুষের দায়ে দণ্ডিত সাবেক শেরিফকে ক্ষমা করলেন ট্রাম্প

ঘুষের দায়ে দণ্ডিত সাবেক শেরিফ। ছীব : সংগৃহীত

এবার ভার্জিনিয়ার সাবেক শেরিফকে পূর্ণ ও নিঃশর্ত ক্ষমা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (২৭ মে) সাবেক শেরিফ স্কট জেনকিনসকে ক্ষমা করার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। গত বছর ফেডারেল ঘুষ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন স্কট জেনকিনস। 

ট্রুথ সোশালে সোমবার (২৬ মে) দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প জানান, তিনি স্কট জেনকিনসকে ক্ষমা করছেন। ডিসেম্বরে জেনকিনসকে ৭০ হাজার ডলারের বেশি ঘুষ গ্রহণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। এই টাকার বিনিময়ে তিনি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের শেরিফ দপ্তরের অতিরিক্ত ডেপুটি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন।

উত্তর ভার্জিনিয়ার কালপেপার কাউন্টির শেরিফ হিসেবে এক দশকেরও বেশি সময় দায়িত্ব পালন করা জেনকিনস ২০২৩ সালের নির্বাচনে পরাজিত হন। তিনি একটি ষড়যন্ত্র, চারটি সৎ সেবার ডাক ও ই-মেইল জালিয়াতি, এবং সাতটি সরকারি অর্থে পরিচালিত কর্মসূচিতে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন।

অভিযোগে বলা হয়, জেনকিনস নগদ অর্থ এবং নির্বাচনী অনুদানের মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণ করেন, যার মধ্যে দু’জন ছিলেন এফবিআই-এর ছদ্মবেশী এজেন্ট। তিনি তাদেরকে প্রশিক্ষণ বা যাচাই ছাড়াই ব্যাজ ও পরিচয়পত্র প্রদান করেন, যদিও তারা শেরিফ দপ্তরের কোনো কাজেই যুক্ত ছিলেন না।

জেনকিনসের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ ওঠে যে, তিনি স্থানীয় কর্মকর্তাদের চাপ দিয়েছিলেন যেন তার ঘনিষ্ঠ এক দণ্ডিত অপরাধীর আগ্নেয়াস্ত্র বহনের অধিকার পুনরুদ্ধার করা হয়। ঘুষ কেলেঙ্কারিতে জড়িত তিন ব্যক্তির মধ্যে এক দণ্ডিত অপরাধীসহ সবাই আগেই দোষ স্বীকার করেছেন, জেনকিনসের বিচার হওয়ার আগেই।

জেনকিনসকে ২০২৪ সালের মার্চে ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। সে সময় ভারপ্রাপ্ত মার্কিন অ্যাটর্নি জ্যাকারি টি. লি বলেন, “স্কট জেনকিনস তার পদে থাকার শপথ এবং কালপেপার কাউন্টির নাগরিকদের আস্থার অপমান করেছেন। এই মামলাটি প্রমাণ করে, যখন কোনো নির্বাচিত আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা ব্যক্তিগত লাভের জন্য তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করেন, তখন বিচার বিভাগ তাদের জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসবে।”

তবে ট্রাম্প যুক্তি দেন, জেনকিনস ন্যায্য আচরণ পাননি। তিনি অভিযোগ করেন, মামলার বিচারক—যিনি বাইডেন দ্বারা নিযুক্ত—জেনকিনসের পক্ষে দাখিল করা নির্দোষ প্রমাণ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান।

ট্রাম্প বলেন, 'এই শেরিফ বাইডেনের বিচার বিভাগের অতিরিক্ত উদ্যমী আচরণের শিকার। তিনি একদিনের জন্যও জেলে থাকার যোগ্য নন। তিনি একজন চমৎকার মানুষ, যাকে চরমপন্থী বামপন্থীরা নির্মমভাবে নিপীড়ন করেছে।'

জেনকিনস ক্ষমার আবেদন করেছিলেন, এবং সম্প্রতি এক ওয়েবিনারে বলেন, তার কাছে আপিল করার মতো অর্থ নেই। তিনি বিশ্বাস করেন, ট্রাম্প যদি মামলার প্রকৃত তথ্য ও তার অবস্থান জানতে পারেন, তবে সহানুভূতির সঙ্গে সাহায্য করবেন।

ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন-প্রমাণ ছাড়াই-যে বাইডেন প্রশাসনের সময় বিচার বিভাগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়েছে এবং কনজারভেটিভদের লক্ষ্যবস্তু করেছে।

দ্বিতীয় দফা প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় ট্রাম্প বিতর্কিত অনেক ব্যক্তিকে ক্ষমা করেছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল দাঙ্গার দণ্ডিতদের অধিকাংশ এবং ওয়্যার ফ্রডে দোষী সাব্যস্ত কনজারভেটিভ ভাষ্যকার ও লাস ভেগাস সিটি কাউন্সিলের সাবেক সদস্য মিশেল ফিওরে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, ট্রাম্প প্রশাসনের সময় বিচার বিভাগও একাধিক সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছিল, যার ফলে ডেমোক্র্যাটদের পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠে-এই তদন্তগুলো মূলত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের টার্গেট করতেই চালানো হয়েছে।

কৌশলী ইমা/এমআই

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর