গ্রীষ্মকালীন ছুটির ভ্রমণ মৌসুম সামনে রেখে বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ সতর্কতা হালনাগাদ করছে যুক্তরাষ্ট্র। এই প্রেক্ষাপটে ভারতের জন্য নতুন ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র ও অন্যতম জনবহুল দেশ ভারতকে ‘লেভেল ২’ নিরাপত্তা ঝুঁকির শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যার অর্থ, ভ্রমণকারীদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতে অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদের কারণে ভ্রমণে সতর্ক থাকুন। কিছু অঞ্চলে ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি।
এছাড়া ধর্ষণ, সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মতো অপরাধের ঝুঁকির কথা তুলে ধরা হয়েছে। জানানো হয়েছে যে, পর্যটনকেন্দ্র, পরিবহন হাব ও জনবহুল এলাকা সম্ভাব্য হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ সতর্কতায় ভারতের কিছু অঞ্চলে ভ্রমণ পুরোপুরি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে—যা ‘লেভেল ৪: ভ্রমণ করবেন না’ ক্যাটাগরিতে পড়ে। এর মধ্যে রয়েছে:
জম্মু ও কাশ্মীর: অঞ্চলটিকে বেসামরিক অস্থিরতা ও নিয়মিত সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর আওতায় জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা যেমন শ্রীনগর, গুলমার্গ ও পাহেলগামও অন্তর্ভুক্ত। এই অঞ্চলটি ভারত-পাকিস্তান সীমান্তবর্তী লাইন অব কন্ট্রোলের কাছাকাছি অবস্থিত, যেখানে প্রায়ই সহিংস সংঘর্ষ হয়।
মধ্য ও পূর্ব ভারতের কিছু অংশ: বিশেষ করে পূর্ব মহারাষ্ট্র, উত্তর তেলেঙ্গানা ও পশ্চিম পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলকে উচ্চ ঝুঁকির এলাকা বলা হয়েছে। এসব অঞ্চলে মাওবাদী বা নকশালপন্থী চরমপন্থীরা নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়ে থাকে।
মণিপুর: সম্প্রতি এই উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে জাতিগত সহিংসতা ও গোষ্ঠীগত বাস্তুচ্যুতির ঘটনা ঘটেছে। এ অঞ্চলকেও ‘লেভেল ৪’ তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়া ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে ভ্রমণ ‘পুনর্বিবেচনার’ পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর কার্যক্রম, সহিংস বিক্ষোভ এবং বোমা হামলার ঘটনার কারণে নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে অনিশ্চিত বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, জরুরি পরিস্থিতিতে এসব অঞ্চলে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের সহায়তা প্রদান করা রাষ্ট্রদূতাবাসের পক্ষে কঠিন হতে পারে। তাই সরকারি কর্মচারীদের এসব অঞ্চলে ভ্রমণের জন্য বিশেষ অনুমতি নিতে হয়।
ভ্রমণকারীদের সতর্ক করে আরও জানানো হয়েছে, ভারতে জিপিএস ট্র্যাকার ও স্যাটেলাইট ফোন বহন করা অবৈধ। নারীদের একা ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় আইন ও সামাজিক প্রথা কঠোরভাবে মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বর্তমানে ভারতে মার্কিন দূতাবাস রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবস্থিত। এছাড়া চেন্নাই, মুম্বাই, হায়দরাবাদ ও কলকাতায় যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলেট রয়েছে।
ওএফ