গণঅভ্যুত্থানে অবদানের স্বীকৃতি চেয়েছেন প্রবাসী জুলাই যোদ্ধারা

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৫, ১২:০৫

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিভিন্ন দেশে একযোগে আন্দোলন গড়ে তোলা প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের অবদানের স্বীকৃতি চেয়েছেন। যুক্তরাজ্যপ্রবাসী বাংলাদেশিদের মানবাধিকার সংগঠন ‘গ্লোবাল বাংলাদেশিজ অ্যালায়েন্স ফর হিউম্যান রাইটস’ (জিবিএএইচআর) এ দাবি জানিয়েছে।
বুধবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় ঢাকার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে প্রবাসীদের জুলাই আত্মত্যাগ নিয়ে রচিত ‘জুলাই ৩৬ : আন্দোলন দেশে দেশে’ এবং ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান সিলেট পর্ব : জুলাই-আগস্ট ২০২৪’ প্রামাণ্য গ্রন্থদ্বয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ দাবি জানান জিবিএএইচআর নেতারা।
সংগঠনের আহ্বায়ক ও মুখপাত্র, অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয় (এডাস্ট) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সুরমা সম্পাদক শামসুল আলম লিটন বই দুটি সম্পাদিত করেছেন। এতে তুলে ধরা হয়েছে- কিভাবে বিভিন্ন দেশে প্রবাসীরা ফ্যাসিবাদ তাড়াতে একত্রিত হয়েছিলেন। কীভাবে বিদেশে গড়ে তুলেছিলেন আন্দোলন। যা পরে ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে- তা ফুটে উঠেছে ছবিতে ও বর্ণনায়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জুলাই শহীদ মীর মুগ্ধর বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘জুলাই আন্দোলন শুধু দেশেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। যেখানে প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেছেন। তাদের স্বীকৃতি দিতে হবে। এ দাবি আমারও।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামীতে এমন আন্দোলন যাতে না করতে হয়, আবু সাঈদ ও মুগ্ধর মতো সন্তান যাতে হারাতে না হয়।’
স্বাগত বক্তব্যে মুখপাত্র শামসুল আলম লিটন আগামী বাংলাদেশের নেতৃত্বের জন্য তরুণদের তৈরি হতে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘প্রবাসীরা যে যে স্থানে আন্দোলন বা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটানোর শপথ নিয়েছিলেন, সেখান থেকেই দেশ গড়ার নতুন যুদ্ধ শুরু করবে প্রবাসী মানবাধিকার সংগঠনের জুলাই যুদ্ধজয়ী এ জোট।’
দ্রুত প্রবাসী জুলাই যোদ্ধাদের স্বীকৃতি দিতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন,
আমরা অবদান রেখেছি, স্বীকৃতি দিতেই হবে। ‘আমাদের সংগঠনগুলো বিশ্বাস করত, ফ্যাসিবাদকে সরে যেতেই হবে। মানবাধিকার, গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবেই।’
বিশেষ অতিথি এডাস্ট স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (এসডিআই) পরিচালক, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. এহসানুল হক মিলন বলেন, স্বীকৃতি প্রবাসীদের কেন চাইতে হলো। দ্রুত স্বীকৃতি দিন।
অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রবাসীদের বীরত্বকে আনুষ্ঠানিক শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানো হয়। শহীদ পরিবারের মর্যাদা ও প্রবাসীদের মধ্যে যারা হামলা ও মামলার শিকার হয়েছেন, তাদের বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বক্তারা।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জোটের যুগ্ম আহ্বায়ক ব্যারিস্টার জাকির হাসান। জুলাই আন্দোলন অভিজ্ঞতা ও ফ্যাসিস্ট সরকারের চিত্র তুলে ধরেন নির্বাসিত নির্যাতিত বিচারক মোতাহার হোসেন, এবি পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার ফুয়াদ আবদুল্লাহ, বিলেতের আইনজীবী নাশিত রহমান, ব্যারিস্টার শিবলী সাদিক ও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার আমজাদ হোসেন।
এসময় এডাস্ট আইন বিভাগের চেয়ারম্যান আ. ম. মো. সাঈদ, ইইই বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আশিস কুমার ভট্টাচার্য, এগ্রিবিজনেস বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোশারফ হোসেন, রোবোটিক্স অ্যান্ড অটোমেশন বিভাগের চেয়ারম্যান জনাব মাজিদ ইশতিয়াক আহমেদ, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের কো-অর্ডিনেটর জোবায়ের আহমেদ, জিবিএএইচআর সিনিয়র ফেলো রুপম রাজ্জাক, যুগ্ম আহ্বায়ক শিক্ষক ও গবেষক মেজর একেএম জাকির হোসেন (অব.) প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে এক পর্বে সুর-সঙ্গীতে মাতিয়ে তোলেন যোগাযোগ ও সচেতনতা বৃদ্ধি বিশেষজ্ঞ সাজেদ ফাতেমী। নকশীকাঁথার গানের মূর্ছনায় শেষ হয় অনুষ্ঠান।
এমবি