ছবি : বাংলাদেশের খবর
কানাডার টরন্টোতে মুক্ত মঞ্চের উদ্যোগে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে।
স্থানীয় সময় ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় টরন্টোর ২৫২৫ ড্যানফোর্থ এভিনিউয়ের হোপচার্চ মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির অংশগ্রহণে মিলনায়তনটি দেশপ্রেম ও ঐক্যের আবহে মুখর হয়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানে আবৃত্তিকার হিমাদ্রী রায়ের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন নাট্যজন মাহমুদুল ইসলাম সেলিম। তিনি উপস্থিত সবাইকে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে অনুষ্ঠানে স্বাগত জানান।
স্বাগত বক্তব্যের পর ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালের রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহের ইংরেজি ধারাবর্ণনা পাঠ করেন নতুন প্রজন্মের অনিন্দিতা বর্ণমালা ও অরুনিম আহমেদ। এ পর্বে গ্রন্থনায় ছিলেন ড. শামীম আহমেদ। পরে তিনি বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরে আলোচনায় অংশ নেন এবং উপস্থাপকদের ধন্যবাদ জানান। দর্শকরা গভীর মনোযোগের সঙ্গে এ পর্ব উপভোগ করেন।
দ্বিতীয় পর্বে ছিল জাগরণের গান। নাহিদ কবিরের পরিচালনায় এ পর্বে সংগীত পরিবেশন করেন চিত্রা সরকার, নাহিদ কবির, মৈত্রেয়ী দেবী, ইভা নাগ, শিখা আখতারী আহমাদ, তানিয়া নূর, সোহানা আমিন, রাশিদা এলাহী, গৌরী দাস, নিঘাত মর্তুজা, আশরাফুন নাহার, এনামুল কবির, পার্থ সারথি সিকদার, নবিউল হক, গোলাম মোস্তফা, সাখাওয়াত আহমেদ, সুভাষ দাশ, শরিফুর রহমান জুয়েল ও জহুরুল ইসলাম। যন্ত্রানুসঙ্গে ছিলেন রূপতনু শর্মা ও চিন্ময় কর।
এ সময় হিমাদ্রী রায় মুক্ত মঞ্চের পক্ষ থেকে মাসব্যাপী অনুশীলনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য পার্থ সারথি সিকদার ও চিত্রা সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর প্রতি উৎসর্গ করে তৃতীয় পর্বে কবিতা পাঠের আয়োজন করা হয়। ‘আগুন বুকের স্লোগান’ শিরোনামের এ পর্বে কবিতা আবৃত্তি করেন তানিয়া নূর, শিখা আখতারী আহমাদ, মানবি মৃধা, তাপস কর্মকার ও অনুরাগ আহমেদ।
শেষ পর্বে নৃত্যশিল্পীদের নান্দনিক পরিবেশনা দর্শকদের মুগ্ধ করে। এ পর্বে অংশ নেন সিমা বড়ুয়া, ডালিয়া আহমেদ, সাইদা লিসা, সুকন্যা চৌধুরী, সুবাহ জামান, আস্থা জাহান, চিত্রা দাস, আরাশি দাম, মেধা দেবনাথ, শ্রেয়া সরকার, উপনীতা দাস, প্রার্থনা দেব, নয়মী শ্রেয়া, গার্গি লাহিড়ী, মৌমিতা পাল, পারমিতা তিন্নি ও টিয়ারা সেন।
সমবেত জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ছিলেন নাহিদ কবির। বিষয় ভাবনায় ছিলেন হিমাদ্রী রায়। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন কবি দেলওয়ার এলাহী। আপ্যায়নে ছিলেন সংগঠক এলিনা মিতা। মঞ্চ ভাবনায় ছিলেন মাহমুদুল ইসলাম সেলিম, মঞ্চসজ্জায় যতীন্দ্র বিশ্বাস এবং শব্দ নিয়ন্ত্রণে ছিল ড্যানফোর্থ সাউন্ড।
আয়োজকরা জানান, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরা আমাদের দায়িত্ব। প্রবাসে অবস্থান করলেও দেশ সব সময় হৃদয়ে ধারণ করতে হবে এবং নতুন প্রজন্মকে বিজয় দিবসের ইতিহাস ও বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত করে তুলতে হবে। প্রচণ্ড শীতের মধ্যেও প্রবাসী বাঙালিদের উপস্থিতিতে পুরো আয়োজনটি যেন মুহূর্তেই একখণ্ড বাংলাদেশে পরিণত হয়।

