-6805df7d7043f.jpg)
ছবি : সংগৃহীত
গাছের ডালপালায় এখনো ঝুলে আছে কাঁচা কাঁচা আম। কিছুদিন আগেও যেগুলো ছিল ছোট ছোট মুকুল, সেগুলো এখন রূপ নিয়েছে কচকচে সবুজ কাঁচা আমে। কাঁচা কচকচে আম দেখলেই জিভে পানি চলে আসে। সেই সাথে আরেকটি ব্যাপারও কিন্তু আমাদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। খেতে ইচ্ছে হলেও অনেকেই খেতে চায় না এই ভয়ে যে তার দাঁত টক হয়ে যাবে। শুধু আম নয় টক জাতীয় যে কোনো ফল দেখলেই অনেকের মনে এই ধরনের ভয় কাজ করে। কিন্তু কেন এমনটি হয়?
টক খাওয়ার পর দাঁতের যে অবস্থা হয় তার জন্য দায়ী টক ফলের রাসায়নিক গঠন। এটি আমাদের দাঁতের উপর প্রভাব ফেলে। টক ফল, যেমন লেবু, কমলা, আনারস, ইত্যাদি, প্রচুর পরিমাণে সাইট্রিক অ্যাসিড এবং ম্যালিক অ্যাসিড থাকে। এই অ্যাসিডগুলো ফলের টক স্বাদের জন্য দায়ী।
এই অ্যাসিডগুলো আমাদের দাঁতের এনামেলের সাথে বিক্রিয়া করে। অ্যাসিডের সংস্পর্শে এলে দাঁতের এনামেল সাময়িকভাবে নরম হয়ে যায়। দাঁতে তখন শিরশির অনুভূতি হয়। দাঁতের শক্ত সাদা রঙের অংশটাই মূলত এনামেল।
যদিও এই অনুভূতি বেশিক্ষণ স্থায়ী নয়। আমাদের মুখের লালা (স্যালাইভা) তৎক্ষণাৎ কাজ শুরু করে। টক ফল খাওয়ার পর মুখের পিএইচ কমে গেলে লালা চেষ্টা করে সেই মাত্রা পুনরুদ্ধার করতে। মূলত এটি অ্যাসিডকে ধুয়ে ফেলে এবং এনামেলের নরম স্তরকে শক্ত করতে সাহায্য করে। তবে যদি নিয়মিত বেশি পরিমাণ টক খাবার খাওয়া হয়, কিংবা সঠিকভাবে দাঁতের যত্ন নেওয়া না হয়, তাহলে এই ক্ষত স্থায়ী হতে পারে।
তবে এর সমাধান খুব সহজেই করা যায়। টক খাবার খাওয়ার পর পানি দিয়ে কুলি করতে হবে। দাঁতের ওপর জমে থাকা অ্যাসিড ধুয়ে যাবে এতে। তবে টক খাওয়ার পরপরই দাঁত ব্রাশ করা যাবে না। তাতে দাঁতের নরম এনামেল আরও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অন্তত আধঘণ্টা অপেক্ষা করে ব্রাশ করা উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
অ্যাসিডিক খাবার থেকে দাঁত রক্ষার জন্য ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট বেশ উপকারী। এটি দাঁতের এনামেলের শক্তি বাড়ায় এবং ক্ষয় প্রতিরোধ করে।
তাই দাঁত টক হওয়ার ভয়ে এই বৈশাখে আম অথবা টক জাতীয় ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকা যাবে না। ইচ্ছে হলেই নির্ভয়ে খেয়ে নিতে পারেন।
টিএ