সপ্তাহ পেরিয়েও সেবা শুরু হয়নি চক্ষু হাসপাতালে

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১১:১৮

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল /ছবি : বাংলাদেশের খবর
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে টানা সপ্তম দিনের মতো চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে। হাসপাতালটিতে জুলাই অভ্যুত্থানে আহত তরুণদের সঙ্গে চিকিৎসক-কর্মচারীদের সংঘর্ষের পর থেকে এই অচলাবস্থা চলছে।
সোমবার (৩ মে) সকাল ১০টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ভেতরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। কোনো চিকিৎসক, নার্স বা কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত নেই। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সেবা নিতে আসা অনেক রোগীরা গেটে অনেক্ক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ক্ষোভ নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
হাসপাতালে সেবা নিতে মুন্সিগঞ্জ থেকে এসেছেন জিনাত আরা। তিনি বলেন, দুই দিন আগে একবার এসেছিলাম। এসে দেখেছি হাসপাতাল বন্ধ। আজও এসে দেখছি হাসপাতাল বন্ধ। সরকারি হাসপাতালে এভাবে বন্ধ থাকতে আগে কখনও দেখিনি।
সাভার থেকে আসা মনিরুল আলম বলেন, আমি চোখের সমস্যায় ভুগছি তিন মাসের বেশি সময়। এ হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসা নিতে আসি। চিকিৎসক অপারেশনে তারিখ দিয়েছিল মে মাসের ৩০ তারিখ। কিন্তু এখন হাসপাতাল বন্ধ।
হাসপাতালটির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম বলেন, চিকিৎসক ও কর্মচারীরা নিরাপত্তার অভাবে কাজে ফিরতে পারছেন না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় হাসপাতালের পরিস্থিতি জানে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় হাসপাতাল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে কবে নাগাদ সেবা চালু করা যাবে নিশ্চিত নই।
এদিকে গত শনিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে চিকিৎসাসেবার অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত হলেই জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইন্সষ্টিটিউট হাসপাতালে সকল ধরনের চিকিৎসা সেবা পুনরায় চালু করা হবে। এই সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে চক্ষু চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে এমন রোগীদের নিকটস্থ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে চিকিৎসাসেবা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ মে হাসপাতাল পরিচালকের কক্ষে চার আহত তরুণ বিষপান করেন। পরদিন ২৮ মে তারা হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরীকে অবরুদ্ধ করে গায়ে পেট্রোল ও কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। এর পরদিন, ২৯ মে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে হাসপাতালের ভেতরে।
জানা গেছে, সংঘর্ষের দিন পরিচালকের কক্ষে ভাঙচুর চালানো হয়। পরে কর্মবিরতি শুরু করলে বিক্ষুব্ধ তরুণদের একটি অংশ চিকিৎসকদের ওপর হামলা চালায়। এতে ৯ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী আহত হন। সংঘর্ষের পর হাসপাতালে জুলাই আন্দোলনে আহতরা অবস্থান করলেও বেশিরভাগ সাধারণ রোগী হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন।
এসব ঘটনার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে পরিচালকের দায়িত্ব পালনে অপারগতা জানান অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ। পরে তাকে সাত দিনের ছুটিতে পাঠানো হয় এবং ডা. জানে আলমকে ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এসআইবি/ওএফ