-6846f94544c36.jpg)
কোভিড-১৯-এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট ভারতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় দেশটিতে ভ্রমণ নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নতুন করে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বিশেষভাবে বয়স্ক ও অসুস্থদের ভ্রমণ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারতের পাশাপাশি যেসব দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে, সেসব দেশে প্রয়োজন ছাড়া ভ্রমণ না করাই ভালো। একই সঙ্গে দেশের সব স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে।
সম্প্রতি ঢাকায় কোভিড-১৯-এ একজন বয়স্ক ব্যক্তির মৃত্যু এবং নতুন কিছু উপ-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ায় জনমনে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) জানিয়েছে, ওমিক্রনের জেএন.১ উপধারার নতুন দুইটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট—XFJ ও XFC—বর্তমানে সংক্রমণের পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব ভ্যারিয়েন্ট আগের তুলনায় দ্রুত ছড়ায়, তাই স্বাস্থ্যবিধি না মানলে ঝুঁকি বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বয়স্ক, দুর্বল স্বাস্থ্যসম্পন্ন ও জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলো মারাত্মক হতে পারে। তাই এদের ক্ষেত্রে মাস্ক পরা, ভিড় এড়িয়ে চলা, হাত ধোয়া ও টিকা গ্রহণের মতো ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
ভারতে ইতোমধ্যে এনবি.১.৮.১ নামের আরেকটি নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে, যা দক্ষিণ ভারতের কেরালাসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আশঙ্কা করছে, সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে এই ভ্যারিয়েন্ট দেশে প্রবেশ করতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে বেনাপোলসহ সব স্থলবন্দরে জিনগত পরীক্ষাসহ স্ক্রিনিং জোরদার করা হয়েছে। সন্দেহভাজন যাত্রীদের আইসোলেশনে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ঈদের পর ফিরতি যাত্রায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে বলেও সতর্ক করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মে মাসে দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬ জনে, যেখানে এপ্রিল মাসে এই সংখ্যা ছিল ২৩ জন। জুনের প্রথম আট দিনেই আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৩৬ জন এবং একজনের মৃত্যু হয়েছে।
তবে পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে বরং সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। প্রয়োজনে আবারও মাস্ক, স্যানিটাইজার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অভ্যাস ফিরিয়ে আনতে বলা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই সময় সচেতন হওয়ার। যাতে অতীতের মতো বড় পরিসরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আগে তা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।