দেশে প্রথম রোবট ফিজিওথেরাপি সেন্টার চালু হচ্ছে

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ২০:৩০
-Super-Specialized-Hospital-686e7cef8b236.jpg)
বিএমইউতে দেশে প্রথম রোবট ফিজিওথেরাপি সেন্টার চালু হচ্ছে। ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশে পক্ষাঘাতগ্রস্ত ও দীর্ঘমেয়াদি স্নায়ুজনিত রোগীদের পুনর্বাসনে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হতে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হচ্ছে দেশের প্রথম রোবোটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার। এ সেন্টারটি পরীক্ষামূলকভাবে সীমিত পরিসরে পাইলট প্রকল্প হিসেবে চালু করা হবে।
চীনের কারিগরি সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত এ রোবটিক রিহ্যাব সেন্টারটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আধুনিক পুনর্বাসন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। যেখানে মিলবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ও সুনির্দিষ্ট পুনর্বাসন সেবা।
বুধবার (৯ জুলাই) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি এসব তথ্য জানান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে তিনি জানান, চীন সরকার এ প্রকল্পে প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের রোবোটিক যন্ত্রপাতি অনুদান দিয়েছে। প্রযুক্তির দিক থেকে এ সেন্টারটি হবে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আধুনিক রোবোটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার। যা বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে একটি যুগান্তকারী মাইলফলক হয়ে উঠবে।
এ সেন্টারে রয়েছে ৬২টি রোবট। যার মধ্যে ২২টি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ভিত্তিক। এসব রোবটের মাধ্যমে রোগীর অবস্থা অনুযায়ী অত্যন্ত নিখুঁতভাবে ফিজিওথেরাপি, স্নায়ুবিক পুনর্বাসন ও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব।
বিএমইউ কর্তৃপক্ষের বরাতে তিনি জানান, সেন্টারটি চালুর পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে চীনের ৭ সদস্যের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারদের একটি বিশেষজ্ঞ দলের নেতৃত্বে এরই মধ্যে ২৭ জন চিকিৎসক ও ফিজিওথেরাপিস্টকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জন করলে এবং প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হলে সেন্টারটি পুরোদমে চালু করা হবে।
যেসব রোগী স্ট্রোক, পক্ষাঘাত, স্নায়ুবিক বৈকল্য, দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা, নার্ভ ইনজুরি, ফ্রোজেন শোল্ডার, দুর্ঘটনাজনিত জটিলতা বা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের দুর্বলতাসহ জটিল পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছেন, তাদের এ রোবোটিক সেন্টারে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।
বিশেষত, জুলাইয়ে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন এবং এখনো দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় ভুগছেন, তাদের এ সেন্টারে বিনামূল্যে রোবোটিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।
সেন্টারটি শুধু বিশেষ উদ্দেশ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। পরিকল্পিত নীতিমালার আলোকে সাধারণ রোগীদের জন্যও ধাপে ধাপে সেবা উন্মুক্ত করা হবে। একইসঙ্গে চেষ্টা থাকবে চিকিৎসার ব্যয় রোগীদের আর্থিক সক্ষমতার মধ্যে রাখার।
এ সেন্টার চালু হলে বাংলাদেশ আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর পুনর্বাসন চিকিৎসায় এক নতুন যুগে প্রবেশ করবে। দেশীয় চিকিৎসাব্যবস্থার জন্য এটি শুধু একটি প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নয়, বরং পক্ষাঘাতগ্রস্ত ও দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতায় ভোগা মানুষের জীবনে আশার আলো হয়ে উঠবে।
ডিআর/এমবি