দেশে ফের ছড়িয়ে পড়েছে ‘বার্ড ফ্লু’, আক্রান্ত ৪ শিশু

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:৫১

ছবি : সংগৃহীত
নতুন করে চার শিশুর দেহে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু শনাক্তের মাধ্যমে দেশে ফের মাথাচাড়া দিয়েছে এ ভাইরাসটি। আক্রান্ত শিশুদের বয়স এক থেকে আট বছর। তবে চিকিৎসা শেষে তারা বর্তমানে সুস্থ আছেন।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বার্ড ফ্লু প্রতিরোধের ব্যবস্থা জোরদারের জন্য সরকার ইতোমধ্যেই জাতীয় গবেষণা কৌশল প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে।’
গত বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) আইসিডিসিআরবি, সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, এনজিও এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার অংশীদারদের নিয়ে অনুষ্ঠিত একটি গোলটেবিল বৈঠকে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয় এবং দেশের জন্য জাতীয় গবেষণা কৌশল চূড়ান্ত করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভায় সংক্রমণ পর্যবেক্ষণ, ঝুঁকির কারণ চিহ্নিতকরণ, ভাইরাস-হোস্ট সম্পর্ক, প্রাণী-মানব সংযোগ এবং টিকার কার্যকারিতা নিরীক্ষার জন্য আরও শক্তিশালী পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করা হয়।
আইসিডিসিআরবির গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকা ও গাজীপুরের লাইভ বার্ড মার্কেট বা জীবিত হাঁস-মুরগির বাজার থেকে সংগৃহীত বাতাসের নমুনার ৯১ শতাংশ এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা পজিটিভ। এসব বাজারকে মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০২৪-২০২৫ সালে এসব বাজারে পাওয়া মৃত মুরগির প্রায় অর্ধেকই এ ভাইরাসের সাবটাইপ এইচফাইভে আক্রান্ত ছিল।
বিশ্বব্যাপী ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত আটটি দেশে ৩০ জনের মধ্যে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪ জন কম্বোডিয়ায় এবং বাংলাদেশে চারজন। উদ্বেগজনক বিষয় হলো, দেশে ২০০৩ সাল থেকে মোট ১২ জনের মধ্যে এ ভাইরাস শনাক্ত হলেও ২০২৫ সালের প্রথম আট মাসেই চারজন শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তদের মধ্যে সাতজন পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু।
গবেষকরা সতর্ক করে বলেন, পোলট্রি খাতে সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থার বড় ধরনের ঘাটতি—যেমন অসুস্থ পাখিকে আলাদা না রাখা, বর্জ্য সঠিকভাবে নিষ্পত্তি না করা এবং অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যবিধি—ই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রধান কারণ।
এএ