স্বাস্থ্য সহকারীদের কর্মবিরতি
ইপিআই ও টাইফয়েড টিকা কর্মসূচি বন্ধের আশঙ্কা
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:১৮
প্রতীকী ছবি
নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতন বৈষম্য দূরীকরণ এবং টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানের ছয় দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন। এর ফলে আগামী ১ অক্টোবর থেকে সারাদেশের প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার আউটরিচ ইপিআই টিকাদান কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে। একই সঙ্গে ১২ অক্টোবর শুরু হতে যাওয়া জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনও ঝুঁকিতে পড়েছে।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়ে সংগঠনের নেতারা এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তারা বলেন, দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কোনো টিকাদান বা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে অংশ নেবেন না স্বাস্থ্য সহকারীরা।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় দাবি আদায় পরিষদের সদস্য সচিব মো. ফজলুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বছরের পর বছর শুধু আশ্বাস শুনে যাচ্ছি, কিন্তু বাস্তবে কোনো প্রতিশ্রুতি কার্যকর হয়নি। তাই ছয় দফা দাবি মানা না পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যেতে বাধ্য হব।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ২০ হাজার স্বাস্থ্য সহকারীর বৈষম্য দূর করতে পদক্ষেপ নেবে।
সংগঠন অভিযোগ করছে, দেশের তৃণমূল পর্যায়ে শিশুদের প্রাণঘাতী ১০টি রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে স্বাস্থ্য সহকারীরা বছরের পর বছর কাজ করলেও এখনও তারা টেকনিক্যাল পদমর্যাদার আওতায় আসেননি। ফলে সরকারি অন্যান্য কর্মচারীর তুলনায় তারা চরম বেতন বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
তাদের দাবি, ১৯৯৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী, ২০১৮ সালে স্বাস্থ্য সচিব ও মহাপরিচালক এবং ২০২০ সালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েও বাস্তবে কোনো প্রতিশ্রুতি কার্যকর হয়নি।
২৬ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় সমন্বয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২৮ সেপ্টেম্বর মহাপরিচালকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান, ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর জেলা সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কাছে স্মারকলিপি প্রদান এবং ১ অক্টোবর থেকে ইপিআই কার্যক্রম, টাইফয়েড টিকা ও রিপোর্টিংসহ সব কার্যক্রম বর্জন করে কর্মবিরতি শুরু হবে।
স্বাস্থ্য সহকারীদের ছয় দফা দাবি হলো
১. নিয়োগবিধি সংশোধন
২. শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে স্নাতক সংযোজন
৩. ১৪তম গ্রেড প্রদান
৪. ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদান
৫. বেতন স্কেল ১১তম গ্রেডে উন্নীতকরণ
৬. অন্যান্য ন্যায্য দাবি বাস্তবায়ন
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্য সহকারীরা দেশের টিকাদান কর্মসূচির মূল চালিকাশক্তি। তাদের দীর্ঘমেয়াদী কর্মবিরতি চলতে থাকলে নবজাতক ও শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে, যা ভবিষ্যতে বড় ধরনের জনস্বাস্থ্য সংকট সৃষ্টি করতে পারে। একই সঙ্গে জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন স্থগিত হলে কোটি শিশু ও কিশোর-কিশোরীর স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে।
এনএমএম/এমএইচএস

