মহিপুরে ডেঙ্গুতে ২ নারীর মৃত্যু, অর্ধশতাধিক আক্রান্ত

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:২৬
-68ecf012c7e40.jpg)
ছবি : সংগৃহীত
পটুয়াখালীর মহিপুরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজন অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সিজারিয়ানের মাধ্যমে দুই দিন আগে সন্তান জন্ম দেন। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ইতোমধ্যে আরও অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লতাচাপলী ইউনিয়নের সুমাইয়া (২৫) রোববার রাতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মৃত্যুর দুই দিন আগে তিনি একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন। সন্তানটি বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
অপরদিকে মহিপুর থানার নজিবপুর গ্রামের সাফিয়া বেগম (৩০) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সুমাইয়ার স্বজনরা জানান, গর্ভবতী অবস্থায় হঠাৎ জ্বর নিয়ে সুমাইয়া অসুস্থ হন। প্রথমে তারা এটি সাধারণ জ্বর মনে করেন, পরে পরীক্ষা করে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। হাসপাতালে নেয়ার আগে তার অবস্থা গুরুতর হয়ে যায়। ডাক্তাররা অবস্থা সংকটাপন্ন দেখে সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করান।
এলাকার বাসিন্দা মিজান হাওলাদার বলেন, ‘তুলাতুলি ২০ শয্যা হাসপাতাল কার্যত অচল। কোনো এমবিবিএস ডাক্তার নেই। এলাকায় ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে, কিন্তু চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রশাসন দ্রুত হাসপাতাল চালু করুক।’
স্থানীয় বাসিন্দা হাসান আরও বলেন, ‘প্রতিদিন নতুন নতুন মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা চেষ্টা করছেন, কিন্তু ডাক্তারের অভাবে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।’
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, ‘মহিপুরে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। জনসচেতনতার জন্য মাইকিং এবং ঘরে ঘরে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তুলাতুলি ২০ শয্যা হাসপাতালে একজন এমবিবিএস ডাক্তার পদায়নের প্রক্রিয়া চলছে, তিনি দুই-এক দিনের মধ্যে যোগ দেবেন।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাওসার হামিদ বলেন, ‘এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। মশার লার্ভা ধ্বংসে ফগার মেশিন দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় স্প্রে করা হবে। তুলাতুলি হাসপাতালের ডাক্তার নিয়োগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
এদিকে মহিপুর ও আশপাশের এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বরিশালের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে।
জাকারিয়া জাহিদ/এআরএস