Logo

রাজধানী

সিনিয়র শিক্ষকের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের অসদাচরণের অভিযোগ

নুর মোহাম্মদ মিঠু

নুর মোহাম্মদ মিঠু

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৫, ২১:৫৩

সিনিয়র শিক্ষকের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের অসদাচরণের অভিযোগ

ছবি : সংগৃহীত

বকেয়া বেতন-ভাতার চাহিদাপত্র চাওয়ায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের মারমুখী আচরণের শিকার হয়েছেন রাজধানীর ‘রমনা অটিস্টিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়’র সিনিয়র শিক্ষক ওমর ফারুক ভুঁইয়া। 

এ ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোসাম্মৎ তাহমিনা পারভীনের বিরুদ্ধে ঢাকা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ মে মিটিং শেষে শিক্ষক-কর্মচারীদের জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ সালের বকেয়া বেতন ভাতার চাহিদা তৈরি হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ওমর ফারুককে চড় মারতে যান তাহমিনা পারভীন। উপস্থিত শিক্ষকরা তাৎক্ষণিক তার এমন আচরণের প্রতিবাদ জানালে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। এ সময় শিক্ষকদের প্রতিবাদমুখর অবস্থার ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করার অপচেষ্টাও করেন তিনি। শুধু তাই নয়, ইতোপূর্বে একাধিকবার এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। 

কিন্তু নানাদিক চিন্তা করে অভিযোগ না করায় শিক্ষক-কর্মচারীদের ওপর এমন বেপরোয়া আচরণ করেই যাচ্ছেন তিনি। এতে শিক্ষক-কর্মচারীদের সম্মানহানি ঘটছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার এমন অসদাচরণের বিচার না হলে ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানটিতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ সংশ্লিষ্টরা।

ভুক্তভোগী শিক্ষক ওমর ফারুক ভূঁইয়া বলেন, ‘দীর্ঘ ৩২ বছর যাবৎ বিদ্যালয়টিতে কর্মরত আছি। গত ৫ মের ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে তাহমিনা পারভীনের সঠিক বিচার চাই।’   

ওই দিনের ঘটনা সম্পর্কে সিনিয়র শিক্ষক ও শিক্ষক প্রতিনিধি হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বয়সে জুনিয়র হলেও জ্যৈষ্ঠতা ও ন্যায্যতা লঙ্ঘন করেই তাহমিনা পারভীনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যা বিধি মোতাবেক হয়নি। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই বেপরোয়া আচরণ করছেন তিনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করছেন তিনি। গত ৫ মে ওমর ফারুক ভূঁইয়ার সঙ্গে অশোভন এবং অপেশাদার আচরণ করেছেন। একজন শিক্ষকের কাছ থেকে যা মোটেই কাম্য নয়।’

এদিকে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র শিক্ষক ইয়াসমিন সুলতানা, সিনিয়র শিক্ষক সুরাইয়া বেগম, শিক্ষক ওয়াহিদা শিরিন, সালেহা আক্তার, মোসাম্মৎ ফারহানা সুলতানা। তারাও একই কথা বলেন। তাদের সবাই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের এমন আচরণে অতিষ্ঠ। তদন্ত সাপেক্ষে তারাও তার বিচার দাবি করছেন।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, ওমর ফারুক ভূঁইয়া একজন সিনিয়র শিক্ষক, কিন্তু তাকে সহ্যই করতে পারেন না ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ের একজন সিনিয়র শিক্ষককে কীভাবে কষে চড় মারার মতো ধৃষ্টতা দেখাতে পারেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তা আমাদের বোধগম্য নয়।  

বিদ্যালয়ের শিক্ষা সহায়ক শফিকুল ইসলাম, সালমা হোসেন, মোখলেচুর রহমানরাও জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সহকর্মী বান্ধব নন। প্রভিডেন্ড ফান্ডের টাকা নিতে চাইলে তিনি কোনো রকম সহযোগিতা করেন না। সবার সঙ্গেই খারাপ ব্যবহার করেন।

সিনিয়র শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণের বিষয়ে (চড় মারতে চাওয়া) জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোসাম্মৎ তাহমিনা পারভীন বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘প্রথমত এসব নিয়ে সামনাসামনি কথা বলতে হয়, ফোনে এসব কথা বলা যায় না। দ্বিতীয়ত, আমি এখন বাইরে আছি। পরে আপনার সাথে এ বিষয়ে কথা বলব।’  

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদকে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) পারভেজ চৌধুরী বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নিয়েছি দু-একদিন হলো। অভিযোগটি এখনো পাইনি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’

এনএমএম/এমআই

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর