মির্জা ফখরুলের সাড়ে ৪ কোটি টাকার সম্পদ, বার্ষিক আয় ১১ লাখ
আবু সালেহ, ঠাকুরগাঁও
প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫:৩২
ছবি : বাংলাদেশের খবর
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের প্রার্থী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজের হলফনামায় স্বামী-স্ত্রীর যৌথ সম্পদের হিসাব দিয়েছেন, যার অর্জনকালীন মূল্য প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা।
ঠাকুরগাঁও জেলা নির্বাচন অফিস ও প্রার্থীর হলফনামা অনুযায়ী, ১৯৪৮ সালের ১ আগস্ট জন্ম নেওয়া ৭৭ বছর বয়সী এমএ ডিগ্রিধারী এই রাজনীতিবিদ তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিস্তারিত বিবরণী জমা দিয়েছেন।
স্থাবর সম্পদ :
হলফনামায় উল্লেখ রয়েছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিজ নামে পাঁচ একর কৃষিজমি রয়েছে, যার অর্জনকালীন মূল্য ৬০ হাজার টাকা। তার স্ত্রীর নামে ৭০ শতাংশ ও ২.১৪ একর জমি রয়েছে, যার মূল্য ৫১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। এ ছাড়া পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত দোতলা বাড়ির অংশের মূল্য ১০ লাখ টাকা।
অকৃষি জমির মধ্যে ঠাকুরগাঁওয়ে স্বামী-স্ত্রীর যৌথ名下 ১২ শতাংশ জমির মূল্য ৩৯ লাখ ৭২ হাজার টাকা। ঢাকার পূর্বাচলে তার名下 পাঁচ কাঠা জমির আনুমানিক মূল্য ৮৫ লাখ ৪ হাজার টাকা। ঢাকায় ১৯৫০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাটের মূল্য ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া চার শতাংশ জমি (পাঁচ লাখ টাকা) ও মার্কেট শেয়ার (তিন লাখ ৪৫ হাজার ৮১৪ টাকা) রয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর অন্যান্য স্থাবর সম্পদের অর্জনকালীন মোট মূল্য এক কোটি ৩৯ লাখ ৬৫ হাজার ৮১৪ টাকা।
অস্থাবর সম্পদ :
বিভিন্ন ব্যাংকে তার একাধিক ব্যক্তিগত হিসাবে মোট জমা রয়েছে তিন লাখ ৮২ হাজার ১৫২ টাকা ৯৬ পয়সা। স্বামী-স্ত্রীর যৌথ ব্যাংক হিসাবে জমা রয়েছে ১১ লাখ ৭৪ হাজার ৮৪ টাকা।
তার নিজের নগদ অর্থ এক কোটি ২৫ লাখ ৫৮ হাজার ১১৬ টাকা ৭৭ পয়সা এবং স্ত্রীর নগদ অর্থ এক লাখ ৬৫ হাজার ৯৩০ টাকা। ‘দি মির্জাস প্রাইভেট লিমিটেড’-এর ১,৪২৮টি শেয়ারের মূল্য এক লাখ ৪২ হাজার ৮০০ টাকা। তার স্ত্রীর名下 বিভিন্ন সঞ্চয়পত্র ও মেয়াদি আমানতের মূল্য ৪৫ লাখ ১১ হাজার ৭৫০ টাকা।
এ ছাড়া তার দুটি ব্যক্তিগত গাড়ি, প্রায় ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক সামগ্রী (দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা) ও আসবাবপত্র (দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা) রয়েছে। অস্থাবর সম্পদের অর্জনকালীন মোট মূল্য দুই কোটি ৫৫ লাখ পাঁচ হাজার ৭৬৮ টাকা ৭৩ পয়সা। উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত একটি দুই নালা বন্দুকের কথাও হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।
বার্ষিক আয়ের উৎস :
কৃষি থেকে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা, ব্যবসা (হুরমত আলী মার্কেটের শেয়ার) থেকে এক লাখ ৯৭ হাজার ২৩২ টাকা, ইজাব গ্রুপের পরামর্শক হিসেবে সম্মানী ছয় লাখ টাকা, দি মির্জাস প্রাইভেট লিমিটেড থেকে সম্মানী এক লাখ ৯৮ হাজার টাকা এবং ব্যাংক মুনাফাসহ অন্যান্য উৎস থেকে সাত হাজার ৯০১ টাকা আয় উল্লেখ করেছেন। মোট বার্ষিক আয় ১১ লাখ ৮৩ হাজার ১৩৩ টাকা।
হলফনামা অনুযায়ী তার ঘোষিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মোট অর্জনকালীন মূল্য তিন কোটি ৯৪ লাখ ৭১ হাজার ৫৮২ টাকা ৭৩ পয়সা। তবে একটি প্রাইভেট কার ও ৩০ ভরি স্বর্ণের আনুমানিক মূল্য এতে অন্তর্ভুক্ত না করায় মোট সম্পদ প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা বলে ধরা যাচ্ছে।
আইনি তথ্য :
হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে দায়ের করা ৫০টি মামলার অধিকাংশই আদালতের আদেশে স্থগিত, প্রত্যাহার বা চূড়ান্ত প্রতিবেদন (এফআরটি) গ্রহণের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়েছে। বর্তমানে এসব মামলা তার সংসদ সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে আইনগত বাধা নয় বলে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি দাবি করেছেন, তিনি দ্বৈত নাগরিকত্ব বহন করেন না এবং সংবিধানের ৬৬(২) অনুচ্ছেদ ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ অনুযায়ী সংসদ সদস্য হওয়ার কোনো অযোগ্যতা তার নেই।
এআরএস

