২.৫ মাস পর আন্তঃব্যাংক বাজারে ডলার ১২২ টাকা ছাড়াল
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ২০:২৫
দেড় মাসেরও বেশি সময় পর আবারও টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়েছে আন্তঃব্যাংক বাজারে। চলতি সপ্তাহে প্রতি ডলারের দাম ১২২ টাকা ছাড়িয়ে গেছে, যা শেষবার দেখা গিয়েছিল গত ৬ আগস্ট।
বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) আন্তঃব্যাংক বাজারে প্রতি ডলার সর্বোচ্চ ১২২ টাকা ২৫ পয়সায় বিক্রি হয়েছে, যা আগের দিন ছিল ১২২ টাকা।
এর আগে গত ৬ আগস্ট প্রতি ডলারের দাম উঠেছিল ১২২ টাকা ৫০ পয়সায়। বিবি তথ্যমতে, আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের গড় মূল্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২২ টাকা ০৬ পয়সা, যা আগের দিনের ১২১ টাকা ৯৫ পয়সা থেকে বেশি।
একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধান নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন তুলনামূলক বেশি দামে ডলার কিনছে, ফলে বাজারদরও উপরের দিকে যাচ্ছে।’
২০২০-২১ অর্থবছরের তুলনায় ডলারের দাম এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৩ শতাংশ বেড়েছে। তবে চলতি বছরের জুন শেষে তুলনায় সেপ্টেম্বর শেষে ডলারের দর সামান্য ০.৮ শতাংশ কমেছিল। অক্টোবরের ২০ তারিখ পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের গড় মূল্য ১২১ টাকা ৮০ পয়সার আশেপাশে ছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ব্যাংকগুলো থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২.১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে।
ব্যাংক খাতের এক কর্মকর্তা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমদানি এলসি (এলসি) খোলার পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে, যার ফলে ডলারের চাহিদা ও বাজারদর দুটোই ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
বিবির তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে আমদানি ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১০.৮ বিলিয়ন ডলার। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯.৭৯ শতাংশ বেশি।
পূবালী ব্যাংক পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সাম্প্রতিক আমদানি প্রদানের চাপের কারণে ডলারের দর সামান্য বেড়েছে, তবে এটি অস্বাভাবিক নয়। বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ এখনো পর্যাপ্ত আছে।’
অন্যদিকে, চট্টগ্রামভিত্তিক এক শীর্ষ আমদানিনির্ভর শিল্পগোষ্ঠীর এক কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, প্রকৃতপক্ষে ডলারের দর বাড়ার মতো পরিস্থিতি নেই। তবে ব্যাংকগুলো নিজেদের মুনাফা বাড়াতে বছরের শেষ প্রান্তিকে দাম বাড়িয়ে দেয়।
উল্লেখ্য, গত মে মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারভিত্তিক বিনিময় হার ব্যবস্থা চালু করে। সে সময় আশঙ্কা করা হয়েছিল, এতে ডলারের দাম হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে। তবে সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত বিনিময় হার তুলনামূলক স্থিতিশীলই ছিল।
এএইচএস/এমবি


