Logo

অর্থনীতি

নতুন ইমারত নির্মাণ বিধিমালা জারি হলেই কার্যকর বাড়তি ফি

Icon

নির্মাণ ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৭

নতুন ইমারত নির্মাণ বিধিমালা জারি হলেই কার্যকর বাড়তি ফি

রাজধানীতে ব্যক্তিপর্যায়ের বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্প ও বাণিজ্যিক ভবনের নির্মাণ ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে পারে। কারণ, জমির ব্যবহার, নকশা ও ইমারত নির্মাণ অনুমোদন ফি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। শিগগিরই ঢাকার ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-২০২৫ প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বাড়তি ফি কার্যকর হতে পারে।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও আবাসন ব্যবসায়ীরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা বলেন, জমির ব্যবহার ও ইমারত নির্মাণ ফি কয়েক গুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে। 

তাতে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের নির্মাণ ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাবে। এমনকি শিল্পকারখানার নির্মাণ ব্যয়ও বেড়ে যাবে। এতে সরকারের রাজস্ব বাড়লেও বেসরকারি খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে। জানা যায়, ইমারত নির্মাণের নকশা অনুমোদন, সময় বাড়ানো ও ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্রের ফি আগে ছিল ১ হাজার টাকা। এখন সেটি বাড়িয়ে ৫ হাজার টাকা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ব্লকভিত্তিক আবাসিক ইউনিট নির্মাণ আবেদনের ক্ষেত্রে প্রতি কাঠায় নতুন করে ৫ হাজার টাকা ফি আরোপ হতে পারে, যা এত দিন ছিল না।

এ ছাড়া আবাসিক ভবন নির্মাণের অনুমোদন নিতে প্রতি বর্গমিটারে ৫০ টাকা ফি দিতে হবে। বাণিজ্যিক ও শিল্পকারখানার ক্ষেত্রে প্রতি বর্গমিটারে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ফি হতে পারে। মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডার মতো ধর্মীয় উপাসনালয়ের ক্ষেত্রে ফি লাগবে না। তবে এসব উপাসনালয়ের কোনো অংশ অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না।

বর্তমানে আবাসিক ভবনের সব তলার মোট মেঝে এলাকা (ফ্লোর এরিয়া) অনুযায়ী ১৬টি স্তরে ফি নির্ধারণ করা আছে। যেমন কোনো ভবনে মোট ৩ হাজার মেঝে এলাকা থাকলে বর্তমানে ইমারত নির্মাণ অনুমোদন ফি দিতে হয় ২৬ হাজার টাকা। 

তবে নতুন বিধিমালা কার্যকর হলে সেটি বেড়ে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা হতে পারে। তার মানে ব্যয় বাড়বে ১ লাখ ২৪ হাজার টাকা।

এ ক্ষেত্রে ভবনের মোট মেঝে এলাকা যত বাড়বে, ব্যয়ও তত বাড়বে। যেমন কোনো ভবনে মোট ১০ হাজার বর্গমিটার মেঝে এলাকা থাকলে এখন ফি দিতে হয় ৮৩ হাজার টাকা। সেই ফি বেড়ে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তাতে খরচ বাড়বে ৪ লাখ ১৭ হাজার টাকা। আবার কোনো ভবনে মোট ৩০ হাজার বর্গমিটার মেঝে এলাকা থাকলে এখন ফি দিতে হয় ২ লাখ ৭ হাজার টাকা। সেই ফি বেড়ে ১৫ লাখ টাকা হতে পারে। সেটি হলে খরচ বাড়বে ১২ লাখ ৯৩ হাজার টাকা।

সূত্র জানায়, গত মাসের তৃতীয় সপ্তাহে নতুন ফির বিষয়ে সম্মতি চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি পাঠায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। চিঠিতে রাজউকের সুপারিশ অনুযায়ী সংশোধিত ফি অনুমোদনের অনুরোধ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, ইমারত নির্মাণ অনুমোদন নিতে প্রতি বর্গমিটারে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ফি দিতে হলে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণে নতুন করে খরচ বাড়বে। 

এতে ফ্ল্যাট ও বাণিজ্যিক ভবনের জায়গার দাম বাড়তে পারে, যা সাধারণ ক্রেতাদের জন্য অসুবিধাজনক। আশা করছি সরকার বিষয়টি বিবেচনা নিয়ে ফি হাতের নাগালে রাখবে। 

এদিকে রাজধানীর নতুন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ড্যাপ সংশোধনের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকার ভবনের উচ্চতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে ড্যাপ রিভিউ-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি। 

ড্যাপ সংশোধনের বিষয়টিও নতুন বিধিমালায় থাকবে বলে জানিয়েছেন রাজউক কর্মকর্তারা। এদিকে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব)একটি  প্রতিনিধিদল স¤প্রতি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ফেরদৌসী বেগমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আবাসন খাতের বর্তমান চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে বলেন, ঋণের উচ্চ সুদহার এবং বিভিন্ন নীতিগত জটিলতার কারণে এই খাতটি চাপের মুখে আছে। দ্রুত সেল পারমিশন প্রজ্ঞাপন কার্যকর করা, রিহ্যাব ফেয়ারসহ খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কার্যক্রমে সরকারি সহায়তা ও সমন্বয় জরুরি বলে তারা মত দেন।

আইএইচ/ 


প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

নির্মাণ কথা

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর