দেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে সবচেয়ে নিষ্ক্রিয় একটি বছর অতিবাহিত হতে যাচ্ছে। আর কয়েকদিন পরই চলতি বছর (২০২৫ সাল) শেষ হতে চললেও বছরজুড়ে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের থেকে একটি টাকাও আসেনি পুঁজিবাজারে। এমনকি বছরের বাকি দিনগুলোতে নতুন অর্থের জোগান আসার কোনো সম্ভাবনাও নেই। কেননা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে কোনো কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদনও জমা পড়েনি। আর এই সময়ের মধ্যে কেউ আবেদন করলেও তা অনুমোদন ও বিনিয়োগের প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। অথচ, বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বিবেচনায় বাজার অংশীদারত্বে ৮০ শতাংশই ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী।
শুধু আইপিও নয়, বছরজুড়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) কোনো কোম্পানিও কোয়ালিফায়েড ইনভেস্টর অফারের (কিউআইও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে আগ্রহ দেখায়নি। এ ছাড়া, বছরজুড়ে পুঁজিবাজারের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, উচ্চ সম্পদশালী ব্যক্তি বিনিয়োগকারী, স্থানীয় ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বীমা কোম্পানির বিনিয়োগের সুযোগও ছিল খুবই নগণ্য। কেননা, বছরটিতে করপোরেট বন্ড ও মিউচুয়াল ফান্ডের অনুমোদন মিলেছে হাতে গোনা অল্প কয়েকটি।
সর্ব সাধারণের বিনিয়োগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে পরিচিত আইপিও বন্ধ থাকায় বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে অস্থিরতা বিরাজমান ছিল। সূচক ও লেনদেন তলানিতে নামার পাশাপশি বিনিয়োগকারীদের বাজার ছেড়ে যাওয়ার সংখ্যা ছিল উল্লেখযোগ্য হারে। বিনিয়োগকারীদের ধরে রাখতে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও হিসাব) রক্ষণাবেক্ষণের ফি বা মাশুল এক-তৃতীয়াংশে নামানো হলেও বাজার ছেড়ে যাওয়ার ট্রেন থামানো যায়নি। শুধু বিনিয়োগকারী নয়, বছরটিতে পুঁজিবাজারের মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে। ব্রোকারেজ হাউসগুলোর মূল অফিসের পাশাপাশি শাখা অফিস মিলিয়ে শতাধিক সিকিউরিটিস লেনদেনের অফিস বন্ধ হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়, ২০২৫ সালে পুঁজিবাজারে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা দীর্ঘমেয়াদে এ বাজারে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হলো- বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের নিশ্চয়তা না দিয়ে বাজার থেকে পাঁচটি শরিয়াহ ব্যাংকের তালিকাচ্যুত। এ ছাড়া, তালিকাভুক্ত আরও আটটি ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) বন্ধের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেগুলোর শেয়ার এখনো বাজারে লেনদেন হচ্ছে। টাকার শেয়ার পয়সায় কেনার সুযোগ পেয়ে অনেকে না বুঝে এখনো কিনছেন। টাকার শেয়ার পয়সায় লেনদেন করতে স্টক এক্সচেঞ্জকে বিশেষ ব্যবস্থাও চালু করতে হয়েছে এ বছর।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে নানা ধরনের সংস্কারের কথা বলা হলেও বস্তুতপক্ষে সংস্কার দেখা গেছে কেবল মার্জিন ঋণ বিধিমালা ও মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা প্রণয়নে। এর মধ্যে মার্জিন ঋণ বিধিমালার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিটও করা হয়েছে। আর মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালায় মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডকে বিলুপ্ত করার মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যার সমালোচনাও কম নয়।
দেড় বছর ধরে পুঁজির জোগান নেই: পুঁজিবাজারে সর্বশেষ পুঁজি সংগ্রহ করতে আইপিও নিয়ে হাজির হয়েছিল টেকনো ড্রাগস লিমিটেড, গত বছরের প্রথমার্ধেই কোম্পানিটি বাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা তুলে নেয়। এরপর পুঁজিবাজারে আর কোনো কোম্পানির আইপিও অনুমোদন হয়নি। ওই বছর কেবল একটি আইপিও বাজারে এসেছিল। তবে বছরটিতে আরও একটি কিউআইও অনুমোদন হয়েছিল। স্বল্প মূলধনের কোম্পানি ক্রাফটসম্যান ফুটওয়ার অ্যান্ড একসেসরিজ লিমিটেড কিউআইও প্রস্তাবের মাধ্যমে পাঁচ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করেছিল।
তবে, দুঃখজনক হলেও চলতি বছরে একটিও আইপিও কিংবা কিউআইও প্রস্তাবের অনুমোদন দিতে পারেনি বিএসইসি। কয়েকটি প্রস্তাব জমা পড়লেও তা বাতিল করে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। আর এখন আইপিও নীতিমালা সংস্কারের কথা বলে কোম্পানিগুলোর থেকে প্রস্তাব আহ্বানও বন্ধ রয়েছে। সংস্থার কাছে বর্তমানে একটিও প্রস্তাব জমা নেই। ফলে বছরের বাকি দিনগুলোতে কোনো আইপিও কিংবা কিউআইও অনুমোদনের সুযোগ নেই।
বন্ড ও ফান্ডের অনুমোদনও কমেছে: গত বছর বিএসইসির অনুমোদন সাপেক্ষে পুঁজিবাজার থেকে বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে ১১টি প্রতিষ্ঠান ১৬ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা উত্তোলন করেছিল। এর মধ্যে ছয়টি ব্যাংক ও পাঁচটি উৎপাদন খাতের কোম্পানি ছিল। চলতি বছরে শুধুমাত্র ছয়টি ব্যাংককে চার হাজার ৪০০ কোটি টাকা সংগ্রহের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, চলতি বছরে মাত্র একটি বে মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার অর্থ সংগ্রহের সীমা নির্ধারণ করা হয় ২৫ কোটি টাকা। গত বছরে চারটি ফান্ড ইস্যুর মাধ্যমে ১২৫ কোটি টাকা উত্তোলণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।
বন্ড ও ফান্ডের অনুমোদন কমায় চলতি বছরে পুঁজিবাজারের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, উচ্চ সম্পদশালী ব্যক্তি বিনিয়োগকারী, স্থানীয় ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বিমা কোম্পানির বিনিয়োগের সুযোগ কমেছে। তবে, চলতি বছরে রাইট শেয়ারের অনুমোদন বাড়িয়েছে বিএসইসি। বছরটিতে দুটি কোম্পানির ৩২৮ কোটি টাকার রাইট শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আগের বছরে মাত্র ৯৩ কোটি টাকার রাইট শেয়ার ইস্যুর প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছিল।
সূচক ও লেনদেন তলনিতে নেমেছে: চলতি বছরের শুরু থেকে গত ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৯২ পয়েন্ট। সূচকটি এই সময়ের মধ্যে পাঁচ হাজার ২১৮ পয়েন্ট থেকে চার হাজার ৮২৬ পয়েন্টে নেমেছে। অবশ্য, ২০২৪ সালে সূচকটি এক হাজার ৩০ পয়েন্ট কমেছিল। এ ছাড়া, চলতি বছরের ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক্সচেঞ্জটির শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১৬৭ পয়েন্ট কমে ৯৯৯ পয়েন্টে এবং বাছাইকৃত শেয়ার নিয়ে গঠিত ডিএস ৩০ সূচক ৮৮ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৮৫৪ পয়েন্টে নেমেছে। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বছরের শুরু থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯১২ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৫৬১ পয়েন্টে নেমেছে।
এদিকে, চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ডিএসইতে গড়ে প্রতিদিন লেনদেন হয়েছে মাত্র ৪৪০ কোটি টাকা। গত বছরে এক্সচেঞ্জটিতে প্রতিদিন গড়ে ৬৩১ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে ডিএসইর গড় লেনদেন কমেছে ১৯১ কোটি টাকা। আর সিএসইতে গত নভেম্বর পর্যন্ত চলতি বছরে প্রতিদিন গড়ে ১৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। আগের বছরে গড় লেনদেন হয়েছিল ২৯ কোটি টাকা।
চলতি বছরে নিষ্ক্রিয় ৬৬ হাজার বিনিয়োগকারী: ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে গত ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুঁজিবাজারে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৬৫ হাজার ৯৬২টি বিও) হিসাবধারী নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে সরাসরি বিও হিসাব বন্ধ হওয়ায় বাজার ছেড়েছেন ৪৩ হাজার ২৮৩ জন বিনিয়োগকারী। এ ছাড়া ২২ হাজার ৬৭৯ জন বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব শেয়ার শূন্য হয়েছে আলোচিত সময়ে।
সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্য অনুযায়ী, গত ১৮ ডিসেম্বর শেষে পুঁজিবাজারে মোট বিও হিসাবের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৩৯ হাজার ১৬৯টি। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর যা ছিল ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৪৫২টি। আর গত ১৮ নভেম্বর শেষে শেয়ারশূন্য বিও হিসাবের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৬৬ হাজার ৬৫৩টি। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে যা ছিল তিন লাখ ৪৩ হাজার ৯৭৪টি।
বিও রক্ষণাবেক্ষণ ফি কমিয়েও বিনিয়োগকারীদের রাখা যাচ্ছে না: চলতি অর্থবছর থেকে বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ফি বা মাশুল এক-তৃতীয়াংশে নামানো হয়েছে। এতদিন বিনিয়োগকারীদের থেকে প্রতিবছরে বিও হিসাব রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৪৫০ টাকা হারে মাশুল নেওয়া হলেও চলতি অর্থবছর থেকে তা মাত্র ১৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ, প্রতি বিও হিসাবের জন্য বিনিয়োগকারীদের রক্ষণাবেক্ষণ মাশুল ৩০০ টাকা কমানো হয়েছে। এই বিও হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ফি কমিয়েও বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারে ছেড়ে যাওয়ার ট্রেন বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।
বন্ধ হচ্ছে ব্রোকারেজ হাউজের শাখা ও মূল অফিস: বিও হিসাবধারীদের লেনদেন সুবিধা দিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে নিবন্ধিত ট্রেক সনদ নিয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যভুক্ত হয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে ব্রোকারেজ হাউজগুলো। এখন পর্যন্ত স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেক হোল্ডার হিসেবে ব্যবসা শুরু করেছে ৩০৭টি ব্রোকারেজ হাউস। এর মধ্যে গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি থাকাসহ বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে পাঁচটি ব্রোকারেজ হাউসের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। সচল থাকা বাকি ৩০২টি ব্রোকারেজ হাউসের মূল অফিস ও শাখা অফিসের সংখ্যা প্রায় এক হাজার ৫০০টি। এর মধ্যে অনেকেই বাজারে লেনদেন কম থাকায় লোকসান এড়াতে শাখা অফিস বন্ধ রাখার পাশাপাশি মূল অফিসের কার্যক্রমও কৌশলে বন্ধ রাখছে।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, ব্রোকারেজ হাউসগুলোর মূল অফিস ও শাখা অফিসের অধিকাংশই রাজধানী ঢাকা ও বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রাম অঞ্চলে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গত সচল থাকা ব্রোকারেজ হাউসগুলোর মূল অফিস ও শাখা অফিস বন্ধ হয়েছে অন্তত ১১৭টি। বাজারে লেনদেন কম হওয়া, সনদ নবায়ন না হওয়া এবং অফিস সংস্কারের কথা জানিয়ে বন্ধ রাখা হচ্ছে এসব হাউস। এর মধ্যে বিকল্প লেনদেন অফিস না থাকায় কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসের হিসাবধারী এখন শেয়ার লেনদেনও করতে পারছে না।
পাঁচ ব্যাংক তালিকাচ্যুত: চলতি বছরে পুঁজিবাজার থেকে শরিয়াহভিত্তিক পাঁচটি ব্যাংক তালিকাচ্যুত করা হয়েছে। অথচ ওই ব্যাংকগুলোতে উদ্যোক্তা-পরিচালক এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর বাইরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বড় অংশের মালিকানা। তালিকাচ্যুত পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করে এক ব্যাংক গঠনের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর আমানতকারীদের অর্থের পূর্ণ নিরাপত্তা দিয়েছে সরকার। কিন্তু, পুঁজিবাজারের মাধ্যমে ওই পাঁচটি ব্যাংকে বিনিয়োগ করা সাধারণ বিনিয়োগকারীদে অর্থের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ওই পাঁচটি ব্যাংকের বিনিয়োগের বিপরীতে কিছুই না পায়, তাহলে সেটি পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সরকার যেহেতু আমানতকারীদের অর্থের পূর্ণ নিরাপত্তা দিয়েছে, সেহেতু অন্য শ্রেণির কথা বাদ দিলেও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
নতুন ‘টিক সাইজ’ চালু: চলতি বছরে নয়টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়ন বা বন্ধের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত রয়েছে আটটি। ওই আটটি প্রতিষ্ঠানে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ শেয়ারের মালিকানা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের দখলে রয়েছে। স¤প্রতি প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এগুলোর অবসায়নের আলোচনা চলছে বছরের শুরু থেকেই। ফলে শেয়ারগুলোর দাম কমতে কমতে টাকার শেয়ার পয়সায় নেমে যায়।
পুঁজিবাজারের ইতিহাসে এবছরই কোনো শেয়ার এক টাকার নিচে নেমেছে। এতে লেনদেন প্রক্রিয়ায় বিঘœও ঘটেছে কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে। কেননা, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী এক টাকার উপরের সব ধরনের ইক্যুইটি সিকিউরিটিজের ‘টিক সাইজ’ ১০ পয়সা নির্ধারিত রয়েছে। অন্যদিকে, সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন সীমা রয়েছে ১০ শতাংশ। ৯০ পয়সা দরের শেয়ারে ১০ শতাংশ পরিবর্তন মানে নয় পয়সা। কিন্তু ‘টিক সাইজ’ যেহেতু ১০ পয়সা, তাই নয় পয়সা বাড়া বা কমার সুযোগ ছিল না। তা ছাড়া, ১০ পয়সা বাড়িয়ে শেয়ারদর এক টাকা বা ১০ পয়সা কমিয়ে ৮০ পয়সা করাও সম্ভব নয়- তাহলে সার্কিট ব্রেকারের লিমিট ভাঙবে, নিয়মের লঙ্ঘন হবে। ফলে স্টক এক্সচেঞ্জ এক টাকার নিচে লেনদেন হওয়া শেয়ারের জন্য নতু ‘টিক সাইজ’ নির্ধারণ করেছে। এখন এক টাকার নিচে নেমে যাওয়া শেয়ারের লেনদেন ৮৯, ৮৮, ৮৭, ৮৬, ৮৫ পয়সা- এ ধরনের সূ² দরেও অর্ডার দেওয়া যাচ্ছে।
বিকেপি/এমবি

