Logo

আন্তর্জাতিক

গাজায় বন্দী মার্কিন-ইসরায়েলি এডানের মুক্তি আজই : হামাস

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৫, ১৩:৫৮

গাজায় বন্দী মার্কিন-ইসরায়েলি এডানের মুক্তি আজই : হামাস

এডান আলেকজান্ডারকে সোমবার মুক্তি দিতে চলেছে হামাস /ছবি : সংগৃহীত

মার্কিন-ইসরায়েলি সেনা এডান আলেকজান্ডারকে সোমবার মুক্তি দিতে চলেছে হামাস। আগের রাতে এই ঘোষণা দিয়েছে তারা। জানানো হয়েছে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবাইদাহ বলেছেন, আজ মার্কিন-ইসরায়েলি বন্দী এডান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেওয়া হবে।

ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, এডান আলেকজান্ডারের সম্ভাব্য মুক্তিকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনী ও হাসপাতালগুলো পূর্ববর্তী বন্দিমুক্তির মতো প্রস্তুতি নিচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা সীমান্তে নজরদারি ও অন্যান্য উদ্দেশ্যে ইসরায়েলি বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। গাজায় দায়িত্বরত সেনাদের জানানো হয়েছে, সোমবার সকাল ৯টা (গ্রিনিচ মান সময়) থেকে একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।

তবে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর দফতর স্পষ্ট করেছে, আলেকজান্ডারের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েল কোনো যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়নি। বরং তাকে নেওয়ার জন্য একটি ‘নিরাপদ করিডোর’ দেওয়া হবে।

গত জানুয়ারিতে যে পদ্ধতিতে মুক্তিপ্রাপ্তদের হস্তান্তর হয়েছিল, এবারও একই নিয়মে রেড ক্রসের মাধ্যমে তাকে গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনীর কাছে তুলে দেওয়া হবে। সেখানে একজন সেনা চিকিৎসক প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন। এরপর রিইম ঘাঁটিতে পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তাকে হেলিকপ্টারে করে তেল আবিবের ইচিলোভ হাসপাতালে নেওয়া হবে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল, উভয় দেশই এই সেনার নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার অঙ্গীকার রয়েছে। আলেকজান্ডার হলেন সেই ৫৮ জন বন্দির একজন, যাদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে একে ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সদিচ্ছার প্রকাশ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আশা করছি, এই পদক্ষেপ যুদ্ধের অবসান ও বন্দিমুক্তির পথে চূড়ান্ত অগ্রগতি এনে দেবে।’

নেতানিয়াহুর অফিস জানায়, হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চলাকালেই তারা বন্দিমুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবিত কাঠামো অনুযায়ী আলোচনা হবে, যা ইসরায়েল ইতোমধ্যেই মেনে নিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জিম্মি বিষয়ক দূত অ্যাডাম বোহেলারও আলেকজান্ডারের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে ইসরায়েল যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘এটা একটি ইতিবাচক অগ্রগতি।’ তবে তিনি গাজায় নিহত চার মার্কিন নাগরিকের মরদেহ ফেরত চেয়ে আহ্বান জানান।

হামাস জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতি, বন্দি বিনিময় ও গাজায় স্বাধীন প্রশাসনের প্রতিষ্ঠা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত।

এডান আলেকজান্ডার ছিলেন গাজা সীমান্তের নীরিম কিবুতজের নিকটে ‘হোয়াইট হাউস’ ফাঁড়িতে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় অপহৃত হয়েছিলেন। গত নভেম্বরের বন্দি বিনিময়ের সময় মুক্তিপ্রাপ্তরা জানান, আলেকজান্ডার বন্দিদশায় সহিংসতা, জিজ্ঞাসাবাদ ও অপুষ্টির শিকার হন। বন্দিদশায় তিনি ইংরেজিতে কথা বলে থাই শ্রমিকদের মুক্তির অনুরোধ জানিয়েছিলেন, যেহেতু তারা সংঘাতে জড়িত নয়।

তিনি ইসরায়েলে জন্মগ্রহণ করলেও ছোটবেলায় পরিবার নিয়ে আমেরিকার মেরিল্যান্ডে যান। পরবর্তীতে ‘টজাবার’ কর্মসূচির মাধ্যমে একাই ইসরায়েল ফিরে এসে গোলানি ব্রিগেডে যোগ দেন।

তার বন্দিদশার দুটি ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস —প্রথমটি নভেম্বর ২০২৪ সালের। যেখানে তিনি জানান যে ৪২০ দিন ধরে বন্দি রয়েছেন দ্বিতীয় ভিডিওটি প্রকাশ হয় পাসওভারের আগে এপ্রিল মাসে। সেখানে আলেকজান্ডার বলেন, প্রতিদিন তারা ইসরায়েলি হামলার শব্দ শুনছেন এবং আশাহত হচ্ছেন।

বন্দি পরিবার ফোরাম এক বিবৃতিতে জানায়, ‘এটা একটি জরুরি ডাক। এখনই সময় একটি কার্যকর চুক্তি করার এবং সকল বন্দির মুক্তি ও যুদ্ধের অবসান ঘটানোর।’

এদিকে, অপহৃত নাগরিক মাতান জানগাউকের মা এনায়ভ জানান, ‘মাতান ও এডান একটি অন্ধকার সুড়ঙ্গে বন্দি। যদি একা পড়ে যায়, তবে আমার সন্তানের মৃত্যুর জন্য নেতানিয়াহুই দায়ী হবেন।’

ওএফ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর