Logo

আন্তর্জাতিক

শতবছরের ঐতিহ্যের অবসান : বন্ধ হচ্ছে কলকাতা স্টক এক্সচেঞ্জ

Icon

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:৪৮

শতবছরের ঐতিহ্যের অবসান : বন্ধ হচ্ছে কলকাতা স্টক এক্সচেঞ্জ

ছবি : সংগৃহীত

ভারতের প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহী শেয়ারবাজারগুলোর একটি, কলকাতা স্টক এক্সচেঞ্জ (CSE), এক শতকেরও বেশি সময় পর আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রমের ইতি টানতে যাচ্ছে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা আইনি জটিলতার অবসান ঘটিয়ে এক্সচেঞ্জটি এই দীপাবলিকে বিদায়ের উৎসবে পরিণত করছে।

সোমবার (২০ অক্টোবর) ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ২০১৩ সালে ভারতের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি (SEBI) নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে সিএসইর শেয়ার লেনদেন স্থগিত করে। পরবর্তীতে দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বোর্ড মামলা প্রত্যাহার করে স্বেচ্ছা প্রস্থান প্রক্রিয়া শুরু করে।

চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল এক জরুরি সাধারণ সভায় শেয়ারহোল্ডাররা প্রস্থান অনুমোদন দেন। এরপর সিএসই সেবির কাছে আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের আবেদন জমা দেয়। বর্তমানে সম্পদের মূল্যায়ন চলছে, যার দায়িত্ব পেয়েছে রাজবংশী অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস।

সিএসই চেয়ারম্যান দীপঙ্কর বসু জানিয়েছেন, “মূল্যায়ন শেষ হলে এক্সচেঞ্জটি হোল্ডিং কোম্পানি হিসেবে কাজ চালাবে এবং এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিএসই ক্যাপিটাল মার্কেটস প্রাইভেট লিমিটেড (CCMPL) বিএসই ও এনএসইতে ব্রোকারেজ কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।”

১৯০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই এক্সচেঞ্জ একসময় বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের (BSE) প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল। ছোট ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেনে সিএসই ছিল অগ্রণী। তবে ২০০০ সালের কেতন পারেখ কেলেঙ্কারির পর বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে গেলে এর পতন শুরু হয়।

প্রবীণ ব্রোকার সিদ্ধার্থ থিরানি স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে মা লক্ষ্মীর পূজা দিয়ে আমরা ট্রেডিং শুরু করতাম। ২০১৩ সালে সেবি লেনদেন বন্ধ করলে সব থেমে যায়। এবারের দীপাবলি যেন সেই ঐতিহ্যের শেষ আলোকচ্ছটা।’

এক্সচেঞ্জটি কর্মীদের জন্য ২০ দশমিক ৯৫ কোটি রুপির স্বেচ্ছা অবসর প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, যা কার্যকর হলে বছরে প্রায় ১০ কোটি রুপি সাশ্রয় হবে। প্রায় সব কর্মীই এ সুবিধায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রতিবেদনে চেয়ারম্যান বসু বলেন, সিএসই ভারতের মূলধন বাজারে একসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।’ বর্তমানে এক্সচেঞ্জটিতে ১ হাজার ৭৪৯টি তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও ৬৫০ জন নিবন্ধিত সদস্য রয়েছে।

এ ছাড়া, সিএসইর তিন একর জমি সৃজন গ্রুপের কাছে ২৫৩ কোটি রুপিতে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা সেবির অনুমোদনের পর কার্যকর হবে।

দীর্ঘ ঐতিহ্যের ধারক এই প্রতিষ্ঠানটির জন্য এবারের দীপাবলি তাই কেবল আলোর উৎসব নয়, বরং এক যুগের অবসান। আগামী সপ্তাহে এক্সচেঞ্জ চত্বরে অনুষ্ঠিত হবে প্রতীকী পূজা ও বিদায় অনুষ্ঠান— বিদায় জানানো হবে এক সময়ের গৌরবময় ট্রেডিং ফ্লোরকে।

এএইচকে/এমএইচএস 

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর