বাংলাদেশে সবুজ প্রযুক্তি ও পাটশিল্পে বড় বিনিয়োগ করতে চায় চীন
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১২
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক অব চায়নার ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াং দংনিং। ছবি : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
বাংলাদেশের সবুজ প্রযুক্তি, পাট, বস্ত্র ও ওষুধশিল্পে বড় আকারের বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীনা বিনিয়োগকারীরা। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষিত উৎপাদন খাতের রূপান্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এই আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠককালে এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক অব চায়নার (এক্সিম ব্যাংক) ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াং দোংনিং এ আগ্রহের কথা জানান।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চীনের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ফাইন্যান্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটির প্রেসিডেন্ট ড. মা জুন। তারা জানান, বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন সহযোগিতার পাশাপাশি এখন চীন সরাসরি উৎপাদন ও সবুজ প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।
ইয়াং দোংনিং বলেন, রুফটপ সোলার, সবুজ জ্বালানি এবং পাটকে কেন্দ্র করে জ্বালানি, বায়োসার ও প্লাস্টিকের বিকল্প পণ্য উৎপাদনের মতো বড় প্রকল্পে চীনের গভীর আগ্রহ রয়েছে। তিনি জানান, এসব উৎপাদনমুখী প্রকল্পে এক্সিম ব্যাংকও অর্থায়ন করতে আগ্রহী।
ড. মা জুন জানান, পাটশিল্প চীনা বিনিয়োগকারীদের কাছে বিশেষভাবে আকর্ষণীয় খাত। তারা স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে চায়। বছরে ১০ লাখ টন পর্যন্ত পাট ব্যবহার করে সবুজ জ্বালানি ও পরিবেশবান্ধব শিল্পপণ্য তৈরির সক্ষমতার কথাও তুলে ধরেন তিনি। তার মতে, পাটভিত্তিক যৌথ উদ্যোগে চীনা অর্থায়নের বড় সুযোগ রয়েছে।
চীনের আগ্রহকে স্বাগত জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বলেন, চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে বাংলাদেশকে উৎপাদনশীল পণ্য রপ্তানির একটি শক্তিশালী হাবে উন্নীত করা সম্ভব। তিনি ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা খাতকে চীনা বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করেন। পাশাপাশি রুফটপ সোলারসহ সবুজ জ্বালানিতে বিশ্বের নেতৃত্বদানকারী দেশ হিসেবে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, দেশের বিপুল তরুণ কর্মশক্তি এবং বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো যৌথ বিনিয়োগে পুনরায় সচল করার সুযোগ তৈরি করেছে। তিনি চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে কারখানা স্থাপনের আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, ওই অঞ্চলের সমুদ্রবন্দর ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারের নিকটতা রপ্তানির বড় সম্ভাবনা তৈরি করবে।
এ সময় ইয়াং দোংনিং জানান, এআই এবং ই-কমার্স খাতেও চীন বিনিয়োগের সুযোগ বিবেচনা করছে— যে দুই ক্ষেত্রে দেশটি ইতোমধ্যে বৈশ্বিক নেতৃত্ব ধরে রেখেছে।
বৈঠকের শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা হংকংয়ের আবাসিক ভবনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচএস

