খালেদা জিয়ার জানাজা-দাফন : একযোগে মাঠে নামছে রাষ্ট্রের সব সংস্থা
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:০৬
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকাজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বলয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রের সব নিরাপত্তা সংস্থাকে একযোগে মাঠে নামানো হয়েছে। এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা পর্যন্ত মরদেহ বহনের প্রতিটি ধাপেই নেওয়া হয়েছে বহুমাত্রিক ও স্তরভিত্তিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিশেষ সভায় জানাজা ও দাফনকে ঘিরে সম্ভাব্য সব ঝুঁকি মূল্যায়ন করে চূড়ান্ত নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সভায় একটি সূত্র জানায়, এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে মরদেহ বের করার মুহূর্ত থেকেই বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ে থাকবে লাশবাহী গাড়ি। নির্ধারিত রুটে থাকবে পুলিশ, র্যাব, এসবি, ডিএমপি, এসএসএফ, এনএসআই, ডিজিএফআই, বিজিবি, আনসার ও ভিডিপির সমন্বিত উপস্থিতি। রাস্তাজুড়ে বসানো হবে অতিরিক্ত চেকপোস্ট, মোতায়েন থাকবে সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সদস্যরা এবং সার্বক্ষণিক নজরদারি চালানো হবে সিসিটিভি ও গোয়েন্দা প্রযুক্তির মাধ্যমে।
বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে। জানাজাকে কেন্দ্র করে সংসদ ভবন এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা অঞ্চল হিসেবে। প্রবেশপথে থাকবে একাধিক স্তরের তল্লাশি, মেটাল ডিটেক্টর ও পরিচয় যাচাই ব্যবস্থা। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকবে বিশেষ রিজার্ভ ফোর্স।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, জানাজা ও দাফনসহ সব কার্যক্রম রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন করা হবে। জানাজার নামাজ সকল গণমাধ্যম প্রচার করতে পারলেও দাফন কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করবে কেবল বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। পুরো প্রক্রিয়াজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা থাকবে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে।
বিএনপির চেয়ারপার্সনের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এ কে এম শামছুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মরদেহ বহনের সময় পুরো রাস্তায় বিএনপির নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা জানাবেন। এ সময় শৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দলীয় স্বেচ্ছাসেবকরাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করবে।
বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিএনপির পার্টি অফিস, জাতীয় সংসদ ভবন এবং দেশের বাইরে অবস্থিত সব বিদেশি মিশনে শোক বই খোলা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানকে ঘিরে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালিত হবে। যেকোনো গুজব, বিশৃঙ্খলা বা নাশকতার আশঙ্কা মোকাবেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দল (কুইক রেসপন্স টিম)। রাজধানীজুড়ে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।
রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেষ বিদায়কে ঘিরে নেওয়া এই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রাজধানীবাসীকে সহযোগিতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এনএমএম/এমবি

