Logo

নির্বাচিত

বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে

তীব্র গাড়ি সংকটে বাংলাদেশ পুলিশ

Icon

ডিজিটাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫২

তীব্র গাড়ি সংকটে বাংলাদেশ পুলিশ

বাংলাদেশের খবর
রাজনীতিকরা নিরাপত্তাহীন
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে, গোপালগঞ্জে ঘটে যাওয়া রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও চারজনের প্রাণহানির পর, তোলপাড় চলছে দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অঙ্গনে। সংঘটিত ভয়াবহ হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে গভীর প্রশ্ন উঠেছে।

ঘটনার একদিন পর, গতকাল বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিজেই গোয়েন্দা ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছেন, যা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতা ও সমন্বয় নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা হুমকির তথ্য থাকার পরও কেন এই নারকীয় পরিস্থিতি এড়ানো গেল না, সেই ব্যর্থতার দায় কার-এ নিয়েই চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। অন্যদিকে, এনসিপি নেতারা এ ঘটনার বিচার না হলে গোপালগঞ্জে ফের লংমার্চের মতো কঠোর কর্মসূচির হুমকি দিয়েছেন।

সরকারের পদক্ষেপ
গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি নিয়ে যখন দেশজুড়ে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা, তখন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি কার্যত গোয়েন্দা ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে বলেন, গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য ছিল, কিন্তু সেখানকার পরিস্থিতি যে এত খারাপ হবে, সে তথ্য ছিল না। এই একটি বাক্যই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় প্রস্তুতির ঘাটতি কতটা মারাত্মক ছিল। তবে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, গোপালগঞ্জের ঘটনায় যারা অন্যায় করেছে, তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে, কাউকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

বণিক বার্তা
তীব্র গাড়ি সংকটে বাংলাদেশ পুলিশ
বণিক বার্তার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকালে গত বছরের জুলাই-আগস্টে পুড়িয়ে দেয়া হয় বেশকিছু থানা ও পুলিশের কয়েকশ যানবাহন। এতে দীর্ঘদিনের সে সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করে। পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, যানবাহনের অভাবে যথাযথ নাগরিক সেবা দেয়াই সম্ভব হচ্ছে না। ব্যাহত হচ্ছে থানা পুলিশের টহলসহ নিয়মিত কাজ।

এমনকি অপরাধের খবরে দ্রুত ঘটনাস্থলেও পৌঁছতে পারছে না লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি নিয়ে। পুলিশের অন্যান্য ইউনিটের কাজও ব্যাহত হচ্ছে প্রয়োজনীয় বাহন না থাকায়। এমন পরিস্থিতিতে প্রায় সাড়ে চার হাজার যানবাহন সংকট নিয়েই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে পুলিশ বাহিনীকে। এতে রেসপন্স টাইম বেশি লাগার পাশাপাশি মাঠপর্যায়ের কার্যক্রমও ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন বাহিনীর সদস্যরা। সংকট সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার দাবি বিশেষজ্ঞদের।

পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে বাহিনীতে ৪ হাজার ৪৪৭টি যানবাহনের ঘাটতি রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩ হাজার ৪৯৭টি মোটরসাইকেলের ঘাটতি। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পুলিশের প্যাট্রোল ডিউটিতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় এ বাহনটিই। ঘাটতি রয়েছে ডাবল কেবিন পিকআপেরও, যা দিয়ে টহল কার্যক্রমের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের জরুরি অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ ধরনের গাড়ির সংকট মোট ৫০৭টি।

মোটরসাইকেল ও ডাবল কেবিন পিকআপের পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীতে ঘাটতি রয়েছে সর্বমোট ৪৪৩টি এসইউভি (স্পোর্ট ইউটিলিটি ভেহিকল) বা জিপ গাড়িরও। এসইউভি বা জিপ শ্রেণীর গাড়িগুলো সাধারণত এএসপি থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ব্যবহার করে থাকেন, যারা মূলত জেলা বা উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা এবং অভিযানের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকেন।

মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা বলছেন, বিদ্যমান যানবাহন দিয়ে বর্তমানে থানাগুলোর রুটিন ডিউটি পালন করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও ডাবল কেবিন পিকআপ সংকটের কারণে প্যাট্রোল ডিউটি পরিচালনায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। মফস্বল এলাকায় কোথাও অপরাধ সংঘটিত হওয়ার খবর পেলে প্রথমে মোটরসাইকেল নিয়ে সহকারী উপপুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) এবং কনস্টেবল পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। এরপর পরিস্থিতি বিবেচনায় উপপুলিশ পরিদর্শক (এসআই) বা পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তা কনস্টেবল সঙ্গে নিয়ে ছুটে যান ঘটনাস্থলে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ডাবল কেবিন পিকআপ গাড়ি সংকটের কারণে অনেক ক্ষেত্রে জরুরি প্রয়োজন হলেও অভিযান পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না।

যুগান্তর
দিল্লি থেকে একাধিক অডিও বার্তা, হাসিনার নির্দেশেই হামলা
যুগান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ নেতাদের ওপর দফায় দফায় হামলা হয়েছে। দলটির ‘১৬ জুলাই: মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচি পণ্ড করতে বিভিন্ন স্থান থেকে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী দুই দিন আগে আশপাশের এলাকা থেকে গোপালগঞ্জ শহরে হাজার হাজার নেতাকর্মী জড়ো করে আওয়ামী লীগ। টার্গেট ছিল এনসিপিকে ঢুকতে দেওয়া হলেও তাদের জীবিত বের হতে দেওয়া হবে না। বিশেষ করে শীর্ষ নেতাদের হত্যা করা। 

এদিকে এ মিশন সফল করতে স্বয়ং গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত থেকে মোবাইল ফোনে গোপালগঞ্জে একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলেন। এনসিপির বিরুদ্ধে জনগণকে উসকে দিতে বেশকিছু অডিও বার্তাও পাঠান। এছাড়া পুরো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক সিনিয়র নেতা সমন্বয় করেন। এমনকি ভারতে পলাতক ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ছিলেন আরও এক ধাপ এগিয়ে। ফেসবুক লাইভে এসে তিনি সরাসরি হামলা চালানোর নির্দেশনা দেন।

যুগান্তরের হাতে থাকা এমন একটি অডিও বার্তায় শোনা যায়, শেখ হাসিনা নিষিদ্ধ ঘোষিত গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালকে বলেন, ‘ওরা (এনসিপি) নাকি গোপালগঞ্জে যাচ্ছে। টুঙ্গিপাড়ায় আমার বাবার কবর ভেঙে ফেলার ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে ৩২ নম্বরের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এবার টুঙ্গিপাড়ায় হামলা চালাবে। তোমরা বসে আছ কেন? যে যেভাবে পার প্রতিহত কর। গোপালগঞ্জে কোনোভাবেই যাতে ওরা ঢুকতে না পারে। কোনো ধরনের কর্মসূচি যাতে করতে না পারে। মনে রাখবা, গোপালগঞ্জের মাটি থেকে ওদের কেউ যাতে অক্ষত অবস্থায় ফিরে যেতে না পারে।’

কালবেলা
ঐকমত্য কমিশনের ঐক্য কতদূর
কালবেলার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, দেশের মৌলিক কাঠামোর সংস্কার ইস্যুতে কয়েকটি কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেই লক্ষ্যে গত মার্চ মাস থেকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দেশে ঐকমত্য তৈরির প্রচেষ্টায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈঠকে বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাবের কিছু বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করলেও অধিকাংশ বিষয়ের কাঠামোগত পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য ও দ্বিমত থেকেই যাচ্ছে। ফলে সংস্কারের প্রস্তাবিত বিষয়গুলো নিয়ে জটিলতাও বেড়েই চলেছে। এ অবস্থায় কমিশনের সদস্যরা বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে তাদের সামগ্রিক কাজের অগ্রগতি তাকে অবহিত করেছেন। প্রধান উপদেষ্টা কমিশন সদস্যদের বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, জুলাই বিপ্লবের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ১১ মাস পেরিয়ে গেছে। কিন্তু মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবগুলোতে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারছে না রাজনৈতিক দলগুলো। এখনো ৯টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবের বিষয়ে সুরাহা হয়নি। সেজন্য এসব ইস্যুতে ঘুরপাক খাচ্ছে আলোচনা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারকে আরও দ্রুতগতিতে কাজ করতে হবে এবং দলগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করতে হবে। ঐকমত্য কমিশন আগামী রোববার থেকে ফের ধারাবাহিক বৈঠক করবে বলে জানা গেছে।

কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতারা আলাপকালে কালবেলাকে জানান, ‘দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা চলছে। কিন্তু অমীমাংসিত ইস্যুগুলোতে আশানুরূপ সুরাহা আসেনি। ঘুরেফিরে একই বিষয়ে বারবার আলোচনায় বসতে অনীহাও প্রকাশ করেছে কিছু রাজনৈতিক দল। এজন্য দলগুলো পরস্পরকে দায়ী করছে, যা শুধু আলোচনার প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করছে না, বরং সংস্কার কার্যক্রমের ভবিষ্যৎ ও বহুল প্রতীক্ষিত ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা নিয়েও জটিলতা তৈরি করছে। দলগুলোর সঙ্গে মতৈক্যে পৌঁছলে জুলাইয়ের মধ্যেই ‘জাতীয় সনদ’ তৈরি করার লক্ষ্য ছিল কমিশনের। অবশ্য জুলাই মাসের প্রথমার্ধ পেরিয়ে গেলেও মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবে একমত হওয়ার বিষয়টি এখনো দৃশ্যমান হয়নি। কমিশনের সহসভাপতির কণ্ঠে এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে হতাশার সুর। তবে কমিশনের পক্ষ থেকে ৩০ বা ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ তৈরির আশা প্রকাশ করা হয়েছে।

গত সোমবার দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর কাজের অংশীদার জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আমরা যদি কোথাও ব্যর্থ হই, সে ব্যর্থতা আমাদের সবার।

কালের কণ্ঠ
গোপালগঞ্জ থমথমে, বাড়ল কারফিউ
কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে গত বুধবারের হামলা-সংঘর্ষের পর থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গোপালগঞ্জ শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করে। সংঘর্ষ ও সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে জেলায় জারি করা কারফিউয়ের সময়সীমা গতকাল আবারও বাড়ানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে যৌথ বাহিনী গতকাল রাত পর্যন্ত অন্তত ২৫ জনকে আটক করেছে।

এদিকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কারফিউ চলমান থাকবে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

গতকাল সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে চলমান কারফিউ শুক্রবার সকাল ১১টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। আজ শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল থাকবে। পরে দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ আবারও চলমান থাকবে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

তার আগে গত বুধবার দুপুরে গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের পর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই দিন রাত ৮টা থেকে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছিল জেলা প্রশাসন। এই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কারফিউয়ের সময়সীমা বাড়াল।

আটক অন্তত ২৫ জন : গতকাল সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বুধবার এনসিপির সভায় কিছু দুষ্কৃতকারী হামলা করেছে। এতে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটনা ঘটে গেছে।

প্রথম আলো
সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন
প্রথম আলোর প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রায় হামলার প্রস্তুতি চলছিল কয়েক দিন ধরেই। এ জন্য জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আগে থেকেই এসে গোপালগঞ্জ শহরে অলিগলিতে অবস্থান নেন। এনসিপির এই কর্মসূচি ঘিরে কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নানা হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।

গত এক সপ্তাহের গোপালগঞ্জের ঘটনাপ্রবাহ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তৎপরতা বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এনসিপির পদযাত্রা ঘিরে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট। এনসিপির সমাবেশ ঘিরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা ও সহিংসতায় জড়াবেন—স্থানীয়ভাবেও এমন আশঙ্কা করা হচ্ছিল। এনসিপির স্থানীয় নেতাদের পক্ষ থেকেও এমন আশঙ্কার কথা জেলা পুলিশকে জানানো হয়। এরপরও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারেনি।

গত বুধবারের হামলার পর ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্তত ১৮ জনের সঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার কথা বলেছে প্রথম আলো। সেখান থেকে এই হামলার বিষয়ে একটি চিত্র পাওয়া গেছে। তাঁরা বলছেন, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের স্থানীয় নেতারা কয়েক দিন ধরেই এনসিপির কর্মসূচি ঠেকাতে কাজ করছিলেন। এ জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতা-কর্মীদের গোপালগঞ্জ শহরে জড়ো করেন তাঁরা। পাশাপাশি গাছ কেটে সড়কে ফেলে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরিরও পরিকল্পনা করেন তাঁরা।

গতকাল গোপালগঞ্জের গ্রাম পুলিশের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, আগে থেকেই এনসিপির নেতা-কর্মীদের আটকে রাখা ও মারধরের পরিকল্পনা ছিল। সেভাবে গ্রাম থেকে অনেক মানুষ এসেছিল। তারা ছোট ছোট ভাগে শহরের অলিগলিতে অবস্থান নিয়েছিল।

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীও এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য আছে, কিছু দুষ্কৃতকারী বাইরে থেকেও এসেছিল। তারা এখনো গোপালগঞ্জে অবস্থান করছে। এমন গোয়েন্দা তথ্য আছে। আমরা তাদের আইডেনটিফাই (শনাক্ত) করার চেষ্টা করছি এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।’

বাংলাদেশ প্রতিদিন
গাজীর বান্ধবী নীলা ছিলেন রূপগঞ্জের ‘ছায়ামন্ত্রী’
বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, গোলাম দস্তগীর গাজীর অপরাধ কাহিনি সবার মুখে মুখে ছিল। সবাই জানতেন গোলাম দস্তগীর গাজী একজন ভয়ংকর অপরাধী। দুর্নীতিবাজ, ভূমিদস্যু, লুণ্ঠনকারী এবং মাদক কারবারি। কিন্তু তারপরও তিনি ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। তার এসব অপকর্ম যেমন ছিল ওপেন সিক্রেট, তেমনি তার পরকীয়া প্রেম কাহিনি ছিল প্রকাশ্য। রূপগঞ্জের আওয়ামী লীগের নেত্রী ফেরদৌসী আলম নীলার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে কোনো রাখঢাক ছিল না। এমনকি গাজীর স্ত্রী সাবেক মেয়র হাসিনা

গাজী, তার পুত্র পাপ্পা গাজী এসব বিষয় জানতেন। জানাজানি হওয়ার পর স্ত্রী হাসিনা গাজী এ নিয়ে স্বামীকে রীতিমতো ব্ল্যাকমেল করতেন। নীলাকে যেন গাজীর স্ত্রী মেনে নেয়, এ জন্য তাকে রাজনীতিতে আনেন। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, স্বামীর এসব অপকর্মের জন্য ব্ল্যাকমেল করে স্ত্রী রূপগঞ্জের তারাব পৌরসভার মেয়র পদ বাগিয়ে নেন এবং বিনা ভোটে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। স্বামীকে ব্ল্যাকমেল করে হাসিনা গাজী সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এভাবেই গোলাম দস্তগীর গাজী তার প্রেমিকা নীলার জন্য সবকিছু করেছেন। একাধিক সূত্র জানাচ্ছে যে, শেষদিকে নীলার মেয়ের সঙ্গেও গাজী গোলাম দস্তগীরের একটি অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তবে নীলার এই প্রেম নিঃস্বার্থ প্রেম ছিল না। এর বিনিময়ে তিনি রূপগঞ্জের অঘোষিত ‘ছায়ামন্ত্রী’ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। বিত্ত আর সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তার বিপুল পরিমাণ সম্পদের কাহিনি নিয়ে শুধু রূপগঞ্জ নয়, সারা দেশেই আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়।

নীলা। নামের সঙ্গে জীবনের গল্প অনেকটাই পরিপূরক। নীলা নামের বিশেষায়িত অর্থ সফল। আবার ভাগ্য রাশি বদলাতে নীলা পাথরের জুড়ি মেলা ভার। তবে নামের অর্থের নীলা আর ব্যক্তি নীলার সফলের গল্পটা কিন্তু ভিন্ন। ব্যক্তি নীলা অবৈধ উপায়ে রাতারাতি ধনকুবের বনে গেছেন। নীলার ডানে-বাঁয়ে থাকত সুঠাম নারী দেহরক্ষী। আর পেছনে বিশাল নারীর বহর। নীলার প্রভাবে গোটা রূপগঞ্জ জিম্মি ছিল। চাউর আছে-নীলার নীল দংশনে অতীতে অনেক তরুণ-যুবকও ধ্বংস হয়েছেন। নানা কেলেঙ্কারি আর অঘটনের পর ফটিক নামের একজনকে বিয়ে করেন নীলা।

নয়া দিগন্ত
গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা, টার্গেট ছিল শীর্ষ নেতাদের হত্যা
নয়া দিগন্তের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির শীর্ষ নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যেই গোপালগঞ্জে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী এই প্রস্তুতি নেয়া হয় আগে থেকেই। সে অনুযায়ী বুধবার সকাল থেকেই গোপালগঞ্জের বিভিন্ন পয়েন্ট ও এনসিপির সমাবেশস্থলের আশপাশে অবস্থান নেয় হামলাকারীরা। এর আগের রাতে পুরো জেলার গ্রাম-গঞ্জ থেকে নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের গোপনে জড়ো করা হয় শহরে। ছোট ছোট গ্রুপে তারা শহরের অলিগলিতে অবস্থান নেয় বলে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

এছাড়া ঢাকার অনেক সন্ত্রাসীও ওই রাতে গোপালগঞ্জে যায় কিলিং মিশনে অংশ নেয়ার জন্য। তাদের ক্ষুদে বার্তায় তথ্য দেয়া হয়, এনসিপির নেতারা গোপালগঞ্জে ঢুকলে তারা যেন জীবন নিয়ে ফিরে যেতে না পারে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন এ বিষয়ে আগে থেকে জানলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উল্টো স্থানীয় পুলিশের পক্ষ থেকে এনসিপিকে ‘সব ঠিক আছে’ বলে জানানো হয়েছিল, এমন অভিযোগ করেছেন দলটির নেতারা। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় পুলিশের কেউ কেউ এই হামলার সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকতে পারে।

সারা দেশে জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশের কর্মসূচি ছিল। গোপালগঞ্জের পৌরপার্ক এলাকায় এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। কিন্তু নেতারা সমাবেশস্থলে আসার আগেই হঠাৎ বেলা দেড়টার দিকে সেখানে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয় প্রথম দফায়। পরে বেলা ২টার দিকে নেতারা সমাবেশস্থলে যান এবং সমাবেশ শেষ করে মাদারীপুর যাওয়ার পথে গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে এনসিপি নেতাদের গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়।

হামলাকারীরা এ সময় আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করে। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল ৯টার পর থেকে বিকেল পর্যন্ত মোট চার দফায় হামলার ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সকালে দুই দফায় পুলিশ ও ইউএনওর গাড়িতে হামলা চালায় নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হামলাকারীদের সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়। এছাড়া ৯ জন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।

দেশ রূপান্তর
ফের গরম হচ্ছে কাঁচাবাজার!
দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানের ঢাকার বাজারে মানভেদে ৫৫-৬০ টাকা বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা বেড়েছে। এতে করে ঢাকার পাড়া মহল্লার মুদি দোকানগুলোতে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। একই সঙ্গে ডিমের দাম কমলেও বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানের ব্রয়লার মুরগির দাম কেজি প্রতি বেড়েছে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত।

গতকাল বৃহস্পতিবার বাড্ডা, রামপুরা, সেগুনবাগিচা, মগবাজার, কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি খুচরা বাজারের ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক মাস ধরেই ৫৫-৬০ টাকায় স্থিতিশীল অবস্থায় ছিল। হঠাৎ করেই দুই-তিন দিন ধরে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করে। খুচরা দোকানিরা প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে বলে জানা গেছে। খুচরা বিক্রেতারা জানান, কারওয়ানবাজারে ৫৮ টাকা পর্যন্ত দামে দেশি পেঁয়াজ পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে। এটা খুচরায় কমপক্ষে ৬৫ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। কোথাও কোথাও আবার এটা ৭০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে।

কাঁঠালবাগানের এক মুদি দোকানি আনিসুর রহমান জানান, পাইকারি বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। দুদিন ধরে বাড়তি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। এজন্য আমাদের ৬৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর বৃহস্পতিবারের বাজার বিশ্লেষণের তথ্য বলছে, গত এক মাসের তুলনায় বাজারে এখন ৯ শতাংশ বাড়তি দাম দিয়ে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। তবে এটা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪৮ শতাংশ কম দামে বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের এই সময়ে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১০-১২০ টাকায়।

পেঁয়াজের পাশাপাশি ব্রয়লার মুরগির দাম এক লাফে কেজিতে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বাজারভেদে ১৭০-১৮০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৬০-১৭০ টাকায়। সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের ব্রয়লার মুরগির বিক্রেতা শফিকুল জানান, সরবরাহ কিছুটা থাকায় দাম বেড়েছে। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়লেও কমেছে ডিমের দাম। ব্রয়লার মুরগির ডিমের দাম গত সপ্তাহে বাড়লেও তা আবার কমতে শুরু করেছে এবং প্রতি ডজন ডিমের দাম ৫-১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে এবং ১২০-১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

  • এটিআর

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর