Logo

আন্তর্জাতিক

কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি

Icon

কানাডা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৫, ০৭:৪৫

কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি

অভিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকার মার্ক কার্নি ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির নতুন নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। এর মাধ্যমে কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন তিনি। পরবর্তী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তিনি বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হবেন।

মার্ক কার্নি ব্যাংক অব কানাডার গভর্নর ছিলেন। তিনি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডেরও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

রোববার সদস্যদের ভোটে লিবারেল পার্টির নতুন নেতা বাছাই হয়। এতে মার্ক কার্নি ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৭৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিনা ফ্রিল্যান্ড পেয়েছেন ১১ হাজার ১৩৪ ভোট।

টানা ৯ বছর ক্ষমতায় থাকার পর গত জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ট্রুডো। এরপর তাঁর উত্তরাধিকার বাছাইয়ের জন্য ৯ মার্চ দিন ধার্য করা হয়েছিল।

কানাডার রাজনৈতিক ব্যবস্থায় হাউস অব কমন্সের সবচেয়ে বড় দল হিসেবে যিনি লিবারেল পার্টির প্রধান হবেন, দেশটির প্রধানমন্ত্রীও হন তিনি। এ হিসেবে মার্ক কার্নি নির্বাচনের আগপর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কানাডার ইতিহাসে রাজনীতি না করেই তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। মার্ক কার্নি চলতি বছরের জানুয়ারিতে কানাডার আলবার্টার এডমেনটন সিটি থেকে ঘোষণা দিয়েছিলেন নিজেকে পরবর্তী লিবারেল পার্টির নেতা ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে। এই শহর বেছে নেয়ার মূল কারণ হলো এখানে তিনি বড় হয়েছেন। তার শৈশব ও হাইস্কুলের পড়াশোনা এখান থেকেই সম্পন্ন করেছেন। এরপর তিনি উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন হার্ভাড ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

বিশ্ব সেরা দুটি গুরুত্বপূর্ণ ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি নিউইয়র্কের গোল্ডম্যান স্যাক্স থেকে আরো একটি বিশ্ব সেরা ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানিতে তিনি ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার হিসেবে দায়িত্ব শুরু করেন। যা দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু। পরবর্তীতে তিনি ২০০৮ সাল থেকে তিনি ২০১৩ সাল পর্যন্ত ব্যাংক অফ কানাডার গভর্নর হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি ২০১৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব পালন করেন।

উল্লেখ্য, মার্ক কার্নি পৃথিবীতে একমাত্র ব্যক্তি যিনি দুটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব পালন করছেন।

মার্ক কার্নি কানাডা ও যুক্তরাজ্যের দুই দেশের যে সময়টাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্বে ছিলেন, দুটি দেশেই তখন অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে ছিল। ২০০৮, থেকে ২০১১ পর্যন্ত জি-৭ দেশগুলোতে বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয় ছিল। পাশের দেশ যুক্তরাষ্ট্রও অর্থনৈতিক খারাপ অবস্থায় ছিল, কিন্তু সেই সময়টাতে কানাডায় তিনি অর্থনৈতিক মন্দার আঁচ লাগতে দেননি। ওই সময় কনজারভেটিভ পার্টি ক্ষমতায় থাকলেও অর্থনৈতিক দিক বিবেচনায় মার্ক কার্নিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে তার ভূমিকাকে এখনো মূল্যায়ন করা হয়। 

কানাডার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উন্নয়নে মার্ক কার্নির অবদান দেখে যুক্তরাজ্য তার দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব নিতে অনুরোধ জানায়। সেই অনুরোধ তিনি উপেক্ষা না করে যুক্তরাজ্যের বিপর্যস্ত অর্থনীতির সচল রাখতে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেখানেও বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে তার জ্ঞান দিয়ে একটি সুন্দর অবস্থার মধ্যে রেখে আসেন। তার কর্মদক্ষতা ও অর্জিত জ্ঞান দিয়ে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিকে বিপর্যয় থেকে তিনি মুক্তি দেন।

দুটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব পালন করে তিনি যে সাফল্য দেখিয়েছে তা নিঃসন্দেহে প্রমাণিত যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও অবকাঠামো উন্নয়নে তার বিকল্প নেই।

জাস্টিন ট্রুডোর সমালোচনা করে মার্ক কার্নি বলেছেন, তিনি ও তার সরকার কানাডার অর্থনীতির দিকে নিবিড় দৃষ্টি রাখতে পারেননি। ট্রুডো ও তার টিম অর্থনীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে তাদের দৃষ্টি ও মনোযোগ অন্য জায়গায় সরে গিয়েছিল।

তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি কখনোই ফোকাস হারাবেন না। তার ফোকাস নিবিড়ভাবে অর্থনীতির উপর থাকবে। এই মুহূর্তে কানাডার জন্য অর্থনীতির উপরে নজর সবচেয়ে জরুরি।

উল্লেখ্য, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো চললি বছরের প্রথম দিকেই লিবারেল পার্টির নেতা ও প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে লিবারেল পার্টির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

কানাডা মার্ক কার্নি জাস্টিন ট্রুডো

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর