বিদ্যুৎহীন গাজায় মানবিক সংকট চরমে
কাতারে যুদ্ধবিরতির আলোচনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২৫, ০৮:০০

গতকাল ইফতারের আগে গাজার বেইত লাহিয়ায় একটি দাতব্য রান্নাঘর থেকে খাবার সংগ্রহের জন্য ভিড় করছে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি শিশুরা | ছবি : এএফপি
গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করতে সোমবার (১০ মার্চ) কাতারে পৌঁছেছে ইসরায়েলের একটি প্রতিনিধি দল। তবে আলোচনা শুরুর আগেই গাজার একমাত্র পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে ইসরায়েল, যা ‘অগ্রহণযোগ্য ব্ল্যাকমেইল’ বলে অভিহিত করেছে হামাস। খবর আরব নিউজের।
এর আগে, গত ১ মার্চ গাজা যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ হলেও দ্বিতীয় ধাপে যাওয়া নিয়ে মতবিরোধ শুরু হয়েছে। হামাস চায় দ্রুত দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরু করতে, যেখানে বন্দি বিনিময়, গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির শর্ত অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তবে ইসরায়েল প্রথম ধাপের মেয়াদ আরও বাড়াতে চায়।
হামাস এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করছে এবং কৌশলগতভাবে আলোচনা বিলম্বিত করছে।
ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেশটির প্রতিনিধিদল দোহায় পৌঁছেছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে রয়েছে দেশটির নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেতের এক শীর্ষ কর্মকর্তা।
বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নকরণ নিয়ে সমালোচনা
যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে অচলাবস্থার মধ্যেই ইসরায়েল গাজার প্রধান পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্টের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিয়েছে। দেশটির জ্বালানি মন্ত্রী এলি কোহেন বলেছেন, ‘আমরা আমাদের সব কৌশল প্রয়োগ করব, যাতে আমাদের বন্দিদের ফিরিয়ে আনা যায় এবং গাজা থেকে হামাসের অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন করা যায়।’
এ অবস্থায় গাজায় মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। ভূখণ্ডটির শত শত মানুষ বর্তমানে তাবুতে বসবাস করছেন। সেখানে রাতের তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি নেমে এসেছে, যা মানবিক সংকটকে আরও প্রকট করে তুলেছে।
হামাসের মুখপাত্র আবদুল লতিফ আল-কানুয়া বলেছেন, ‘বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত ব্যর্থ কৌশল এবং এটি ইসরায়েলি বন্দিদের জন্যও হুমকি হয়ে উঠতে পারে। আলোচনার মাধ্যমেই তাদের মুক্তি সম্ভব।’
এদিকে ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে জার্মানি ও যুক্তরাজ্য। জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ক্যাথরিন ডেসচাউয়ার বলেছেন, ‘গাজায় আবারও খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে, আর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের মুখপাত্রও অবরোধ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন।
এটিআর/