Logo

আন্তর্জাতিক

পারিবারিক চ্যাট গ্রুপেও ইয়েমেন হামলার আলোচনা মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৪

পারিবারিক চ্যাট গ্রুপেও ইয়েমেন হামলার আলোচনা মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের ওপর মার্চ মাসে চালানো হামলার বিস্তারিত তথ্য স্ত্রী, ভাই ও ব্যক্তিগত আইনজীবীসহ ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে সিগন্যাল অ্যাপে শেয়ার করেছিলেন।

সিগন্যাল অ্যাপে হেগসেথের দ্বিতীয় চ্যাট গ্রুপের তথ্য ফাঁস হওয়ায় তার বিরুদ্ধে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে। সাম্প্রতিক মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরে অভ্যন্তরীণ তদন্তের জেরে বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা বরখাস্ত হয়েছেন।

এই দ্বিতীয় চ্যাট গ্রুপে হেগসেথ যেসব তথ্য শেয়ার করেছিলেন, সেগুলোর সঙ্গে দ্য আটলান্টিক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত তথ্যের মিল রয়েছে, যা গত মাসে সম্পাদক জেফ্রি গোল্ডবার্গের সঙ্গে ভুলবশত শেয়ার হওয়া এক চ্যাট গ্রুপ থেকে ফাঁস হয়। সেই চ্যাটে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা টিমের শীর্ষ কর্মকর্তারা যুক্ত ছিলেন, যা বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতির জন্ম দেয়।

সূত্রটি জানায়, দ্বিতীয় চ্যাটটিতে প্রায় ডজনখানেক সদস্য ছিলেন। মূলত হেগসেথ দায়িত্ব নেওয়ার আগে ওই গ্রুপ তৈরি হয়েছিল প্রশাসনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য। তবে সেই চ্যাটেও বিমান হামলার সময়সূচি নিয়ে তথ্য ছিল।

প্রতিরক্ষা দপ্তরের প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, হেগসেথের স্ত্রী জেনিফার, যিনি এক সময় ফক্স নিউজের প্রযোজক ছিলেন, তিনি বিদেশি সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে উপস্থিত থেকেছেন। মার্চ মাসে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে হওয়া এক বৈঠকে হেগসেথের পেছনে তার স্ত্রীকেও বসে থাকতে দেখা যায়।

হেগসেথের ভাই একজন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি প্রতিনিধি হিসেবে প্রতিরক্ষা দপ্তরে কাজ করছেন।

ট্রাম্প প্রশাসন যেভাবে তথ্য ফাঁসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে, হেগসেথও ঠিক সেইভাবেই পেন্টাগনে সেই প্রচেষ্টা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

তবে, পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পারনেল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘মিডিয়া মূলত ক্ষুব্ধ সাবেক কর্মীদের অসন্তোষই একমাত্র উৎস হিসেবে ব্যবহার করছে। 

তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প-বিরোধী মিডিয়া এখন যেকোনোভাবে প্রেসিডেন্টের কর্মসূচির প্রতি দায়বদ্ধ ব্যক্তিদের সরিয়ে দিতে ব্যস্ত। আমরা মার্কিন যোদ্ধাদের জন্য অনেক অর্জন করেছি, আর কোনোভাবেই পিছিয়ে যাব না।’

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র আন্না কেলি জানান, ‘সম্প্রতি বরখাস্ত হওয়া তথাকথিত ‘তথ্য ফাঁসকারীরা’ এখনো মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে নিজেদের ক্ষতবিক্ষত মনোভাব ঠিক করার চেষ্টা করছে।’

হেগসেথের জন্য খারাপ সময়

ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা বলছেন, হেগসেথ আর প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে থাকার উপযুক্ত নন।

সিনেটর চাক শুমার এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে লেখেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তথ্য জানছি যে হেগসেথ কীভাবে জীবনকে হুমকির মুখে ফেলেছেন। কিন্তু ট্রাম্প এখনো তাকে বরখাস্ত করতে পারছেন না। হেগসেথকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।’

ইরাক যুদ্ধে আহত হওয়া সেনেটর ট্যামি ডাকওয়ার্থ বলেন, ‘হেগসেথকে সম্মানের সঙ্গে নয়, লজ্জার সঙ্গে পদত্যাগ করতে হবে।’

পেন্টাগনের এক কর্মকর্তা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘এই নতুন তথ্য প্রকাশের পরেও হেগসেথ কীভাবে নিজের পদে থাকতে পারেন?’

এই ঘটনার কদিন আগেই হেগসেথের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা ড্যান ক্যাল্ডওয়েলকে পেন্টাগন থেকে বের করে দেওয়া হয়। তিনি একটি তথ্য ফাঁসের ঘটনায় দোষী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিলেন। প্রথম চ্যাট গ্রুপে হেগসেথ তাকেই প্রতিরক্ষা দপ্তরের প্রধান প্রতিনিধি হিসেবে নাম দিয়েছিলেন।

ক্যাল্ডওয়েল এক্সে লিখেছেন, ‘আমাদের প্রতিরক্ষা দপ্তরে কাজের সমাপ্তির ধরনে আমরা অত্যন্ত হতাশ। নাম প্রকাশ না করা কর্মকর্তারা বিদায়ের সময় আমাদের চরিত্র হননের চেষ্টা করেছেন।’

ক্যাল্ডওয়েলের বিদায়ের পর হেগসেথের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ ডারিন সেলনিক ও ডেপুটি ডিফেন্স সেক্রেটারি স্টিভ ফাইনবার্গের চিফ অব স্টাফ কলিন ক্যারলকে প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হয় এবং পরে শুক্রবার বরখাস্ত করা হয়।

ওএফ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর