Logo

আন্তর্জাতিক

ভারতে উগ্র হিন্দুদের গণপিটুনিতে নিহত মুসলিম যুবক, ৩ পুলিশ বরখাস্ত

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ২১:৪৩

ভারতে উগ্র হিন্দুদের গণপিটুনিতে নিহত মুসলিম যুবক, ৩ পুলিশ বরখাস্ত

মানসিকভাবে অসুস্থ এক মুসলিম যুবককে হিন্দুত্ববাদী জনতার হাতে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশের গাফিলতির অভিযোগে কর্ণাটক পুলিশ বিভাগের তিন সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন মেঙ্গালুরু রুরাল থানার ইন্সপেক্টর শিবকুমার, হেড কনস্টেবল পি. চন্দ্র ও কনস্টেবল ইয়াল্লালিঙ্গা।  

এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে মুসলিম সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল।  

কেরালার কোট্টাক্কালের বাসিন্দা আশরাফ পরিবারের সঙ্গে ওয়াইনাডের পুলপল্লিতে থাকতেন। রোববার (২৭ এপ্রিল) মেঙ্গালুরুর কুদুপু এলাকায় এক স্থানীয় ক্রিকেট ম্যাচ দেখছিলেন। সেখানেই এক গ্লাস পানি খাওয়াকে কেন্দ্র করে শুরু হয় বিরোধ।  

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে জানা গেছে, বিজেপির সঙ্গীতা নায়কের স্বামী রবীন্দ্র নায়েকের নেতৃত্বে ‘সম্রাট গাইস’ নামক হিন্দুত্ববাদী ক্লাবের সদস্যরা আশরাফকে ক্রিকেট ব্যাট ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেন।  

পুলিশ শুরুতে ঘটনাটিকে ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’ হিসেবে মামলা নেয়। অভিযোগ রয়েছে, ইন্সপেক্টর শিবকুমার পরে ব্যাপক চাপে পড়ে এটিকে হত্যা মামলা হিসেবে পুনঃনিবন্ধন করেন।  

পুলিশ বিভাগের বরখাস্তের আদেশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা গোষ্ঠীগত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সমস্ত তথ্য জানলেও তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাননি এবং ঘটনার গুরুত্ব অনুযায়ী ব্যবস্থা নেননি।  

হত্যাকাণ্ডের পর অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, আশরাফ ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলে স্লোগান দিয়েছিলেন। যা হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলোর ভুয়া প্রচারণা বলে প্রমাণিত হয়।  

ওয়েনলক জেলা হাসপাতালের ময়নাতদন্তে উঠে আসে, আশরাফের মাথা, পিঠ, পায়ু ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গে গভীর জখম ছিল। অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ ও শকে মৃত্যু হয়েছে।

  

সিপিআই(এম) নেতা মুনির কটিপল্লা অভিযোগ করেন, পুলিশ এই ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। প্রথম এফআইআর দায়ের করা হয় এক অভিযুক্ত মনজনাথের দ্বারা, যেখানে তিনি আশরাফকে ‘অপরিচিত মরদেহ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন।  

মেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনার অনুপম আগরওয়াল ও ইন্সপেক্টর শিবকুমারের বিরুদ্ধে মৃত্যুর কারণ গোপন, দেরিতে গ্রেপ্তার ও তদন্তে অনিয়মের অভিযোগ এনেছে দক্ষিণ কন্নড় কংগ্রেস কমিটি।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ঘটনায় ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিডিও ও ছবির ভিত্তিতে বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।  

পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, এ ঘটনায় কোনো রকম গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না। তদন্ত চলবে পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওএফ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর