Logo

আন্তর্জাতিক

গাজাগামী ফ্রিডম ফ্লোটিলা জাহাজে ড্রোন হামলা

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ মে ২০২৫, ১৬:৫১

গাজাগামী ফ্রিডম ফ্লোটিলা জাহাজে ড্রোন হামলা

মাল্টা উপকূলের কাছে ভূমধ্যসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় অবস্থানকালে গাজামুখী ফ্রিডম ফ্লোটিলার একটি ত্রাণবাহী জাহাজে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়।

পরে সেখান থেকে জরুরি সংকেত (এসওএস) পাঠানো হলে মাল্টা সরকার একটি টাগ বোট পাঠায়। জাহাজে অবস্থানকারীরা ড্রোন হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ি করছে।

গাজায় ইসরায়েলের অবরোধ অবসানের দাবিতে প্রচার চালানো ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) সিএনএনকে জানায়, স্থানীয় সময় মধ্যরাতের পর সন্দেহজনক হামলার ঘটনা ঘটে। ওই সময় মানবিক সহায়তাবাহী জাহাজে এর কর্মীরা অবস্থান করছিলেন।

এফএফসির মুখপাত্র ইয়াসেমিন আকার শুক্রবার সকালে মাল্টা থেকে ফোনে সিএনএনকে বলেন, ‘জাহাজে একটি ছিদ্র হয়ে গেছে। এটি ডুবে যাচ্ছে।’

মাল্টা সরকার জানায়, জাহাজটিতে ১৬ জন ছিলেন। যার মধ্যে— ১২ জন ক্রু ও ৪ জন সাধারণ যাত্রী। তবে সিএনএনকে এফএফসি জানায়, জাহাজটিতে মোট ৩০ জন অবস্থান করছিলেন।

মাল্টার সশস্ত্র বাহিনী নিশ্চিত করেছে, জাহাজটিতে আগুন লাগলেও তা পরে নিভিয়ে ফেলা হয়েছে। একজন মুখপাত্র বলেন, আমরা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।

তবে এ ঘটনায় কোনো আহতের খবর পাওয়া যায়নি।

মাল্টা সরকার জানায়, জাহাজটিকে সহায়তা করতে একটি টাগ বোট পাঠানো হয়েছিল। সব ক্রু নিরাপদে থাকলেও তারা টাগ বোটে উঠতে অস্বীকৃতি জানায়। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা দেওয়া হয়। 

‘দ্য কনসায়েন্স’ নামের জাহাজটি মাল্টার দিকে যাচ্ছিল, সেখান থেকে আরও বেশকিছু কর্মীর এতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। এরপর এটি এক হাজার কিলোমিটার দূরে গাজার দিকে রওনা দেওয়ার কথা ছিল। তবে জাহাজটি এখনো মাল্টার বন্দরে পৌঁছায়নি।

এফএফসি জানায়, সুপরিচিত জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ ও অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন সেনা কর্নেল ম্যারি অ্যান রাইট মাল্টা থেকে এই জাহাজে ওঠার কথা ছিল। কিন্তু আগুন আগুন লাগার সময় তারা জাহাজে ছিলেন না।

এফএফসি জানায়, বিশ্বের ২১টিরও বেশি দেশের স্বেচ্ছাসেবীরা এ মিশনে অংশ নিতে মাল্টায় গিয়েছিলেন। যাদের মধ্যে অনেক পরিচিত মুখও আছেন।

মাল্টা থেকে ম্যারি অ্যান রাইট সিএনএনকে বলেন, ‘আমরা জাহাজে উঠতে প্রস্তুত ছিলাম। যে কেউ তখন জাহাজে থাকতে পারতেন। তুরস্ক ও আজারবাইজানের নাগরিকরা জাহাজে ছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কখনো ভাবিনি এমন কিছু ঘটতে পারে। এটা পাগলামি! জাহাজটি সেখানে নোঙর করে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল। কে ভাবতে পারে কেউ ড্রোন পাঠিয়ে এমন একটি শান্তিপূর্ণ জাহাজে হামলা করবে? এটা ইউরোপের সব দেশের জন্যই সতর্কবার্তা হওয়া উচিত।’

এফএফসি জানায়, তাদের এই গাজা অভিমুখে যাত্রাকে নিরাপদ রাখতে গণমাধ্যমে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়নি। গণমাধ্যম থেকেও দূরে রাখা হয়েছিল যাতে কেউ জানতে না পারে। তবে আক্রমণের পর সদস্যরা মুখ খোলে।

মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের জাহাজ এখন মাল্টার উপকূল থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে আন্তর্জাতিক জলসীমায়, এবং আমরা দুইবার ড্রোন হামলার শিকার হয়েছি।’ 

তার দাবি, জাহাজের সামনের জেনারেটর লক্ষ্য করেই হামলা করা হয়।

হামলার ঘটনায় ইসরায়েলকে দায়ী করেছে তারা, যদিও কোনো প্রমাণ প্রকাশ করেনি। 

বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য তাদের জবাব দিতে হবে।

সিএনএন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য চেয়েছে, তবে এখনো কোনো সাড়া মেলেনি।

২০১০ সালেও গাজার উদ্দেশে যাওয়া এক জাহাজে ইসরায়েল হামলা চালিয়েছিল, যেখানে ৯ জন নিহত হন। সে সময় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছিল।

এফএফসি তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আগুন ও ধোঁয়ার ছবি-ভিডিও প্রকাশ করেছে। এক ভিডিওতে বিস্ফোরণের শব্দও শোনা যায়।

ওএফ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর