Logo

আন্তর্জাতিক

সিএনএন

ভীতিকর গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে মোদিকে যুদ্ধ বন্ধে চাপ দেয় যুক্তরাষ্ট্র

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫, ১০:৩৬

ভীতিকর গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে মোদিকে যুদ্ধ বন্ধে চাপ দেয় যুক্তরাষ্ট্র

তীব্র উত্তেজনার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কার্যকর হয়েছে যুদ্ধবিরতি চুক্তি। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে টানা ৪৮ ঘণ্টা ধরে আলোচনা চালিয়ে শেষ পর্যন্ত এই ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আলোচনায় মূল ভূমিকা রাখেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

তবে এই যুদ্ধবিরতির পেছনে রয়েছে আরও গভীর তথ্য। শনিবার (১০ মে) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা চরমে পৌঁছানোর পর যুক্তরাষ্ট্রের হাতে আসে কিছু ভীতিকর ও উদ্বেগজনক গোয়েন্দা তথ্য। এরপরই ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স জরুরি ভিত্তিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় বসার আহ্বান জানান।

সিএনএন জানায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ সুজি ওয়াইলস মিলে ভারত-পাকিস্তান সংঘাত ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন।

শুক্রবার সকালে যুক্তরাষ্ট্র এমন কিছু গোয়েন্দা তথ্য পায়, যা পরিস্থিতিকে আরও বিপজ্জনক করে তোলে। এই তথ্য পাওয়ার পরপরই ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে পুরো পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করেন। তারপর শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় দুপুরে তিনি সরাসরি ফোন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে।

সেই ফোনালাপে ভ্যান্স স্পষ্ট করে মোদিকে জানান, হোয়াইট হাউসের মূল্যায়ন অনুযায়ী এই সংঘাত আরও বড় আকার নিতে পারে এবং সপ্তাহান্তেই বড় ধরনের সামরিক সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। তিনি মোদিকে বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য সম্ভাব্য বিকল্প পথ বিবেচনায় আনতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা ছিল, সে সময় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনো ধরনের কূটনৈতিক আলোচনা চলছিল না। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য ছিল উভয় পক্ষকে আবারও আলোচনায় ফিরিয়ে আনা। সূত্র জানায়, ভ্যান্স মোদিকে এমন একটি শান্তিপূর্ণ বিকল্প পথের কথাও জানান, যা পাকিস্তান মেনে নিতে পারে বলে আমেরিকার ধারণা ছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোয়েন্দা তথ্যের প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো না হলেও, তথ্যটি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, হোয়াইট হাউসের শীর্ষ তিন কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে আরও সক্রিয় হবার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন।

মোদির সঙ্গে ফোনালাপের পরপরই মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা ভারত-পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে রাতভর যোগাযোগ চালিয়ে যান।

মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, মোদির সঙ্গে ভ্যান্সের ফোনালাপ ছিল এই প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানান, জেডি ভ্যান্স গত মাসে ভারত সফরে গিয়ে মোদির সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করেন। ট্রাম্প প্রশাসনের বিশ্বাস ছিল, এই ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণেই ফোনালাপটি কার্যকর হয়েছে।

ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে মার্কো রুবিওর ফোনালাপ সম্পর্কেও নিশ্চিত করেছে সিএনএন। এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, তখন দুই দেশের মধ্যে কোনো সরাসরি যোগাযোগ হচ্ছিল না। তাই আমরা চেষ্টা করেছি তাদের কথোপকথনায় ফিরিয়ে আনতে।

তিনি আরও জানান, আলোচনার ধারাবাহিকতায় মার্কিন কর্মকর্তারা বুঝতে পারেন উভয় পক্ষের জন্য উত্তেজনা কমানোর ‘সম্ভাব্য পথ’ কী হতে পারে। এরপর তারা সেই বার্তা দুই পক্ষের কাছে পৌঁছে দিতে সহায়তা করেন এবং কিছুটা হলেও যোগাযোগের ঘাটতি পূরণে সহায়ক হন।

এই প্রক্রিয়ার ফলেই শেষ পর্যন্ত ভারত ও পাকিস্তান সরাসরি আলোচনায় বসতে সক্ষম হয় এবং যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসে।ে

  • এটিআর

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

পাকিস্তান

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর