সালমান রুশদির ওপর হামলার দায়ে আসামির সাজা ঘোষণা আজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৫, ১৩:৩৫

ছবি : সংগৃহীত
নিউইয়র্কের একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে বিশিষ্ট লেখক সালমান রুশদির ওপর ২০২২ সালে ছুরি হামলা চালানো হয়। সেই ঘটনায় অভিযুক্ত আমেরিকান-লেবাননি নাগরিক হাদি মাতারের সাজা আজ শুক্রবার ঘোষণা করা হবে।
২৭ বছর বয়সী মাতার চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন। তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও আঘাতের অভিযোগ আনা হয়েছিল। তার সর্বোচ্চ ২৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। খবর এএফপির।
বিচার চলাকালে রুশদি জুরি বোর্ডের সামনে বলেন, মাতার তাকে ছুরি দিয়ে ‘বারবার আঘাত ও পোচ’ দেন। তিনি বলেন, ‘আমার চোখে ছুরির আঘাত লাগে। প্রচণ্ড যন্ত্রণায় আমি চিৎকার করছিলাম। আমি রক্তের হ্রদে পড়ে ছিলাম।’
ছয় ইঞ্চি লম্বা ছুরি দিয়ে মাতার রুশদিকে অন্তত ১০ বার আঘাত করেন। বিচার চলাকালীন তিনি একাধিকবার ফিলিস্তিনপন্থী স্লোগান দেন।
হাদি মাতার পরে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি রুশদির 'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস' বইটির মাত্র দুই পৃষ্ঠা পড়েছেন, তবে তার বিশ্বাস, লেখক ইসলাম ধর্মকে ‘আক্রমণ’ করেছেন।
মাতারের আইনজীবীরা চেয়েছিলেন, আদালতে সাক্ষীরা যেন রুশদিকে ১৯৮৯ সালে ইরান ঘোষিত মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়ার শিকার হিসেবে উপস্থাপন না করেন। ঐ ফতোয়াটি ইরান দিয়েছিল রুশদির লেখা কথিত ধর্মদ্রোহিতার কারণে।
ইরান অবশ্য হামলার সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে এবং বলেছে, দায় শুধুই রুশদির।
গভীর শারীরিক ক্ষতি
এই হামলায় রুশদির ডান চোখের অপটিক নার্ভ কেটে যায়। তিনি আদালতকে বলেন, ‘চোখটা সেলাই করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে যাতে তা ভেজা থাকে। খুব যন্ত্রণাদায়ক একটা অপারেশন ছিল—আমি কাউকে এই অভিজ্ঞতা নিতে বলব না।’
এছাড়া তার গলার স্বরযন্ত্র কাটা পড়ে, যকৃত ও ক্ষুদ্রান্ত্রে ছুরি ঢোকে এবং এক হাতের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে সেই হাত অচল হয়ে পড়ে।
ব্রিটিশ-মার্কিন নাগরিক সালমান রুশদি (৭৭) তৎক্ষণাৎ উপস্থিত দর্শকদের সহায়তায় প্রাণে রক্ষা পান। ২০২৪ সালে তিনি 'নাইফ' নামে একটি স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ প্রকাশ করেন, যেখানে এই হামলার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
চলতি বছর মার্চে তার প্রকাশক ঘোষণা করে, আগামী ৪ নভেম্বর তার দ্য ইলেভেনথ আওয়ার’ শিরোনামের ছোটগল্প সংকলন প্রকাশিত হবে।
মুম্বাইয়ে জন্ম নেওয়া রুশদি শৈশবে ইংল্যান্ডে চলে যান। তার দ্বিতীয় উপন্যাস 'মিডনাইটস চিলড্রেন’(১৯৮১) তাকে খ্যাতির শিখরে পৌঁছে দেয় এবং এতে পরাধীনতা-উত্তর ভারতের চিত্রায়ণে তিনি ব্রিটেনের মর্যাদাপূর্ণ বুকার পুরস্কার লাভ করেন।
তবে 'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ তাকে যে খ্যাতি এনে দেয়, তা ছিল অধিকাংশ সময়েই অপ্রত্যাশিত ও ঝুঁকিপূর্ণ।
টিএ