মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওয়ালমার্টের তীব্র সমালোচনা করেন। তার অভিযোগ, ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্যযুদ্ধজনিত উচ্চ খরচের কারণে এই সপ্তাহে ওয়ালমার্ট যেভাবে পণ্যের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।

ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম 'ট্রুথ সোশ্যাল'-এ লেখেন, ‘ওয়ালমার্ট শুল্ককে দোষারোপ করে দাম বাড়ানোর চেষ্টা বন্ধ করতে হবে। ওয়ালমার্ট গত বছর প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বেশি, বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার মুনাফা করেছে।’

তিনি আরও লেখেন, ‘ওয়ালমার্ট ও চীন, দুজনেরই উচিত, যেমনটা বলা হয়, ‘শুল্ক নিজেরা বহন করা,’ এবং গ্রাহকদের থেকে এর এক পয়সাও আদায় না করা। আমি নজর রাখব, আর আপনার গ্রাহকরাও রাখবে!!!’

গত বৃহস্পতিবার ওয়ালমার্ট ঘোষণা করে, তারা আগামী মাস থেকে দাম বাড়াতে যাচ্ছে, কারণ ট্রাম্পের বিস্তৃত শুল্কনীতির কারণে তাদের খরচ বেড়েছে।

ওয়ালমার্টের এক মুখপাত্র শনিবার দ্য হিলকে বলেন, আমরা সব সময় আমাদের পণ্যের দাম যতটা সম্ভব কম রাখার চেষ্টা করি এবং এই চেষ্টার কমতি নেই। তবে খুচরা বিক্রয়ের সীমিত মুনাফার বাস্তবতা বিবেচনায় আমরা যতদিন পারি, ততদিন দাম কম রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাব।

চলমান অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে ওয়ালমার্ট চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের লাভের পূর্বাভাস প্রকাশ করেনি। বিশেষজ্ঞরা মাসের পর মাস ধরে আমদানি শুল্কের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে মার্কিন ভোক্তাদের সতর্ক করে আসছেন।

ওয়ালমার্টের সিইও ডগ ম্যাকমিলনও বৃহস্পতিবার আয় প্রকাশের সময় বলেন, খুচরা বিক্রয়ে সীমিত মুনাফা নিয়ে কোম্পানির উদ্বেগ রয়েছে। কোম্পানি সব চাপ সহ্য করতে পারছে না।

বৃহস্পতিবার কোম্পানিটি জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে তাদের মুনাফা কমে দাঁড়িয়েছে ৪.৪৫ বিলিয়ন ডলার বা প্রতি শেয়ারে ৫৬ সেন্ট, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৫.১০ বিলিয়ন ডলার বা ৬৩ সেন্ট — এমনটি জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।

ট্রাম্পের শনিবারের পোস্টটি আসে এমন এক সময়ে, যখন তার প্রশাসন সপ্তাহের শুরুতেই চীনা পণ্যের উপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনে, এবং তা ৯০ দিনের জন্য কার্যকর থাকে। এর জবাবে চীনও পাল্টা শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনে।

এই পদক্ষেপ ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্যনীতি থেকে পিছু হটার ইঙ্গিত দেয়। এর আগে প্রশাসন চীনের নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের শুল্কে ছাড়, কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর আরোপিত ২৫ শতাংশ শুল্ক বাতিল এবং বহু দেশের বিরুদ্ধে ‘পারস্পরিক’ শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করার মতো বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ওএফ