
গাজা উপত্যকায় সেনা অভিযান সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে নিয়মিত পদাতিক ও সাঁজোয়া বাহিনীর ৯টি ব্রিগেড মোতায়েন করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সামরিক সূত্রের বরাতে ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচার সংস্থা কেএএন একথা জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় এই ব্রিগেডগুলো গাজায় প্রবেশ করেছে। গাজায় স্থল অভিযানের সম্প্রসারণের অংশ এসব বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে উল্লেখ করা হলেও সেনাসংখ্যা বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
চলতি মাসের ৪ তারিখে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ‘চেরিয়টস অব গিডিয়ন’ নামের একটি সামরিক অভিযান অনুমোদন করে, যার লক্ষ্য গাজায় সামরিক উপস্থিতি আরও বাড়ানো। যা মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ভাষায়, গণহত্যার মাত্রা বাড়ানো। এরপর থেকেই দেশটি লক্ষাধিক রিজার্ভ সেনা তলব করে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ১৮ মে থেকে একাধিক দিক দিয়ে স্থল অভিযান শুরু করে। কান-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই অভিযান কয়েক মাস ধরে চলবে। এই অভিযানের অংশ হিসেবে গাজার যুদ্ধক্ষেত্র অঞ্চলগুলো, বিশেষ করে উত্তর গাজা থেকে বেসামরিক মানুষদের পুরোপুরি সরিয়ে দক্ষিণে পাঠানো হবে। এছাড়া, সেনাবাহিনী যেসব এলাকা দখল করবে, সেখানে তাদের স্থায়ী উপস্থিতি বজায় থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
গত সপ্তাহে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজায় ৯৮ ও ১৬২ নম্বর ডিভিশন মোতায়েন করা হয়েছে। আর এর আগে থেকেই সেখানে ২৫২, ১৪৩ ও ৩৬ নম্বর ডিভিশন কাজ করছিল।
সামরিক সূত্রের দাবি, বর্তমানে উত্তর গাজা ও দক্ষিণের খান ইউনিস এলাকায় সবচেয়ে বেশি হামলা হচ্ছে। ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের এক সপ্তাহ আগেই সতর্ক করে দেওয়া হয়, কারণ সেখানে আগে থেকেই ‘মারাত্মক বিমান হামলা’ চালানোর পরিকল্পনা ছিল।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) শুক্রবার জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে ইসরায়েলি হামলা ও অবরোধের ফলে গাজা থেকে অন্তত ১ লাখ ৭২ হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। তবে বাস্তুচ্যুত হওয়ার পরও তারা ইসরায়েলি হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। পালানোর সময় বা আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার সময়ও হামলার শিকার হয়ে বহু মানুষ নিহত হচ্ছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজার বিরুদ্ধে ব্যাপক হামলা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। এতে ৫৩ হাজার ৯০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
এই হামলার দায়ে গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এছাড়া গাজায় ইসরায়েলের অভিযানের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা চলছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে)।
ওএফ