গাজায় চলমান যুদ্ধাপরাধ তদন্তে গঠিত স্বাধীন মানবিক ও নৈতিক উদ্যোগ ‘গাজা ট্রাইব্যুনাল’ সোমবার বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার রাজধানী সারায়েভোতে তাদের প্রথম প্রকাশ্য অধিবেশন শুরু করতে যাচ্ছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিন অঞ্চল বিষয়ক সাবেক বিশেষ প্রতিনিধি রিচার্ড ফকের নেতৃত্বে এই ট্রাইব্যুনালের অধিবেশন ২৬ থেকে ২৯ মে পর্যন্ত চলবে।

এই অধিবেশনে যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে, তার মধ্যে রয়েছে— উপনিবেশবাদী গণহত্যা, গণহত্যার আইনগত কাঠামো, বর্ণবৈষম্যমূলক শাসন (অ্যাপারথেইড), জোরপূর্বক জনসংখ্যা স্থানান্তর, বেসামরিক মানুষের সুরক্ষা, জাতিসংঘ কাঠামোর ব্যর্থতা ও প্রতিবাদের অধিকারকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করার প্রবণতা।

এতে ‘রাজনৈতিক বাস্তববাদ ও সমসাময়িক ভূ-রাজনীতি’ এবং ‘গণহত্যার রাজনৈতিক অর্থনীতি’ দুটি প্যানেল আলোচনা থাকছে। এছাড়াও ‘স্রেব্রেনিৎসা থেকে গাজা’ শিরোনামে বিশেষ একটি অধিবেশন থাকছে।

ট্রাইব্যুনালের শেষ দিনে অংশগ্রহণকারী সকলের মতামতের ভিত্তিতে ‘সারায়েভো ঘোষণা’ প্রকাশ করা হবে।

এই ট্রাইব্যুনাল আয়োজন করছে ইসলামিক কোঅপারেশন ইয়ুথ ফোরাম, যা ৫০টি জাতীয় যুবসংগঠন ও ১৬টি সংখ্যালঘু মুসলিম যুব সংগঠনসহ মোট ৬৬টি সদস্য সংগঠনকে প্রতিনিধিত্ব করে।

ইস্তাম্বুলে চূড়ান্ত অধিবেশন

‘গাজা ট্রাইব্যুনাল’ ২০২৪ সালের নভেম্বরে লন্ডনে একদল শিক্ষাবিদ, মানবাধিকার কর্মী, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও চিন্তাবিদদের সমন্বয়ে গঠিত হয়। এর লক্ষ্য, গাজা পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্পূর্ণ ব্যর্থতার জবাবে একটি বিকল্প ও নৈতিক জবাব দাঁড় করানো।

সারায়েভোর অধিবেশন শেষে ২০২৫ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে এই ট্রাইব্যুনালের চূড়ান্ত অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই ‘জুরি অব কনসায়েন্স’ সাক্ষ্যপ্রমাণ, বিশেষজ্ঞ মতামত ও ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিস্তিনিদের বক্তব্যের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনালের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত ও পর্যবেক্ষণ উপস্থাপন করবে।

সারায়েভোর সব অধিবেশনই অনলাইনে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

যদিও গাজা ট্রাইব্যুনাল কোনো আন্তর্জাতিক আদালত যেমন- আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) বা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) বিকল্প নয়। বরং এটি একটি স্বতন্ত্র ও নিরপেক্ষ সম্পূরক ফোরাম হিসেবে কাজ করছে, যার লক্ষ্য বিশ্বাসযোগ্য আইনগত বিশ্লেষণ ও বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা তৈরি করা।

ওএফ