Logo

আন্তর্জাতিক

মাউন্ট এটনায় ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত, প্রাণে বাঁচলেন শতাধিক পর্যটক

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১১:৪২

মাউন্ট এটনায় ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত, প্রাণে বাঁচলেন শতাধিক পর্যটক

সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউন্ট এটনায় সোমবার বিশাল অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে /ছবি : সংগৃহীত

ইতালির সিসিলি দ্বীপে অবস্থিত সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউন্ট এটনায় সোমবার বিশাল অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে। এতে ভীত-সন্ত্রস্ত পর্যটকরা প্রাণ বাঁচাতে হুড়োহুড়ি করে নিচে নামতে বাধ্য হন। আগ্নেয়গিরির গা বেয়ে কয়েক কিলোমিটার উঁচুতে ছড়িয়ে পড়ে ছাই, গ্যাস ও উত্তপ্ত শিলাখণ্ডের বিশাল মেঘ। 

ঘটনার সময় মাউন্ট এটনার ওপর ৪০ জন পর্যটক ছিলেন বলে সিএনএনকে জানান ‘গো এটনা’ ট্যুর কোম্পানির গাইড জুসেপ্পে প্যানফালো। তিনি নিজের ট্যুর গ্রুপকে দূরে ছাইয়ের ঘন মেঘের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখিয়ে একটি ভিডিও ধারণ করেন।

ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘আমরা অল্পের জন্য বেঁচে গেছি। দেখুন এই বিশাল মেঘটা। আমরা খুব কাছেই ছিলাম। ধন্যবাদ আমাদের দায়িত্বশীল গাইডের জন্য। হঠাৎ করেই সবকিছু ঘটল, বিশাল ধোঁয়া, বিকট শব্দ।’

সিসিলির সিভিল প্রোটেকশন এজেন্সি জানায়, মাউন্ট এটনায় প্রায় এক ডজন ট্যুর অপারেটর নিয়মিত কাজ করে। অগ্ন্যুৎপাতের সময় যেসব পর্যটক ও ট্রেকার ছিলেন, তাদের সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে জাতীয় ভূকম্পন ও আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণ সংস্থা।

তারা জানায়, অগ্ন্যুৎপাতটি স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে কমে আসে এবং তিনটি লাভা স্রোতই এখন ঠান্ডা হচ্ছে। আগ্নেয়গিরির চূড়ার কাছাকাছি কিছু ছাই এখনো বিচ্ছিন্নভাবে নির্গত হচ্ছে। তবে কম্পনের মাত্রা অনেক কমে এসেছে।

বিশ্বের অন্যতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউন্ট এটনা প্রতি বছর প্রায় ১৫ লাখ পর্যটককে আকর্ষণ করে। ২০১৪ সালের পর এত বড় অগ্ন্যুৎপাত আর হয়নি বলে জানিয়েছে পর্যবেক্ষণ সংস্থা।

অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয় রাতের প্রথম ভাগে, যার বিস্ফোরণের শব্দ সিসিলির পর্যটন শহর তাওরমিনা ও বৃহত্তর শহর কাটানিয়া থেকেও শোনা যায়, যেগুলো আগ্নেয়গিরি থেকে যথাক্রমে ৫০ ও ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

৩৩ বছর বয়সী হাইকিং গাইড আলেসিও জক্কো সিএনএনকে বলেন, ‘আজকের অগ্ন্যুৎপাত শুরুতে সাধারণ মনে হলেও, হঠাৎ এক বিশাল বিস্ফোরণে সবাই আঁতকে ওঠে। নাটকীয় মুহূর্ত ছিল, কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাউন্ট এটনা এক ভয়ঙ্কর অথচ বিস্ময়কর প্রাকৃতিক শক্তি।’

অবজারভেটরি জানায়, আগ্নেয়গিরির দক্ষিণ-পূর্ব ক্রেটারের উত্তর পাশের আংশিকভাবে ধসে পড়ার ফলে এই অগ্ন্যুৎপাত ঘটে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতেও এখান থেকেই বেশ কয়েকবার লাভা নিঃসরণ হয়েছিল।

তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগ্নেয়গিরির নিচে অবস্থিত কাটানিয়া শহরে ছাই পড়ার সম্ভাবনা নেই। তবে যদি বাতাস দিক পরিবর্তন করে, তাহলে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন মেয়র এনরিকো তারানতিনো।

ফ্লাইট রাডার সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত কাটানিয়া ও পালারমোর বিমানবন্দর চালু আছে। তবে কিছু ফ্লাইট পালারমোর দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে লোকজন যেন আগ্নেয়গিরির কাছে না যায় এবং উদ্ধারকারীদের কাজে বাধা না দেয়, সেজন্য বেশ কিছু পাহাড়ি রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে এটনা গরম লাভা উদগীরণ করতে শুরু করে, যা আগের অগ্ন্যুৎপাতগুলোর সঙ্গে তুলনীয়। তবে শুরুতে এটি ছিল একটি ‘পাইরোক্লাস্টিক অগ্ন্যুৎপাত’। ফলে উচ্চ তাপমাত্রার গ্যাস, লাভা, ছাই ও বিভিন্ন আকারের শিলা মিশে মারাত্মক স্রোত তৈরি করে নিচে নেমে আসে।

সিসিলির আঞ্চলিক প্রেসিডেন্ট রেনাতো স্কিফানি জানিয়েছেন, বর্তমানে স্থানীয় জনগণের জন্য কোনো বিপদের আশঙ্কা নেই। তবে তিনি পাহাড়ি ভ্রমণকারীদের ‘সর্বোচ্চ সতর্কতা’ অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছেন। আগ্নেয়গিরির চূড়ার কাছাকাছি যাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছেন।

ওএফ

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

ইউরোপ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর