Logo

আন্তর্জাতিক

গাজায় ঈদের দ্বিতীয় দিনে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭৫

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৫, ০৯:৫১

গাজায় ঈদের দ্বিতীয় দিনে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭৫

গাজা উপত্যকায় ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনেই ভয়াবহ বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। ৭ জুন, শুক্রবার রাতভর চলা ওই হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৭৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১০০ জন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন আরও বহু মানুষ। গাজার সিভিল ডিফেন্স বিভাগ শনিবার এই তথ্য জানিয়েছে। খবর- আল-জাজিরা। 

স্থানীয় বাসিন্দা হামেদ কেহিল বলেন, ‘অন্য ঈদে আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠে শিশুদের সাজিয়ে বন্ধু-আত্মীয়দের বাড়ি যেতাম। এবার আমাদের ঘুম ভেঙেছে চিৎকার, বিস্ফোরণ আর ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া স্বজনদের কান্নায়।’ তিনি বলেন, ‘এই ঈদে আমরা আনন্দ নয়, লাশ বহন করছি।’

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা সিটির সাবরা এলাকায় একটি আবাসিক ভবনে বোমা হামলা চালায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। এতে একই পরিবারের ১৬ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ৬ জনই শিশু। গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসেল বলেন, “ইসরায়েলি বাহিনী হামলার আগে কোনো সতর্কবার্তা দেয়নি।” তিনি আরও জানান, শনিবারের ওই হামলায় প্রায় ৮৫ জন ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন এবং উদ্ধারকাজ এখনও চলছে।

অন্যদিকে গাজা শহরের দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিসের আল-আমাল হাসপাতাল এখন ‘পৌঁছানোর অযোগ্য’ বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট। সংস্থাটি জানায়, ইসরায়েলি বাহিনী আশপাশের এলাকাকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্র’ ঘোষণা করে বাসিন্দাদের সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা হামাসের সামরিক শাখার এক শীর্ষ নেতা আসাদ আবু শারিয়াকে লক্ষ্য করেই ওই অভিযান চালিয়েছে। আবু শারিয়া হামাসের মুজাহিদিন ব্রিগেডের প্রধান ছিলেন এবং ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে চালানো হামলায় সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন।

তবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের দাবি, ইসরায়েলি বাহিনীর এ হামলায় যারা নিহত হয়েছেন তারা সবাই বেসামরিক নাগরিক এবং তাদের বড় অংশ নারী ও শিশু। গাজার সিভিল ডিফেন্স বিভাগ এই হামলাকে ‘পূর্ণাঙ্গ গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

উল্লেখ্য, ঈদের আগের দিন অর্থাৎ ৬ জুনেও গাজার বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে নিহত হয়েছিলেন অন্তত ৪২ জন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া চলমান অভিযানে এখন পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ৫৪ হাজার ৬৭৭ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ২৫ হাজারের বেশি। নিহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।

গাজায় ভয়াবহ সামরিক অভিযানের পাশাপাশি ইসরায়েল গত মার্চ থেকে খাদ্য, পানি ও ওষুধবাহী ত্রাণ গাড়ির প্রবেশও বন্ধ করে রেখেছে। ফলে প্রায় পুরো গাজায় এখন মানবিক বিপর্যয় চরমে পৌঁছেছে।

জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এ পর্যন্ত বহুবার গাজায় হামলা বন্ধে আহ্বান জানালেও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব দিয়েছে, যা নেতানিয়াহু অনুমোদন করলেও হামাস এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে সাড়া দেয়নি।

এমএইচএস

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

গাজা ফিলিস্তিন ইসরায়েল যুদ্ধ হামাস নিহত ঈদুল আজহা

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর