গাজায় ঈদের ৩য় দিনে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১০৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৫, ০৯:৩৩
-68465621debbd.jpg)
ঈদের দিনেও থামেনি গাজায় ইসরায়েলের নির্মম গণহত্যা। অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে দফায় দফায় চালানো বিমান হামলায় ঈদের তৃতীয় দিনেই নিহত হয়েছেন অন্তত ১০৮ জন নিরপরাধ ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও ৩৯৩ জন। শুধু ঈদুল আজহার তিনদিনে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে প্রাণ হারিয়েছেন ২২৫ জনের বেশি মানুষ।
সোমবার (৯ জুন) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি।
ফিলিস্তিনের গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪ হাজার ৮৮০ জনে। আহত হয়েছেন ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭ জনের বেশি। হতাহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।
রোববার সন্ধ্যায় দেওয়া বিবৃতিতে গাজা কর্তৃপক্ষ জানায়, এবার ঈদের দিনেও এক মুহূর্তের জন্য থামেনি বোমাবর্ষণ। বিমান ও ড্রোন হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযানে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বহু আবাসিক ভবন।
২০২৩ সালের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে হামাসের আকস্মিক আক্রমণের পর ফিলিস্তিনের গাজায় ভয়াবহ অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। টানা ১৫ মাস ধরে চলা এই হামলায় বেসামরিক প্রাণহানি ও অবকাঠামো ধ্বংসে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে।
চলমান চাপের মুখে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের অনুরোধে এক পক্ষীয় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল।
তবে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে মতানৈক্যের সুযোগ নিয়ে ফের হামলা শুরু করে ইসরায়েল। চলমান দ্বিতীয় দফার অভিযানে গত ১৮ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৪ হাজার ৬০৩ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১৪ হাজার ৬৮৬ জন ফিলিস্তিনি।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো একে সরাসরি যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যা বলে আখ্যা দিলেও ইসরায়েলি প্রশাসন তা অস্বীকার করে চলেছে।
অন্যদিকে, গাজার পরিস্থিতিকে 'বাসযোগ্য নয়' বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বারবার মানবিক বিরতির আহ্বান জানালেও খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসহ ন্যূনতম সহায়তা থেকেও বঞ্চিত রাখা হচ্ছে কয়েক লাখ ফিলিস্তিনিকে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ঈদের দিনেও হামলা অব্যাহত রাখা ইসরায়েলি মনোভাব শুধু মধ্যপ্রাচ্যে নয়, সারা বিশ্বেই মুসলিম জনগণের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা বাড়িয়ে তুলেছে। আন্তর্জাতিক আদালতে চলমান গঠিত মামলায় এসব নতুন হামলা ইসরায়েলের অবস্থান আরও দুর্বল করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এমএইচএস