বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ
চরম তাপপ্রবাহে গ্রিনল্যান্ডের বরফ অস্বাভাবিকভাবে গলেছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ১৪:৪৬
-684942610502d.jpg)
চরম তাপপ্রবাহের কারণে মে মাসে গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলার হার অনেক বেশি ছিল বলে জানিয়েছেন জলবায়ুবিদরা। এ গলন হার ছিল বিগত বছরের গড়ের চেয়ে অনেক দ্রুত এবং বৈশ্বিক সমুদ্রপৃষ্ঠ বৃদ্ধিতে বড় অবদান রাখতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এএফপি জানায়, ডেনমার্কের মেটিওরোলজিক্যাল ইনস্টিটিউট (ডিএমআই) জানিয়েছে, গ্রিনল্যান্ডের বরফস্তর মে মাসের প্রথম দিকেই ব্যাপক হারে গলতে শুরু করে, যা ওই সময় সাধারণত খুব একটা দেখা যায় না।
প্রতিষ্ঠানটির গ্লেসিওলজিস্ট লুইসো রোমেরো বলেন, ১ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত সময়টিতে প্রায় ৩৬ বিলিয়ন টন (৩৬ হাজার কোটি টন) বরফ গলেছে। এটি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি।
তিনি বলেন, ১৯৮১ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ওই সময়কালে গড় বরফ গলনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৮ বিলিয়ন টন। এবারের গলন হার তা থেকে চারগুণেরও বেশি।
ভয়াবহ উষ্ণতা
ডিএমআই জানায়, মে মাসে গ্রিনল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছিল। কিছু অঞ্চলে একটানা এক সপ্তাহ পর্যন্ত তাপমাত্রা ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
এই অস্বাভাবিক উষ্ণতা বরফের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে এবং বরফ গলন তরান্বিত করে।
জলবায়ুবিদদের মতে, গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলে গেলে তা বৈশ্বিক সমুদ্রপৃষ্ঠ বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় উৎস হয়ে উঠতে পারে।
পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম বরফস্তর হিসেবে এখানে প্রায় ২৩ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বরফ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল স্নো অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, গ্রিনল্যান্ডের সমস্ত বরফ যদি গলে যায়, তবে সমুদ্রপৃষ্ঠ প্রায় সাত মিটার (২৩ ফুট) পর্যন্ত বাড়তে পারে।
আশঙ্কার ইঙ্গিত
রোমেরো জানান, এই সময়কার উষ্ণতা ও বরফ গলনের মাত্রা এক ভয়াবহ বাস্তবতার দিকে ইঙ্গিত করে। বরফ গলার মৌসুম সাধারণত জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী হয়, কিন্তু এবার মে মাসেই তা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি শুরু হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন আগাম ও তীব্র গলন ঘটছে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।
রোমেরো বলেন, এটা একটি পরিষ্কার সতর্কবার্তা যে, বরফ গলনের হার ও সময়সীমা পরিবর্তিত হচ্ছে এবং সেটা সরাসরি মানবসৃষ্ট উষ্ণায়নের সঙ্গেই সম্পর্কিত।
বিএইচ/