গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১২০, ত্রাণকেন্দ্রে রক্তগঙ্গা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ০৭:৫০
-684a32807784c.jpg)
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ১২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে সহায়তা সংগ্রহে যাওয়া অন্তত ৫৭ জন বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এই হামলায় সহায়তা পেতে আসা আরও ৩৬৩ জন আহত হয়েছেন। বিতর্কিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (GHF) পরিচালিত বিতরণ কেন্দ্রগুলোতেই এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। মার্কিন ও ইসরায়েলি সমর্থনে পরিচালিত এই সহায়তা উদ্যোগ ঘনবসতিপূর্ণ এবং ইসরায়েলি সামরিক নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাতেই পরিচালিত হচ্ছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় GHF-এর কার্যক্রমকে ‘নাটকীয় সাফল্য’ হিসেবে বর্ণনা করলেও এই সহায়তা কেন্দ্রগুলোকেই অনেকেই ‘মানবিক কসাইখানা’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। ২৭ মে থেকে কার্যক্রম শুরুর পর থেকে সহায়তা নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২২০ জন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে, নেটসারিম করিডোরে তারা ‘সতর্কতামূলক গুলি’ চালিয়েছে। এ এলাকায়ই বেশি সংখ্যক মানুষ নিহত হয়েছেন।
এদিকে ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘ বলছে, এই ধরনের সহায়তা বিতরণ আন্তর্জাতিক মানবিক নীতিমালার লঙ্ঘন। জাতিসংঘ ও UNRWA সহায়তা পৌঁছে দিতে সক্ষম হলেও ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের কার্যক্রম সেখানে বন্ধ রয়েছে।
UNRWA এক বিবৃতিতে বলেছে, এই সহায়তা মডেলটি চলমান মানবিক বিপর্যয়ের দৃষ্টি সরিয়ে নেওয়ার কৌশল মাত্র এবং সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর।
গাজা গভর্নমেন্ট মিডিয়া অফিসের মতে, ইসরায়েল এক ইচ্ছাকৃত ‘অনাহার ও বিশৃঙ্খলা’র নীতি অনুসরণ করছে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের বিশ্লেষক ক্রিস নিউটন বলেন, GHF প্রতিদিন যে ১৭৫০ ক্যালরি খাবার সরবরাহের কথা বলছে, তা মানবিক সংকটের জন্য নির্ধারিত ন্যূনতম মানের চেয়েও কম।
তিনি বলেন, এই খাদ্যমান ১৯৪০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে করা এক অনাহার পরীক্ষার মানের কাছাকাছি, যা ২০০৮ সালে ইসরায়েল নিজেই গাজার জন্য নির্ধারিত ন্যূনতম পুষ্টির মানের চেয়েও কম।
- এটিআর